চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই করোনার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার লড়াই শুরু করে দেশের রফতানি খাত, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রভিশনাল বা সাময়িক প্রতিবেদনেও এ তথ্য উঠে এসেছে। ইপিবির তথ্য বলছে, অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) মোট রফতানি কমেছে ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এর মধ্যে নিট পণ্যের রফতানি ৪ শতাংশ বাড়লেও ওভেন পণ্যের রফতানি কমেছে ১১ শতাংশ। নিট ও ওভেন মিলে মোট পোশাক রফতানি কমেছে ৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
ইপিবির প্রতিবেদন মতে, ২০২০-২১ অর্থবছরের আট মাসে ২ হাজার ৬৮৩ কোটি ডলার রফতানির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। এর বিপরীতে রফতানি হয়েছে ২ হাজার ৫৮৬ কোটি ডলারের পণ্য। সেই হিসাবে লক্ষ্যের চেয়ে রফতানি কমেছে ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ। অন্যদিকে ২০১৯-২০ অর্থবছরে একই সময়ে রফতানির পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৬২৪ কোটি ডলার। ফলে গত অর্থবছরের চেয়ে এ সময়ে রফতানি কমেছে ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে নিট পণ্যের রফতানি বেড়েছে ৪ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। গত বছরের প্রথম আট মাসে নিট পণ্যের রফতানির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৮৯ কোটি ডলারের। আর চলতি অর্থবছরের একই সময়ে রফতানি হয়েছে ১ হাজার ১৩৪ কোটি ডলারের পণ্য। যেখানে রফতানির লক্ষ্য ছিল ১ হাজার ৯২ কোটি ডলারের। সেই হিসাবে আট মাসে লক্ষ্যের চেয়ে রফতানি বেড়েছে ৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
ইপিবির পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, ওভেন পণ্যের রফতানি কমেছে ১১ দশমিক ৪৯ শতাংশ। গত অর্থবছরের প্রথম আট মাসে ওভেন পণ্যের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৯৪ কোটি ডলারের। আর চলতি অর্থবছরে একই সময়ে রফতানি হয়েছে ৯৬৯ কোটি ডলারের পণ্য। যেখানে রফতানির লক্ষ্য ছিল ১ হাজার ১১৮ কোটি ডলার। সেই হিসাবে লক্ষ্যের চেয়ে এ সময়ে ১৩ দশমিক ৩২ শতাংশ রফতানি পিছিয়ে আছে ওভেন পণ্য রফতানি খাত।
কার্পেট রফতানি লক্ষ্যের চেয়ে ৪৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে বলে দেখা যাচ্ছে ইপিবির প্রতিবেদনে। আট মাসে কার্পেট রফতানির টার্গেট ছিল ১ কোটি ৯৬ লাখ ডলারের পণ্য। এর বিপরীতে রফতানি হয়েছে ২ কোটি ২৯ লাখ ডলারের পণ্য। সেই হিসাবে লক্ষ্যের চেয়ে এ সময়ে রফতানি বেড়েছে ১৬ দশমিক ৮১ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে কার্পেট পণ্যের রফতানির পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৫৭ লাখ ৫০ হাজার ডলারের।
গত অর্থবছরের আট মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে কেমিক্যালস পণ্য রফতানির পরিমাণ বেড়েছে ২১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। গত অর্থবছর ১৪ কোটি ডলার রফতানি হয়েছে। যেখানে চলতি অর্থবছরে একই সময়ে ১৭ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে। আর লক্ষ্যের চেয়ে এ সময়ে রফতানি বেড়েছে ৭ দশমিক ৫১ শতাংশ।
ইপিবি বলছে, অর্থবছরের প্রথম আট মাসে কৃষিপণ্যের রফতানি লক্ষ্যের চেয়ে ৫ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ কমেছে। চলতি অর্থবছরের এ সময়ে রফতানির লক্ষ্য ছিল ৭০ কোটি ডলার। কিন্তু রফতানি হয়েছে ৬৬ কোটি ডলারের। গত অর্থবছরের এ সময়ে কৃষিপণ্যে রফতানির পরিমাণ ছিল ৬৬ কোটি ডলারের কিছু বেশি। সেই হিসেবে গত বছরের তুলনায় এ সময়ে কৃষিপণ্যের রফতানি কমেছে শূন্য দশমিক ৪০ শতাংশ।
ইপিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, একক মাস হিসেবে গত ফেব্রুয়ারিতে রফতানি হয়েছে ৩১৯ কোটি ২০ লাখ ডলারের পণ্য। গত বছরের একই সময়ে যেখানে রফতানির পরিমাণ ছিল ৩৩২ কোটি ২৩ লাখ ডলারের। সেই হিসেবে এ মাসে রফতানি কমেছে ৩ দশমিক ৯২ শতাংশ।
