নিয়োগ-পদোন্নতিতে পদ্ধতিগত বর্ণবাদ

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের তদন্তের মুখোমুখি ফেসবুক

বণিক বার্তা ডেস্ক

কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে বর্ণবাদী আচরণের গুরুতর অভিযোগ সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্ট ফেসবুকের বিরুদ্ধে। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সংস্থার তদন্তে একে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের পদ্ধতিগত বর্ণবাদ হিসেবেই আখ্যা দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি ফেসবুকের চাকরিতে আবেদনকারী তিন ব্যক্তি এবং ফেসবুকের একজন ব্যবস্থাপক আইনজীবী প্রতিষ্ঠানটির বৈষম্যের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তার কাছে এমন অভিযোগ করেছেন। খবর রয়টার্স।

যুক্তরাষ্ট্রের ইক্যুয়াল এমপ্লয়মেন্ট অপরচুনিটি কমিশনের (ইইওসি) পক্ষ থেকে বলা হয়, পদ্ধতিগত বর্ণবাদ বলতে তারা মনে করছেন যে জনবল নিয়োগ এবং তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের এমন অনেক নীতি রয়েছে, যেগুলো সীমাহীন বৈষম্যের পরিচায়ক।

ইইওসির কাজ হলো মূলত শ্রমিক-মালিক দ্বন্দ্বের মধ্যস্থতা করা। এক্ষেত্রে কোনো অভিযোগের সত্যতা পেলে সংস্থাটি আইনী পদ্ধতিতে বিষয়টি মিমাংসারও উদ্যোগ নিয়ে থাকে।

সংস্থাটির কর্মকর্তারা কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে পদ্ধতিগতভাবে কাজ করে থাকেন। অভিযুক্ত সংস্থাগুলোর তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করার পাশাপাশি শ্রমিকদের প্রতিনিধি হিসেবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে তারা আইনী ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন।

ফেসবুকের বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগে মামলাকারী ব্যক্তিরা হলেন ফেসবুকের অপারেশনস প্রোগ্রাম ম্যানেজার অস্কার ভেনেসি জুনিয়র, চাকরি থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে গত জুলাইতে ইইওসি বরাবর অভিযোগ দাখিল করা দুই প্রার্থী। এছাড়াও তৃতীয় আরেকজন প্রত্যাখ্যাত চাকরিপ্রার্থী ডিসেম্বরে মামলায় যোগ দেন। নিয়োগসংক্রান্ত আইন সংস্থা মেহরি অ্যান্ড স্কালেট ছাড়াও কাটজ মার্শাল অ্যান্ড ব্যাংক মামলায় তাদের সহযোগিতা করছে।

চাকরিপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে বৈষম্যের ব্যাপারে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তারা। সেক্ষেত্রে কর্মচারীদের বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়নের ওপর নির্ভর করে বৈষম্য করা হয়। একইভাবে পদোন্নতির ক্ষেত্রেও গত্বাঁধা নিয়মে বৈষম্যের শিকার হতে হয় তাদের। তবে এর আগে ইইওসির প্রতিবেদনে ফেসবুকের বিরুদ্ধে ধরনের কোনো অভিযোগ আনা হয়নি। প্রতিবেদনে তারা ফেসবুকের খারাপ কোনো কিছু পাননি বলে জানানো হয়। তবে বিষয়ে জানতে চাইলে ইইওসির পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করা হয়।

ভেনেসি অন্য চাকরিপ্রত্যাশীদের আইনজীবী পিটার রোমার-ফ্রেডম্যান বলেন, অভিযোগে গত বছরের আগস্টে তদন্তকারী নিয়োগ করেছিল ইইওসি। তদন্তকারীরা উভয়পক্ষ থেকে বিস্তারিত ব্রিফিংয়ের কাগজপত্র জমা নেন। তদন্তের বাল্টিমোর, পিটার্সবার্গ ওয়াশিংটন অফিস সম্পৃক্ত ছিল।

ফেসবুকের পরামর্শক কোবিংটন বার্লিং বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। সংস্থাটির মুখপাত্র এন্ডি স্টোনও মামলা এবং বিশেষ করে অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেন, চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধরনের (বর্ণ) কর্মচারীদের নিয়োগ দেয়া জরুরি। সেই সঙ্গে তাদের সম্মান এবং কাজের নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করাও গুরুত্বপূর্ণ। এন্ডি স্টোন বলেন, বৈষম্যের প্রতিটি বিষয়কেই আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখি। একই সঙ্গে এগুলোর তদন্ত করে দেখি আমরা।

ফেসবুক বলছে, গত জুন পর্যন্ত নিয়োগ দেয়া কর্মচারীদের প্রায় দশমিক শতাংশই কালো। তবে রোমার ফ্রেডম্যান বলেন, ইইওসিকে দেয়া এক প্রতিবেদনে তারা জানিয়েছেন যে ফেসবুকের নীতিমালার মধ্যে রয়েছে যে তারা কাউকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করলে তাদের হাজার ডলার বোনাস দেয়া হয়। কিন্তু ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সুপারিশকৃত লোকদের অনেককেই তাদের কর্মরত চাকরিজীবী হিসেবে দেখায়। যার মাধ্যমে কালো বর্ণের লোকজন আরো পিছিয়ে পড়ে।

গত বছরের ডিসেম্বরে, ফেসবুকের বিরুদ্ধে আমেরিকান চাকরিজীবীদের মধ্যে মোটা দাগে বৈষম্যের অভিযোগ আনে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ। এইচ-১বি ভিসাধারীদের মতোই এটি অস্থায়ী কর্মীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয় বলে অভিযোগ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন