দক্ষিণ কোরিয়ায় অভিবাসন

পুনর্নিষেধাজ্ঞা এড়াতে সতর্ক বোয়েসেল

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে বাংলাদেশ থেকে অভিবাসনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল দক্ষিণ কোরিয়া। প্রায় সাড়ে সাত মাস বন্ধ থাকার পর গত মাসের শুরুর দিকে তা আবার চালু করা হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে আবার যাতে ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করা হয়, সে বিষয়ে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল) এজন্য দক্ষিণ কোরিয়াগামীদের জন্য দেশটিতে যাত্রার আগে সাতদিন বোয়েসেলের তত্ত্বাবধানে কোয়ারেন্টিনে রাখার উদ্যোগ নিয়েছে সংস্থাটি।

গত বছরের ২৩ জুন বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশের ওপর অনির্দিষ্টকালের জন্য ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল দক্ষিণ কোরিয়া। বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল ফ্লাইট চলাচলও। গত ফেব্রুয়ারি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। এর ফলে কোরিয়া গমনেচ্ছু বাংলাদেশী নাগরিকরা দেশটির ঢাকাস্থ দূতাবাসের মাধ্যমে ভিসার আবেদন করতে পারছেন।

বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়াগামী দক্ষ অভিবাসী কর্মীদের এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেমের (ইপিএস) আওতায় দেশটিতে পাঠানো হচ্ছে। বোয়েসেল সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশের ইপিএস কর্মীদের পুনর্নিবন্ধন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ইপিএস কর্মীদের করোনা পরীক্ষার প্রতিবেদনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে একটি হাসপাতাল নির্দিষ্ট করেছে বোয়েসেল। অন্যদিকে কভিড-১৯ প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দেয়া নির্দেশনার ভিত্তিতে দক্ষিণ কোরিয়াগামী ইপিএস কর্মীদের যাত্রার আগে সাতদিন কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করবে বোয়েসেল। পাশাপাশি সব কর্মীর জন্য ভ্রমণ বীমারও ব্যবস্থা করা হবে।

সিউল বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, নিষেধাজ্ঞা চলাকালেও গত মে মাস থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ৫৫৬ জন আটকে পড়া ইপিএস কর্মীকে দক্ষিণ কোরিয়া ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে। এর পরও দেশে গিয়ে আটকে রয়েছেন ইপিএস কর্মীসহ প্রায় দুই হাজার দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী বাংলাদেশী।

দূতাবাস সূত্র বলছে, যারা ভিসা পেয়ে কোরিয়ায় আসবেন, তারা নিজেদের জাতীয় স্বার্থে সাবধানে থেকে করোনামুক্ত অবস্থায় উড়োজাহাজে চড়বেন। কারণ করোনা সংক্রমিতদের প্রবেশ বন্ধে দক্ষিণ কোরিয়া সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ প্রতিরোধ আইনের একটি সংশোধনী বিল পাস করেছে। এর আওতায় করোনামুক্ত হিসেবে ভুয়া সনদধারীদের কোরিয়া ত্যাগে বাধ্য করা হবে। একই পদক্ষেপ নেয়া হবে দেশটিতে প্রবেশের অব্যবহিত পর সংক্রমিত হিসেবে শনাক্তকৃতদের ক্ষেত্রেও। এছাড়াও তাদের জরিমানাও দিতে হতে পারে।

এক্ষেত্রে এর বাইরেও বাংলাদেশের ওপর নতুন করে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়ারও শঙ্কা তৈরি হবে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

প্রসঙ্গত, দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনাময় বৈদেশিক শ্রমবাজার। বাংলাদেশের আহরিত রেমিট্যান্সের উৎস হিসেবে দেশটির অবস্থান দ্বাদশ। অতীতে বাংলাদেশের চারটি জনশক্তি রফতানি কোম্পানির মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মী নিয়োগ হলেও ২০০০ সালে সেটি একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে ২০০৭ সাল থেকে সরকারি প্রতিষ্ঠান বোয়েসেল এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারি প্রতিষ্ঠান হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্টের (এইচআরডি) মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন