জালিয়াতি করে ১১ ব্যাংকের কয়েক কোটি টাকা লুট

গ্রেফতার ৫, বরখাস্ত ইসির ৪৪ কর্মচারী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), ট্রেড লাইসেন্স টিন সার্টিফিকেট বানিয়ে কখনো ফ্ল্যাট মালিক, কখনো আবার ক্রেতা সেজে ব্যাংক থেকে লোন নিত একটি চক্র। এরপর ঋণ পরিশোধ না করে গা ঢাকা দিত চক্রের সদস্যরা। সম্প্রতি জালিয়াত চক্রের সন্ধান পায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) চক্রটি ঋণ নেয়ার নামে পর্যন্ত ১১টি ব্যাংকের কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।

মঙ্গলবার রাজধানীর রামপুরা খিলগাঁওয়ে অভিযান চালিয়ে চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। চক্রটিকে সহায়তার অভিযোগে ৪৪ কর্মচারীকে বরখাস্ত করেছে নির্বাচন কমিশন।

গতকাল ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ একেএম হাফিজ আক্তার এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ভুয়া এনআইডি, টিনসহ অন্যান্য তথ্য জালিয়াতির মাধ্যমে ঢাকা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে গত ডিসেম্বরে খিলগাঁও পল্টন থানায় মামলা হয়। ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশের মতিঝিল বিভাগ মামলাটির তদন্ত শুরু করে।

তদন্তে ডিবি পুলিশ জানতে পারে, ভুয়া এনআইডি, ভুয়া ট্রেড লাইসেন্স, ভুয়া টিন সার্টিফিকেট ব্যবহার করে ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডসহ অন্তত ১১টি ব্যাংক থেকে ফ্ল্যাট কেনার জন্য লোন নিয়ে টাকা পরিশোধ না করে পালিয়ে যায় একটি চক্র। প্রাথমিক তদন্তে চক্রের সদস্য বিপ্লবকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।

বিপ্লব জানায়, নির্বাচন কমিশন অফিসের কিছু অসাধু কর্মচারীর সহায়তায় তারা ভুয়া এনআইডি বানিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার কাজ করে আসছে। মার্চ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় বিপ্লব।

বিপ্লবের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ প্রতারক চক্রের মূলহোতা আল-আমিনকে গ্রেফতার করে। আল-আমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে চক্রের অন্য সদস্য বিদ্যুৎ, আবদুল্লাহ আল শহিদ, রেজাউল ইসলাম শাহজহানকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রতারক চক্রের সঙ্গে ব্যাংকের কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন অফিসের ৪৪ কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এদের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে। ব্যাংকের কেউ এতে জড়িত কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বিষয়ে বণিক বার্তাকে ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমরানুল হক বলেন, প্রতারকরা আমাদের ব্যাংকের দুটি ঋণ বের করে নিয়েছিলেন। ৭০ লাখ টাকা করে দুটি ঋণের পরিমাণ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আমরা পর্যালোচনা করে দেখেছি, ব্যাংক কর্মীদের কোনো গাফিলতি এক্ষেত্রে ছিল না। প্রতারকরা জাল এনআইডি তৈরি করে ব্যাংকারদের ফাঁকি দিয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন