অভিমত

নতুন এমপিও নীতিমালা প্রসঙ্গে

মাছুম বিল্লাহ

আমাদের দেশে মাধ্যমিক শিক্ষার প্রায় ৯৭ শতাংশ বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয়। বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রিত হয় এমপিও নীতিমালা জনবল কাঠামোর দ্বারা, যা কয়েক বছর পরপর সংশোধন করা হয়। সর্বশেষ ২৯ মার্চ (২০২১) শিক্ষা মন্ত্রণালয় ১৩ ধরনের স্কুল কলেজ এমপিওভুক্তির নীতিমালা জারি করেছে, যেখানে বেশকিছু নতুন বিষয় সংযোজন করা  হয়েছে। এতে বেশ কয়েকটি প্রশংসনীয় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে আবার কিছু ক্ষেত্রে দ্বিতীয়বার চিন্তা করার অবকাশ রয়েছে। দেশের প্রায় ২৯ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিও নামের রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক সুবিধার আওতাভুক্ত। এতে পাঁচ লাখের বেশি শিক্ষক-কর্মচারী সরকারের কাছ থেকে প্রতি মাসে মূল স্কেলের সমান বেতন পান।

এর আগে ২০১৯ সালের অক্টোবরে সরকার আড়াই হাজার প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করে। তখন ঘোষণা ছিল, নীতিমালা হালনাগাদ করে ফের এমপিওভুক্তির আবেদন নেয়া হবে। বছর (২০২১) এমপিওভুক্তির নাীতিমালা হালনাগাদ করা হলো। এতে যেসব সিদ্ধান্ত ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য, সেগুলো হচ্ছে গ্রন্থাগার শিক্ষক-প্রভাষক পদ সৃষ্টি, আট বছরের অভিজ্ঞতায় প্রভাষকদের মধ্যে থেকে ৫০ শতাংশকে সহকারী অধ্যাপক বা জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পদে পদোন্নতি এবং ১৬ বছরের অভিজ্ঞতায় সব প্রভাষককে পদোন্নতি দেয়ার বিধান, পদোন্নতির ক্ষেত্রে ১০০ নম্বরের মূল্যায়ন সূচক নির্ধারণ। জ্যেষ্ঠতা, একাডেমিক ফল, সৃজনশীল কর্ম, ভার্চুয়াল ক্লাসের দক্ষতা, উচ্চতর ডিগ্রি (এমফিল পিএইচডি), গবেষণা প্রবন্ধ ইত্যাদি বিবেচনায় মূল্যায়ন সূচকের ১০০ নম্বর নির্ধারণ করা শিক্ষার মানোন্নয়নে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত। আরো বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য প্রভাষক এমপিওভুক্তির ১০ বছর পূর্তিতে নবম গ্রেড থেকে অষ্টম গ্রেডে বেতন পাবেন। আর চাকরিজীবনের ১৬ বছর পূর্তিতে তারা জ্যেষ্ঠ প্রভাষক হিসেবে পদোন্নতি পাবেন। পদোন্নতি ছাড়া তারা পুরো চাকরিজীবনে দুটির বেশি উচ্চতর গ্রেড বা টাইম স্কেল পাবেন না।

আগে ১০ বছর সহকারী শিক্ষক আর পাঁচ বছর সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলেও কেউ প্রধান শিক্ষক হতে পারতেন না শুধু ১২ বছরের সহকারী শিক্ষকের অভিজ্ঞতা নেইএমন বাধার কারণে। নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, ন্যূনতম তিন বছরের সহকারী প্রধানসহ ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলেই প্রধান শিক্ষক পদে আবেদন করা যাবে। ডিগ্রি অনার্স কলেজে অধ্যক্ষ পদে প্রায় একই ধরনের শর্ত রয়েছে। সহকারী অধ্যাপক হিসেবে তিন বছর কর্মরত থাকতে হবে। সব মিলিয়ে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা লাগবে। তবে শিক্ষাজীবনে একটি তৃতীয় শ্রেণীকে গ্রহণযোগ্য করা হয়েছে। এমপিওভুক্ত সহজীকরণের জন্য চারটির পরিবর্তে শর্ত তিনটি আরোপ করা হয়েছে। যেমন শিক্ষার্থী পরীক্ষার্থী সংখ্যা এবং পাসের হার। আগে প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতির মেয়াদের ওপর ২৫ নম্বর ছিল। সেটি আর নেই। কিন্তু প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ছাত্র সংখ্যায় কঠোরতা আরোপ করা হয়েছে। আর উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের প্রভাষকরা এমপিওভুক্তির আট বছর পূর্তিতে মোট প্রভাষকের মোট পদের ৫০ শতাংশ মূল্যায়নের ভিত্তিতে জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পদে পদোন্নতি পাবেন। ১০০ নম্বরের মূল্যায়নের ভিত্তিতে পদোন্নতি পাবেন তারা। অন্যদিকে ডিগ্রি কলেজের প্রভাষকরা চাকরির আট বছর পূর্তিতে মোট প্রভাষক পদের ৫০ শতাংশ নির্ধারিত সূচকে মোট ১০০ নম্বরের মূল্যায়নের ভিত্তিতে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাবেন। আগে : অনুপাত প্রথা ছিল। এতে পাঁচজন প্রভাষক থাকলেও তাদের দুজন পদোন্নতি পেয়ে সহকারী অধ্যাপক হতে পারতেন। এখন ৫০ শতাংশ প্রভাষক পদোন্নতি পাবেন। চাকরির আট বছর পূর্তিতে কর্মরত ৫০ শতাংশ প্রভাষককে পদোন্নতি দেয়া হবে। পদোন্নতি পেয়ে তারা জ্যেষ্ঠ প্রভাষক হবেন। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতোই বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরাও দুই ঈদে শতভাগ বোনাস বা উৎসব ভাতা পাবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে নতুন নীতিমালায়, তবে কবে থেকে এটি কার্যকর হবে তার সঠিক তারিখটি অস্পষ্ট রয়ে গেছে। নীতিমালার ১১() ধারায় বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মূল বেতন/বোনাসের নির্ধারিত অংশ/উৎসব ভাতার নির্ধারিত অংশ সরকারের ২০১৫ সালে জাতীয় বেতন স্কেল/সরকার নির্ধারিত সর্বশেষ জাতীয় বেতন স্কেলের সঙ্গে অথবা সরকারের নির্দেশনার সঙ্গে মিল রেখে করতে হবে।

নতুন নীতিমালার যেসব ক্ষেত্রে চিন্তা করার সুযোগ রয়েছে, ডিগ্রি স্তরের তৃতীয় শিক্ষকরা এবং অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকরা এমপিও পান না। নীতিমালায় তাদের যুক্ত করা হয়নি। নতুন নীতিমালায় স্কুল পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণ সহজ করা হলেও কলেজ পর্যায়ে কঠিন করা হয়েছে। শিক্ষকরা অধ্যাপক পর্যন্ত পদোন্নতি চাইলেও সহকারীতেই সীমিত রাখা হয়েছে। এছাড়া উচ্চ মাধ্যমিকে জ্যেষ্ঠ প্রভাষকের পর আর কোনো পদোন্নতি নেই। বিষয়গুলোয় আরো মনোযোগ দেয়ার প্রয়োজন রয়েছে। ২০১০ সালের এমপিও নীতিমালায় সহযোগী অধ্যাপক পদ সৃষ্টির বিধান থাকলেও নীতিমালায় তা নেই। অথচ শিক্ষানীতি-২০১০- বেসরকারি কলেজে সহযোগী অধ্যাপক এবং অধ্যাপক পদ সৃষ্টি করে তা বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। স্নাতক (পাস) কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক। উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল বা উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের অধ্যক্ষকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগের অনুমোদন দেয় না। ফলে স্নাতক কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগে জটিলতা সৃষ্টি হবে।

নিয়োগ জটিলতার সুযোগে নীতিমালা ২০২১-এর ১১.১৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সরকারি কলেজের শিক্ষক বেসরকারি কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে প্রেষণে নিয়োগ নেয়ার সুযোগ  নেবেন। ফলে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি কলেজে শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিতে পারে এবং শিক্ষার মানে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। মাদ্রাসা এমপিও নীতিমালায় কামিল (স্নাতকোত্তর) এবং ফাজিল (স্নাতক) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নিয়োগে যোগ্যতার মাপকাঠির মধ্যে একটি হলো সহকারী অধ্যাপক হিসেবে তিন বছরের অভিজ্ঞতাসহ শিক্ষকতার ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা। একই সঙ্গে উল্লেখ রয়েছে এমফিল ডিগ্রি থাকলে দুই বছরের অভিজ্ঞতা পিএইচডি ডিগ্রি থাকলে চার বছরের অভিজ্ঞতা শিথিলযোগ্য। স্নাতক কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতার মাপকাঠি রাখা হয়নি। অধ্যক্ষ উপাধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রে মাদ্রাসার অনুরূপ যোগ্যতা রাখাই যুক্তিসংগত। আবার আট বছরে পদোন্নতিবঞ্চিত কারিগরি শিক্ষার প্রভাষকরা ১৬ বছরে পাবেন সপ্তম গ্রেড, পক্ষান্তরে পদোন্নতিবঞ্চিত কলেজের প্রভাষকরা পাবেন ১৬ বছরে ষষ্ঠ গ্রেড। জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ অনুযায়ী বেসরকারি সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অভিন্ন নীতিমালা থাকা আবশ্যক।

নতুন নীতিমালায় প্রভাষকদের পদোন্নতিতে : অনুপাতের বদলে অর্ধেক প্রভাষকের পদোন্নতির সুযোগ রাখা হয়েছে। শিক্ষক সংগঠনগুলোর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল অনুপাত প্রথা সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করা, যা করা হয়নি। উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ স্কুল অ্যান্ড কলেজে চালু থাকা সহকারী অধ্যাপকের পদ বিলুপ্ত করে সিনিয়র প্রভাষকের পদ সৃষ্টি করা মানে সহকারী অধ্যাপকের পদ অবনমন করা, যা মর্যাদা হানিকর অপমানজনক বিষয়। তাদের বেতন সুযোগ-সুবিধা একই থাকবে, তাহলে কেন অবনমন? শিক্ষক নেতারা আরো বলেন, দীর্ঘদিনের দাবি সত্ত্বেও অনার্স মাস্টার্স পর্যায়ে পাঠদানকারী শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। স্নাতক পর্যায়ে তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সব প্রস্তুতি নেয়ার পরও তাদের এমপিওভুক্তির কোনো প্রস্তাবনা নেই। শিক্ষক নেতারা দাবি করেন যে ২০২১ সালের নীতিমালার শর্তগুলো বাতিল করে ২০১৩ সালের জনবল কাঠামো অনুসরণ করে শিক্ষকদের নির্দিষ্ট অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে প্রভাষক সহকারী অধ্যাপকদের ওই পদ দুটিতে আবেদনের সুযোগ দেয়া উচিত। তাতে দক্ষ সুযোগ্য শিক্ষকরা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে অধ্যক্ষ উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগের সুযোগ পাবেন, যা শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করা অনেকটা সহজ হবে। শিক্ষক নেতারা বলেন, ২০২১ সালের জনবল কাঠামোর ফলে স্কুল উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ, ডিগ্রি কলেজ এবং অনার্স মাস্টার্স পর্যায়ে পাঠদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ব্যাপক বৈষম্য সৃষ্টি হবে। তারা জনবল কাঠামো সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন।

এমপিও নীতিমালায় ১০ বছরের সহকারী শিক্ষকের যোগ্যতায় সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়ার সুযোগ দেয়া হলেও প্রধান শিক্ষক পদের জন্য তিন বছরের অভিজ্ঞতাসহ ১২ বছরের সহকারী শিক্ষক পদে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছিল। তাই সহকারী প্রধান শিক্ষকরা তিন বছর কর্মরত থাকার পরও প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পেয়ে এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না। কারণ ১০ বছর সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত থাকার পর নীতিমালা অনুসারেই সহকারী প্রধান শিক্ষক হয়েছিলেন তারা। তাই প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পেতে সহকারী শিক্ষক পদে দুই বছরের অভিজ্ঞতার ঘাটতি আছে। নিয়োগ জটিলতার সুযোগে নতুন নীতিমালা ২০২১-এর ১১.১৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সরকারি কলেজের শিক্ষক বেসরকারি কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে প্রেষণে নিয়োগ নেয়ার সুযোগ নেবেন। ফলে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি কলেজে শিক্ষক-কর্মাচারীর মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেবে এবং শিক্ষার মনোন্নয়ন ব্যাহত হবে বলে শিক্ষক নেতারা মনে করেন। 

নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তার অনুমোদিত মূল ক্যাম্পাস ছাড়া অন্য কোথাও শাখা খুলতে পারবে না। তবে বাস্তবতা বিবেচনায় চাহিদা, উপযুক্ততা এবং প্রতিষ্ঠানের খতিয়ানভুক্ত নামজারীকৃত নিজস্ব জমি থাকলে ওই জমিতে শাখা খোলার বিষয়টি মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষা বিভাগ বিবেচনা করতে পারবে। সেক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হবে। বর্তমানে যেসব প্রতিষ্ঠানে শাখা রয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে ঘোষিত নীতিমালায় কিছু বলা হয়নি। তবে নীতিমালার ২২ ধারায় বিশেষ ক্ষেত্রে শর্ত শিথিলের বিধানও রাখা হয়েছে। ধারায় বলা হয়েছে, শিক্ষায় অনগ্রসর, ভৌগোলিকভাবে অসুবিধাজনক, পাহাড়ি এলাকা, হাওর-বাঁওড়, চরাঞ্চল, ছিটমহল, বস্তি এলাকা, নারীশিক্ষা, সামাজিকভাবে অনগ্রসর গোষ্ঠী, যেমন প্রতিবন্ধী, হরিজন, সেবক, চা বাগান শ্রমিক, তৃতীয় লিঙ্গ ইত্যাদি এবং বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান, চারুকলা, বিকেএসপি, সংস্থা পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে বিশেষ বিবেচনায় শর্ত শিথিলযোগ্য।

শিক্ষার উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন সময়ে নেয়া পদক্ষেপগুলো ধীরে ধীরে সামনে এগোচ্ছে। তবে নীতিমালা তৈরির সময়ে শিক্ষক, পরিবেশ-পরিস্থিতি, শিক্ষা ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমস্যা এবং সেগুলো সমাধানের বাস্তব প্রকৃত শিক্ষাবান্ধব পদক্ষেপ এবং সর্বোপরি  বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিতে হবে।

 

মাছুম বিল্লাহ: শিক্ষা গবেষক

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন