করোনা-পরবর্তী সময়ে ভ্রমণ বৃদ্ধির পূর্বাভাস

বণিক বার্তা ডেস্ক

কভিড-১৯ মহামারীতে প্রায় এক বছর ধরে মানুষ ঘরবন্দি অবস্থায় রয়েছে। ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে লকডাউন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাসহ নানা বিধিনিষেধের কারণে মানুষ খুব কমই বাইরে বের হতে পেরেছে। তবে কয়েক মাস ধরে বিশ্বজুড়ে টিকাদান কর্মসূচি শুরুর পর বিধিনিষেধ শিথিল এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নেয়া হচ্ছে। ফলে করোনা-পরবর্তী সময়ে ভ্রমণ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে অনলাইন বুকিং প্লাটফর্ম এয়ারবিএনবি। খবর বিবিসি।

তবে সংস্থাটি বলছে, এটি এখনই অনুমান করা কঠিন যে ব্যবসার ক্ষেত্রে বছরটা কেমন যাবে। তারা জানায়, কভিড-১৯-এর কারণে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার ফলে গত বছর তাদের আয় আগের চেয়ে ৩০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

এয়ারবিএনবি বলছে, ২০২০ সালের শেষ তিন মাসের তুলনায় বছর ভ্রমণ কিছুটা কমে এসেছে। তবে অনেক বিশেষজ্ঞ কভিড-পরবর্তী সময়ের জন্য নতুন করে অনেক স্থানে লকডাউন শুরু হওয়ায় অবস্থাকে সন্তোষজনক বলছেন।

সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী ব্রেইন চেস্কি বলেন, পুনরায় ভ্রমণ শুরু হয়েছে। অবস্থায় আমরা আমাদের প্রস্তুতির দিকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। সেই সঙ্গে মহামারী-পরবর্তী সময়ে ভ্রমণগুলো সংস্থাকে আরো লাভবান করবে।

চেস্কি জানান, তাদের প্রাইভেট হোমগুলো মানুষকে পরিবার বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি ভ্রমণের ব্যাপারে আরো আগ্রহী করে তুলবে। দূরবর্তী স্থানে কাজের সুযোগ মানুষকে বাড়ি থেকে দূরে বেশ কয়েক মাস অতিবাহিত করতে ভ্রমণে আরো উৎসাহী করে তোলে।

তিনি বলেন, আমরা বেশকিছু নতুন ক্ষেত্র দেখছি। আমি মনে করি না আমরা ভ্রমণের ক্ষেত্রে আবার ২০১৯ সালে ফিরে যাব। এটি পরিবর্তন হচ্ছে এবং ভিন্নতরও।

তবে এয়ারবিএনবি সতর্ক করে দিয়ে বলছে, ২০২১ সালে টিকাদান কর্মসূচি এবং সেটার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে ভ্রমণে সবাই উৎসাহিত না হতে পারে। ফলে ব্যাপক হারে ভ্রমণ শুরুর কোনো সম্ভাবনা নেই।

চেস্কি বলেন, আমরা এখনই ২০২১ সালের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে পারি না। এটি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে কেবল ডিসেম্বরে ভ্রমণ সংখ্যার ওপর নির্ভর করে বলা হয়েছে।

বর্তমানে বিশ্বের ২২০টি দেশে এয়ারবিএনবি তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তারা জানায়, করোনা চলাকালে মানুষ অভ্যন্তরীণ ভ্রমণে বেশি অভ্যস্ত ছিল। তবে এটি আন্তর্জাতিক পর্যটনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পর্যাপ্ত নয়।

ইউরোপে এয়ারবিএনবির ব্যবসা মূলত আন্তঃসীমান্ত ভ্রমণের ওপর নির্ভর করে। এটি গত বছর ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে যুক্তরাজ্য, জার্মানি ইতালিতে ভ্রমণ নিষিদ্ধ থাকার ফলে তা ঘটেছে। এক্ষেত্রে উত্তর আমেরিকা সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ ছিল। সব মিলিয়ে গত বছর ৪৬০ কোটি ডলারের লোকসানের সম্মুখীন হয়েছে এয়ারবিএনবি।

যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, এক হাজার অংশগ্রহণকারীর মধ্যে প্রায় অর্ধেক চলতি বছরে ভ্রমণের জন্য নিবন্ধন করেছেন অথবা ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছেন।

তবে চলতি বছর বেশকিছু বুকিং বাতিল হয়ে যাওয়ার কারণে সংস্থাটি আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে। এর ফলে তাদের হোস্টদের সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে কিছুটা প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে তারা।

ইকুইটি বিশেষজ্ঞ এঞ্জেলো জিনো বলেন, ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক হারে টিকা প্রয়োগ হয়ে গেলে তারা আবারো আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। এয়ারবিএনবি এর ব্যবসায়িক মডেল উন্নতি বেশ আকর্ষণীয়। সেই সঙ্গে তা নতুন নতুন ভ্রমণের জায়গা খুঁজে পেতেও বেশ সহায়ক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন