প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত প্যারিস চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাবর্তন জলবায়ু পরিবর্তন কূটনীতিতে নতুন গতি সঞ্চার করবে। গতকাল গণভবনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের জলবায়ুসংক্রান্ত বিশেষ দূত জন কেরির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। পরে বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
সাক্ষাত্কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২২ ও ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ভার্চুয়াল লিডার্স সম্মেলনে যোগদানে আমন্ত্রণ জানান জন কেরি। সে আমন্ত্রণে সাড়া দেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় উভয়ে একে অন্যের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। অন্তত ৪০টি দেশ আসন্ন সম্মেলনে অংশ নেবে।
বৈঠকে জন কেরি বলেন, বাংলাদেশ চাইলে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে কভিড-১৯-এর টিকা দিতে পারে। কেননা, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সময়ে টিকা উদ্বৃত্ত হবে।
দূষণের ঝুঁকি হ্রাস করতে জলবিদ্যুতের পাশাপাশি সৌরবিদ্যুৎ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ বিকল্প শক্তির উৎস ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করে জন কেরি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থাগুলো অন্যদের সঙ্গে অংশীদার হয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সবুজ জলবায়ু তহবিলের এক মিলিয়ন ডলার ছাড়াও দুই মিলিয়ন ডলার দেবে। জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকারও প্রশংসা করেন তিনি।
এ সময় নিজের দেশের উন্নয়নের জন্য জ্বালানির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যারা নিঃসরণকারী (কার্বন) নয় এবং নিঃসরণে যাদের অবদান নগণ্য, তারাও ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ভারত, ভুটান ও নেপালের সঙ্গে আঞ্চলিক ভিত্তিতে দ্বিপক্ষীয় বা ত্রিপক্ষীয় উপায়ে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের বিষয় উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশে ৫ দশমিক ৮ মিলিয়ন সৌর সংযোগ রয়েছে, সৌরশক্তি সেচের জন্য প্রয়োজনীয়।
সরকার জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকবেলার জন্য জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে বলেও জানান শেখ হাসিনা। পাশাপাশি তিনি বলেন, সরকারি উদ্যোগে এরই মধ্যে সারা দেশে প্রায় ১১ দশমিক ৫ মিলিয়ন গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে এবং তার দলীয় নেতাকর্মীরা ১০ মিলিয়ন অন্য গাছও লাগিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী জন কেরিকে বঙ্গবন্ধু রচিত কারাগারের রোজনামচা ও অসমাপ্ত আত্মজীবনী (ইংরেজি সংস্করণ) এবং সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন, বাংলাদেশ: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সিরিজের বই উপহার দেন।
বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ও বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর. মিলার।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রীকে ভার্চুয়াল লিডার্স সম্মেলনে যোগদানের আমন্ত্রণ জানাতে গতকাল সকালে এক সংক্ষিপ্ত সফরে বাংলাদেশে আসেন জন কেরি।
