জমি অধিগ্রহণে বরাদ্দ না দিয়েই সেতু নির্মাণ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, নওগাঁ

যাতায়াতের দুর্ভোগ লাঘবে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার ছোট যমুনা নদীর দেউলিয়া (চারমাথা) কাদিবাড়ী ঘাটের ওপর সেতু নির্মাণের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। অবশেষে ৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। প্রায় ছয় মাস আগে ব্রিজের নির্মাণকাজ শেষ হয়। কিন্তু জমি অধিগ্রহণের বরাদ্দ না থাকায় সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা যাচ্ছে না। এতে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটির সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ওই এলাকার মানুষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ব্রিজের নির্মাণকাজ করে নওগাঁ শহরের ইথেন-পিএমপিএল নামে যৌথ অংশীদারিত্বের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেতুটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছিল কোটি ২১ লাখ ২৭৭ টাকা। ছয় মাস আগে নির্মাণ কাজ শেষ হয়। তবে সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণের কোনো বরাদ্দ দেয়া হয়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, ব্রিজের পূর্বপাশ থেকে দেউলিয়া মোড় পর্যন্ত একটি সরু সড়ক আছে। সড়কটি অনেকটাই বাঁকা। চলাচলের উপযুক্ত করতে সেতু বরাবর প্রশস্ত করে সড়কটি নির্মাণ করতে হবে। প্রশস্ত করলে সড়কটি স্থানীয় পাঁচজনের এক বিঘা পাঁচ কাঠা জমির ওপর পড়বে। কিন্তু তাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি। এমনকি জমি অধিগ্রহণের জন্য অর্থ বরাদ্দও দেয়া হয়নি।

এদিকে বরাদ্দ না থাকায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ছলিম উদ্দিন তরফদার নিজস্ব তহবিল থেকে জমির মালিকদের লাখ ৪০ হাজার টাকা দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু বাজারমূল্য অনুযায়ী তা অনেক কম হওয়ায় জমির মালিকরা প্রস্তাবে রাজি হননি। ফলে আটকে আছে সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ।

জমির মালিক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, প্রকৌশল অফিস থেকে জরিপ করা হয়েছে। জরিপে দেখা গেছে, ব্রিজের সংযোগ সড়ক স্থানীয় পাঁচজনের জমির ওপর দিয়ে নির্মাণ করতে হবে। সেখানে আমারও পাঁচ কাঠা জমি আছে। বর্তমানে মৌজায় জমির মূল্য প্রতি বিঘা প্রায় লাখ টাকা। কিন্তু এমপি আমাদের পাঁচজনকে জমি বাবদ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিতে চেয়েছেন। আমরা তাতে রাজি হইনি। আমরা সরকারি মূল্যে জমি দিতে চাই।

ব্রিজের পাশের চা দোকানদার বকুল হোসেন বলেন, সংযোগ সড়ক না থাকায় অনেকে ব্রিজে মোটরসাইকেল নিয়ে উঠতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারান। আমরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করি। প্রতিদিনই এমন দুর্ঘটনা ঘটে। এতে অনেকেই গুরুতর আহত হন।

ব্যাপারে ঠিকাদার ইকবাল শাহরিয়ার রাসেল বলেন, ব্রিজের কাজ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। কিন্তু জমি অধিগ্রহণ-সংক্রান্ত জটিলতায় সংযোগ সড়কের কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। এটা প্রশাসনিক ব্যাপার। তবে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সমস্যা নেই।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের বদলগাছী উপজেলা প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, ওই ব্রিজের জন্য ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজালের (ডিপিপি) সময় সংযোগ সড়ক নির্মাণে জমি অধিগ্রহণের জন্য কোনো বরাদ্দ দেয়া হয়নি। ব্রিজের পূর্বপাশে সরকারি যে সড়ক আছে, তার ওপর দিয়েই রাস্তা নির্মাণ করা হবে। এছাড়া সড়ক প্রশস্ত করতে হলে কিছু ব্যক্তিমালিকানাধীন জমির ওপরও যাবে। বিষয় নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য জমির মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এছাড়া ঠিকাদার অন্য জায়গায় কাজ করছেন। সেখানে কাজ শেষ হলেই ব্রিজের সংযোগ সড়কের কাজ দ্রুত শুরু করবেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন