অপরিশোধিত জ্বালানি তেল

সংকট এড়াতে উৎপাদন বাড়াবে যুক্তরাষ্ট্র

বণিক বার্তা ডেস্ক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উৎপাদন কিছুটা স্থিতিশীল থাকার পর ফের উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। এর আগে করোনা মহামারী এবং সৌদি আরব রাশিয়ার মধ্যে তেলযুদ্ধের কারণে বড় ধরনের ধাক্কা খেতে হয়েছে দেশটিকে। বর্তমানে ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশের লকডাউন অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মন্থর গতি তেলের বাজারে সংকট তৈরি করতে পারে বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। তাই গত বছরের অভিজ্ঞতা থেকে ধরনের সংকট মোকাবেলায় চলতি দ্বিতীয় প্রান্তিকে (মার্চ-মে) তেল উৎপাদন বাড়াচ্ছে দেশটি। এর মাধ্যমে জ্বালানি তেলের বাজারে কিছুটা নির্ভার থাকতে চাচ্ছে মার্কিন সরকার। খবর রয়টার্স।

যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (ইআইএ) সাম্প্রতিক তথ্য-উপাত্ত থেকে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে মার্কিন জ্বালানি তেল উৎপাদনের পরিমাণ ছিল প্রতিদিন কোটি ১১ লাখ ব্যারেল। গত বছরের ডিসেম্বরেও একই হারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উৎপাদন করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রতিদিনের জ্বালানি তেল উৎপাদনে ১৭ লাখ ব্যারেল পিছিয়ে দেশটি।

ইআইএর ৩১ মার্চের মাসিক পেট্রোলিয়াম সরবরাহ প্রতিবেদন বলছে, দৈনিক গড় উৎপাদন হারে ২০১৯ সালের নভেম্বরে সর্বোচ্চ পরিমাণ অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উৎপাদন করে যুক্তরাষ্ট্র। সে সময় দেশটির দৈনিক জ্বালানি তেল উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১৮ লাখ ব্যারেল। তবে এক মাস থেকে অন্য মাসের তুলনায় দেশটিতে জ্বালানি পণ্যটির উৎপাদন খুব একটা কমেনি। কারণ সংকট কাটিয়ে শিল্পটি এরই মধ্যে জ্বালানি তেলের বাজারের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে। পাশাপাশি তেলের দাম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। এর মাধ্যমে চলতি বছরের মাঝামাঝিতে জ্বালানি তেল উৎপাদন বাড়ানোর মতো অবস্থায় উন্নীত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এদিকে ডিসেম্বর-জানুয়ারির পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফের জ্বালানি পণ্যটির উৎপাদন অনেকটা কমে গেছে যুক্তরাষ্ট্রে। তীব্র শৈত্যপ্রবাহ টেক্সাসের তেল উৎপাদন ব্যাহত করেছে, যা মার্চের প্রথমার্ধ পর্যন্ত চলে। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে সৃষ্ট স্বল্প সময়ের সংকট বাজারে জ্বালানি তেলের দাম জ্বালানি পণ্যটির সার্বিক অবস্থা দ্রুত পরিবর্তনের দিকে তাড়িত করে। সময় জ্বালানি পণ্যটির দামও আগের তুলনায় বেড়ে যায়। এসব কারণে দ্রুত তেল উৎপাদন বাড়ানোর প্রয়োজন অনুভব করে দেশটি।

আগের সংকটের উপলব্ধি থেকে এরই মধ্যে জ্বালানি তেল উৎপাদন বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে মার্কিন সরকার। সেই হিসেবে চলতি এপ্রিলে এবং মে মাসেও জ্বালানি তেল উৎপাদন নিশ্চিতভাবেই বাড়বে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বছরের প্রথম ভাগে কিছুটা শ্লথগতিতে জ্বালানি পণ্যটির উৎপাদন বাড়লেও দ্বিতীয়ার্ধে উৎপাদনগতি আরো ত্বরান্বিত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, সামনের দিনগুলোতে জ্বালানি তেল উৎপাদনে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ফেব্রুয়ারি মার্চের মতো উৎপাদনে আবহাওয়াজনিত সমস্যা থাকছে না। ফলে আগের মতো জ্বালানি পণ্যটির দাম হঠাৎ করেই বেড়ে যাওয়ার সে শঙ্কা আর থাকছে না। একই সঙ্গে উচ্চমাত্রায় জ্বালানি তেল উৎপাদনে বাজারে তেল সংকটও থাকবে না। দ্বিতীয় প্রান্তিক থেকে জ্বালানি পণ্যটির উৎপাদন অনেকটাই বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইআইএর প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে তাদের ২০২১ ২০২২ সালের দৈনিক জ্বালানি তেল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা থেকে কোটি ৩০ লাখ ব্যারেল পিছিয়ে। তবে আগের তুলনায় বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি পণ্যটির উৎপাদনগতি কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। একই সঙ্গে চাহিদার অতিরিক্ত অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উৎপাদন ওপেক প্লাসের সঙ্গে দেশটির প্রতিযোগিতাকে বাড়াবে বলে মনে করছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন