কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলার জারি

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের সদ্ব্যবহার করার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দেয়া ঋণের সদ্ব্যবহার নিশ্চিতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গতকাল জারীকৃত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করতে সাতটি শর্ত বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের অভিমত, যে উদ্দেশ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেয়া হয়, সে উদ্দেশ্যে ব্যবহার না করে ভিন্ন খাতে ঋণ প্রবাহিত করাটি অপরাধ। যদিও দেশের ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় ফান্ড ড্রাইভার্ট বা ভিন্ন খাতে ঋণ ব্যবহারের ঘটনা অহরহই ঘটছে। পিকে হালদারের লুণ্ঠনের শিকার চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানেই কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ফান্ড ড্রাইভার্টের ঘটনা ঘটেছে। অবস্থায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের সদ্ব্যবহার নিশ্চিতে কঠোর হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাজার বিভাগ থেকে জারীকৃত প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত শর্তে বলা হয়েছে, যে উদ্দেশ্যে ঋণ বা লিজ অথবা বিনিয়োগ করা হয়েছে কিংবা হবে, সে উদ্দেশ্যেই তার সদ্ব্যবহার করা হবেএটি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে নিয়মিত তদারকি করতে হবে। কিস্তিভিত্তিক প্রকল্প ঋণের ক্ষেত্রে আগের কিস্তির সদ্ব্যবহার সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তবেই পরবর্তী কিস্তি ছাড় করা যাবে। এতে উল্লিখিত খাতের পরিবর্তে অন্যত্র ঋণের অর্থ ব্যবহূত হলে তার কারণ উদ্ঘাটনসহ তা রোধকল্পে তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।

একটি ঋণের অর্থ দিয়ে কোনোভাবেই অন্য ঋণ বা বিনিয়োগের দায় পরিশোধ অথবা সমন্বয় না করার নির্দেশ দিয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঋণের সদ্ব্যবহার নিশ্চিতকরণ এবং তদারকির বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ ঋণ নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ঋণের সদ্ব্যবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ পরিদর্শন প্রতিবেদন প্রণয়ন এবং তা সংশ্লিষ্ট ঋণ নথিতে সংরক্ষণ করতে হবে। পাশাপাশি ঋণ বা লিজ অথবা বিনিয়োগের সদ্ব্যবহার সংক্রান্ত সরজমিন পরিদর্শনে কোনো গুরুতর অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে তা তাত্ক্ষণিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাজার বিভাগকে জানাতে বলা হয়েছে।

দেশের সবকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহীর কাছে পাঠানো প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আর্থিক খাতে ঋণের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত না হলে তা সমগ্র আর্থিক খাতের ওপর বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করে। এটি পুরো খাতের সুশাসনকে বাধাগ্রস্ত করে। লক্ষ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কর্তৃক গ্রাহকের অনুকূলে বিতরণকৃত খাতে ঋণের অর্থ উদ্দিষ্ট খাতের পরিবর্তে অন্য খাতে ব্যবহূত না হওয়া, প্রদত্ত ঋণ বা লিজ অথবা বিনিয়োগ দ্বারা গ্রাহকের বিদ্যমান অন্য কোনো ঋণ বা লিজ অথবা বিনিয়োগ পরিশোধ বা সমন্বয় না করা এবং কিস্তিভিত্তিক প্রকল্প ঋণ/লিজ/বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী কিস্তির সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে পরবর্তী কিস্তি ছাড় না করা বর্তমান সময়ে অত্যাবশ্যকীয় পরিপালনীয় মর্মে পরিগণিত হচ্ছে। এজন্যই সাতটি নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপনটি  জারি করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন