চার মাসের মধ্যে বড় ধরনের তিনটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি মোজাফফর হোসেন স্পিনিং মিলস লিমিটেডের কারখানায়। সর্বশেষ গত শুক্রবার দিবাগত রাত ৮টার দিকে কোম্পানিটির রিং ইউনিটের নতুন স্পিনিং ওয়্যারহাউজে আগুন লাগে। এতে কোম্পানিটির রো কটন, ফিনিশড ইয়ার্ন ও ওয়্যারহাউজ শেড অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কোম্পানির নিজস্ব অগ্নিনিরাপত্তা দল ও দমকল বাহিনীর সদস্যরা প্রায় ৬-৭ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।
অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনায় কোম্পানিটির ১৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। মোজাফফর হোসেন স্পিনিং জানিয়েছে, তাদের রো কটন, ফিনিশড ইয়ার্ন ও ওয়্যারহাউজ শেড অংশ বীমা সুবিধার আওতায় রয়েছে। সংশ্লিষ্ট বীমা কোম্পানির প্রতিনিধিরা এ ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের কাজ শুরু করেছেন বলে জানানো হয়েছে।
গত মাসে এটি মোজাফফর হোসেন স্পিনিংয়ের কারখানায় দ্বিতীয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। গত ১২ ফেব্রুয়ারি কোম্পানিটির রোটর ইউনিটের ব্লো রুম মিক্সিং সেকশনে আগুন লাগে। সেই ঘটনায় কারখানার তুলা প্রক্রিয়াকরণ অংশের পাশাপাশি কিছু যন্ত্রপাতিরও ক্ষয়ক্ষতি হয়। এতে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দেড় কোটি টাকা বলে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছে।
তার আগে গত বছরের ১ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অবস্থিত মোজাফফর হোসেন স্পিনিংয়ের রিং ইউনিটে আগুন লাগে। সেই ঘটনায় কোম্পানিটির আনুমানিক ৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে সে সময় জানানো হয়েছিল। ওই দুর্ঘটনার পর প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ, যন্ত্রপাতি স্থাপন ও পরীক্ষামূলক উৎপাদন শেষে গত মাসের শুরুতে রিং ইউনিটে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়। ইউনিটটির মোট দৈনিক সক্ষমতা ২০ হাজার টন।
সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) মোজাফফর হোসেন স্পিনিংয়ের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৩৯ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৬১ পয়সা। দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩ পয়সা, যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৩৩ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৩ টাকা ৬৩ পয়সা।
৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে মোজাফফর হোসেন স্পিনিং। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ১৯ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৯৫ পয়সা।
২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের ২ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি। তার আগের দুই হিসাব বছরে ৫ শতাংশ হারে স্টক লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বশেষ ও সমাপনী দর ছিল ১৩ টাকা ৭০ পয়সা। গত এক বছরে এ শেয়ারের দর ৬ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ১৬ টাকা ৯০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করেছে।