বাংলাদেশ-ভারত

বাণিজ্য বাধা দূরীকরণে সচিব পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদ্যমান বাণিজ্য বাধা দূরীকরণসহ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণ অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ভারতের বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য সচিব . মো. জাফর উদ্দীন। আর ভারতের বাণিজ্য শিল্প সচিব মি. অনুপ ধাওয়ানের নেতৃত্বে অংশ নেয় ভারতীয় প্রতিনিধি দল। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, বস্ত্র পাট মন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বিএসটিআই, সড়ক জনপথ (সওজ) বিভাগ, রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরোসহ (ইপিবি) সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ দপ্তরের প্রতিনিধি অংশ নেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সূচনা বক্তব্যে উভয় দেশের দলনেতা বাংলাদেশ ভারতের মধ্যকার চলমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের বিষয়ে আলোকপাত করেন। বাংলাদেশের বাণিজ্য সচিব . মো. জাফর উদ্দীন তার বক্তব্যে মুজিব বর্ষ, ঐতিহাসিক মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের প্রেক্ষাপটে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর বন্ধুত্বপূর্ণ অঙ্গীকার তুলে ধরেন। পরে উভয় দেশের মধ্যকার বাণিজ্য স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকে গত বছরের ১৫-১৬ জানুয়ারি নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত উভয় দেশের বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের সভার সিদ্ধান্তের অগ্রগতি পর্যালোচনা ছাড়াও বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য বিষয়ে গঠিত যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের ১৩তম সভার অগ্রগতি; দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান ট্যারিফ নন-ট্যারিফ বাণিজ্য বাধা দূরীকরণ; কিছু বাংলাদেশী পণ্যের ওপর ভারত সরকার আরোপিত অ্যান্টিডাম্পিং; দুই দেশের মধ্যে কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (সিইপিএ) সইয়ের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার বিষয়ে আলোচনা হয়।

আলোচনায় আরো ছিল বর্ডার হাটের সংখ্যা সম্প্রসারণ সীমান্ত বাণিজ্য বৃদ্ধি; বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার বন্দর সুবিধা সম্প্রসারণ; আঞ্চলিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন; বাংলাদেশ ভারতের অংশগ্রহণে বিভিন্ন আঞ্চলিক ফোরামকে অধিকতর কার্যকর করাসহ বাণিজ্যসংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়।

এদিকে দুই দেশের বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকের বিষয়ে রোববার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ভারত-বাংলাদেশের পাটপণ্যের ওপর অনেক আগে থেকেই অ্যান্টিডাম্পিং ডিউটি আরোপ করে রেখেছে। পাটপণ্য রফতানিতে বাংলাদেশ ভর্তুকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করছে তারা। বাংলাদেশের কিছু কোম্পানির তালিকা করে ভারতে ওইসব কোম্পানির পণ্য রফতানি বন্ধ করবে বলেছে। সচিব পর্যায়ের চূড়ান্ত বৈঠকে বিষয়টি আমরা এক নম্বর এজেন্ডা হিসেবে রেখেছি। আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করব।

২০১৭ সালের এপ্রিলে ভারত বাংলাদেশ থেকে রফতানি হওয়া প্রতিটন পাটপণ্য পাটের বস্তায় ১৯ ডলার থেকে ৩৫১ দশমিক ৭২ ডলার পর্যন্ত পাঁচ বছর মেয়াদে অ্যান্টিডাম্পিং ডিউটি আরোপ করেছে। বাংলাদেশ প্রতি বছর ভারতে প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলারের পাট পাটপণ্য রফতানি করে।

১০০ কোটিরও বেশি জনসংখ্যার দেশ ভারতে বাংলাদেশের রফতানি আয় সামান্য। গত অর্থবছর দেশটিতে বাংলাদেশের রফতানির পরিমাণ ছিল দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার। একই সময়ে ভারত থেকে বাংলাদেশের আমদানি হয়েছে দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার। চীনের পরই ভারত থেকে সবচেয়ে বেশি পণ্য আমদানি করে বাংলাদেশ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন