উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গতবার ফাইনালে প্যারিস সেন্ট জার্মেইকে (পিএসজি) ১-০ গোলে হারিয়ে শিরোপার উত্সব করেছিল বায়ার্ন মিউনিখ। এবার দল দুটি মুখোমুখি কোয়ার্টার ফাইনালে, যার প্রথম লেগে বায়ার্নকে তাদেরই মাঠে ৩-২ গোলে হারাল ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা। পিএসজির হয়ে জোড়া গোল করেন কিলিয়ান এমবাপ্পে, আর দলের দুই গোলে অ্যাসিস্ট করেছেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমার।
অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনায় আধিপত্য করেও জিততে পারেনি বায়ার্ন। ম্যাচে ৬৪ শতাংশ বল দখলে রাখে বাভারিয়ানরা, পিএসজির গোলমুখে তারা শটই নিয়েছে ৩১টি, যার মধ্যে টার্গেটে ছিল ১২টি। বায়ার্নের ৩১টির তুলনায় পিএসজি গোলমুখে শট নিয়েছে ৬টি। গড়ে প্রতি তিন মিনিটে প্রতিপক্ষের গোলমুখে একটি করে শট নিয়েও পরাজিত দলের নাম বায়ার্ন! মূলত নেইমার ও এমবাপ্পের যুগলবন্দি আর গোলকিপার কেইলর নাভাসের অনবদ্য পারফরম্যান্সই জিতিয়েছে পিএসজিকে। রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক গোলকিপার নতুন ক্লাবের হয়েও উজ্জ্বল। গতকাল জার্মানিতে তিনি মোট ১০টি দুর্দান্ত সেভ করেন।
ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই নেইমারের পাস থেকে গোল করে বসেন এমবাপ্পে। গোলমুখের দিকে আগুয়ান নেইমারকে ঘিরে ধরতে এসেছিলেন বায়ার্নের ৪-৫ ডিফেন্ডার, তখন তিনি আলতো করে বল বাড়িয়ে দেন ডান দিকে অরক্ষিত থাকা এমবাপ্পেকে। ২২ বছর বয়সী ফরাসী ফরোয়ার্ড দূরের পোস্টে নাম মেরে কাছের পোস্ট লক্ষ্য করে বল মারেন। এতে বায়ার্ন গোলকিপার ম্যানুয়েল নুয়্যার বিভ্রান্ত হয়ে পড়লে তার দুই পায়ের মাঝ বরাবর বল জালে জড়িয়ে যায়।
২৮ মিনিটে স্বদেশী মার্কিনোসকে দিয়ে দলের দ্বিতীয় গোল করান নেইমার। এতে আধাঘণ্টার আগেই ২-০ গোলে এগিয়ে যায় মাউরিসিও পচেত্তিনোর দল। ৩৭ মিনিটে এক গোল পরিশোধ করেন পিএসজির সাবেক স্ট্রাইকার এরিক চুপো-মোটিং। ৬০ মিনিটে সমতা আনেন অভিজ্ঞ টমাস মুলার। এরপর সাত মিনিট পর দুর্দান্ত এক সলো গোলে পিএসজিকে আরেকবার এগিয়ে নেন এমবাপ্পে।
চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আট গোল হয়ে গেল এমবাপ্পের। এর মধ্যে শেষ ষোলোর প্রথম লেগে বার্সেলোনার মাঠে করেন হ্যাটট্রিক। অনবদ্য ফর্ম ধরে রেখে এবার বায়ার্নের মাঠে করলেন দুই গোল।
বড় ম্যাচে পারফর্ম করা নিয়ে তিনি বলেন, বার্সেলোনায় যেমনটি বলেছিলাম, এমন ম্যাচ আমি ভালোবাসি। হয়তো সব সময় এসব ম্যাচ আমার পক্ষে যাবে না কিংবা ভবিষ্যতেও না, কিন্তু আমি নিজেকে মোটেও লুকিয়ে রাখব না। এমন ধরণের ম্যাচ আমি পছন্দ করি, আর চাই নির্ধারক হতে।
বায়ার্ন কোচ হ্যানসি ফ্লিক ম্যাচ শেষে বলেন, আমরা যতগুলো সুযোগ পেয়েছি তাতে তিন গোল হজম করলেও ভালো ব্যবধানে জেতার সুযোগ ছিল।
মুলার বিষয়টি আরেকটু পরিষ্কার করে বলেছেন, আমরা যতগুলো সুযোগ তৈরি করেছি তাতে ম্যাচটি ৬-৩ কিংবা ৫-৩ এ জিতলেও কেউ অবাক হতো না।
আগামী মঙ্গলবার প্যারিসে দ্বিতীয় লেগে মুখোমুখি হবে পিএসজি ও বায়ার্ন।
বুধবার রাতে ইংলিশ ক্লাব চেলসি ২-০ গোলে জিতেছে পর্তুগিজ ক্লাব এফসি পোর্তোর মাঠে। ৩২ মিনিটে ম্যাসন মাউন্ট ও ৮৫ মিনিটে বেন চিলওয়েল ব্লুজদের হয়ে গোল করেন। এ জয়ে সেমিফাইনালে এক পা দিয়েই রাখল চেলসি। মঙ্গলবার স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে দ্বিতীয় লেগের খেলা।
এছাড়া মঙ্গলবার রিয়াল মাদ্রিদ ঘরের মাঠে ৩-১ গোলে লিভারপুলকে ও ম্যানচেস্টার সিটি জার্মানিতে ২-১ গোলে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে হারায়।
সূত্র: বিবিসি ও মার্কা