দ্রুত চাল আমদানির প্রস্তাব মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদন

১০ দিনের মধ্যে দাখিল করতে হবে দরপত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে লাখ ৫০ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। সেই সঙ্গে দরপত্র দাখিলের সময়সীমাও এক মাস কমানোর প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশের তারিখ থেকে ১০ দিনের মধ্যে দরপত্র দাখিল করতে হবে, আগে যা ছিল ৪২ দিন।

গতকাল অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এসব প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়।

বৈঠক শেষে অনলাইনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাংবাদিকদের অনুমোদনকৃত প্রস্তাবগুলোর বিষয়ে তথ্য উপস্থাপন করেন। তিনি জানান, অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সপ্তম সভায় তিনটি প্রস্তাব সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অষ্টম সভায় দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ক্রয় কমিটির অনুমোদিত দুটি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ১৯৯ কোটি ২৬ লাখ ৭৬ হাজার ৮৯৯ টাকা। সম্পূর্ণ অর্থই সংস্থান করবে সরকার।

ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, চলতি অর্থবছরে খাদ্যশস্যের উৎপাদন কম হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে চাল আমদানি দ্রুত সময়ে করা হলেও যেন সেটি পরিমিত মাত্রায় হয় সে বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে। বেশি বেশি চাল আমদানি করলে আবার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।

তিনি বলেন, অন্যান্য বিষয় অপরিবর্তিত থাকা সাপেক্ষে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। গত বছর পরিস্থিতি অনুকূলে ছিল না। বন্যা জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে স্বয়ম্ভরতা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ফলে চলতি অর্থবছরে চাল আমদানি করতে হচ্ছে।

অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় অনুমোদিত অন্য প্রস্তাবটি হলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতায় চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য বেজা বেপজার মধ্যে উন্নয়ন চুক্তি স্বাক্ষরের অনুমোদন।

এছাড়া নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃৃপক্ষ কর্তৃক পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষে আন্তর্জাতিক মানের বেসরকারি অপারেটর নিয়োগের লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) পদ্ধতিতে ইক্যুইপ, অপারেট অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স অব পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল অন পিপিপি মডেল শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

এলডিসি থেকে উত্তরণে কেন বেশি সময় নিলাম এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিপদে পড়ার আশঙ্কা থাকতে পারে। নিরাপদ দক্ষতার সঙ্গে যাতে উত্তরণ করা সম্ভব হয়, এজন্য জাতিসংঘের আলোচনায় আগে থেকেই আমার সময় বেশি দাবি করেছিলাম। সেটি অনুমোদন করা হয়েছে। তবে এর কারণে কী কী চ্যালেঞ্জ আসতে পারে, সে বিষয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এখান থেকে যে সুবিধা হারাব, তার চেয়ে বেশি সুবিধা আমরা পাব। আর করোনার জন্য যত অর্থই প্রয়োজন হোক আমরা সেটির জোগান দেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।

সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় অনুমোদিত প্রস্তাবগুলো হলো: শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) কর্তৃক বিসিক কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, মুন্সীগঞ্জ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্পের মাটি ভরাট (ভূমি উন্নয়ন পুকুর খনন করে মাটি ভরাট) কাজ বাংলাদেশ নৌবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ লিমিটেডকে দেয়া। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এটি বাস্তবায়ন করা হবে, ১২৩ কোটি ৬৩ লাখ হাজার ৩১৯ টাকায় কাজটি পাচ্ছে তারা।

এছাড়া বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড কর্তৃক শতভাগ পল্লী বিদ্যুতায়নের জন্য বিতরণ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ (ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম সিলেট বিভাগ) প্রকল্পের প্যাকেজ নং--৪৮-এর লট -এর আওতায় ১৩০ কিলোমিটারের জন্য ৭৫ কোটি ৬৩ লাখ ৬৯ হাজার ৫৮০ টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন