মিনিটে সোয়া লাখ সাইবার হুমকি শনাক্ত!

বণিক বার্তা ডেস্ক

২০২০ সালে প্রতি মিনিটে লাখ ১৯ হাজার সাইবার হুমকি শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও গত বছরজুড়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান লক্ষ্য করে চালানো মোট হাজার ২৬০ কোটি সাইবার হামলা আটকে দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ট্রেন্ড মাইক্রো প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন দাবি করা হয়েছে। খবর ইন্দো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিস।

গত বছরজুড়ে শনাক্ত সাইবার হুমকিগুলোর ৯১ শতাংশই -মেইল থেকে আসা। অর্থাৎ এটি বিশ্বজুড়ে ফিশিং হামলা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে। এছাড়া গত বছর হোমওয়ার্ক বা বাসা থেকে কাজ করা কর্মীদের লক্ষ্য করে প্রস্তুত কোটি ৪০ লাখ ইউনিক ফিশিং ইউআরএল শনাক্ত করেছে সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানটি।

ট্রেন্ড মাইক্রোর কনস্ট্যান্ট স্টেট অব ফ্লাক্স: ট্রেন্ড মাইক্রো ২০২০ অ্যানুয়াল সাইবার সিকিউরিটি রিপোর্ট শীর্ষক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, গত বছর বাসায় থেকে কাজ করা কর্মীরা সাইবার অপরাধীদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিল। মূলত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বাসার নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা ভেঙে বাণিজ্যিক নেটওয়ার্কে প্রবেশ করতে বাসায় থেকে কাজ করা কর্মীদের টার্গেট করা হয়েছিল। গত বছর বাসা-বাড়ির কম্পিউটার নেটওয়ার্কে হামলার সংখ্যা ২১০ শতাংশ বেড়ে ২৯০ কোটিতে পৌঁছেছে। বেশির ভাগ হামলায় রাউটার বা স্মার্ট ডিভাইসের নিয়ন্ত্রণ নিতে ব্রুট ফোর্সিং লগইন ব্যবহার করা হয়েছে।

বিষয়ে ট্রেন্ড মাইক্রোর গ্লোবাল থ্রেট কমিউনিকেশনসের পরিচালক জন ক্লে বলেন, ২০২০ সালে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোতে লক্ষণীয় মাত্রায় সাইবার হামলা বেড়েছে। বাসা থেকে কাজ করা কর্মীদের নেটওয়ার্কে সবচেয়ে বেশি হামলা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যাংকিং, উৎপাদন এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতের প্রতিষ্ঠানে সবচেয়ে বেশি সাইবার হামলা শনাক্ত করা হয়েছে।

চীনে নভেল করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্তের খুব অল্প সময়ে তা মহামারী আকারে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। প্রাণহানি লকডাউনে স্থবির হয়ে পড়া বিশ্ব অর্থনীতির চাকা সচল করতে দ্রুত ভ্যাকসিনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। বাণিজ্যিকভাবে ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে এগিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া ইউরোপের একাধিক কোম্পানি। ভ্যাকসিন প্রাপ্তি কার্যকারিতা নিয়ে আশা বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে উদ্বেগ বাড়তে দেখা গেছে। কারণ দেশে দেশে ভ্যাকসিন প্রকল্পে সাইবার হামলা বাড়তে থাকে।

যুক্তরাজ্যের ঐতিহ্যবাহী অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির সঙ্গে মিলে করোনা ভ্যাকসিন তৈরির প্রকল্প এগিয়ে নিয়েছে ব্রিটিশ ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা। ওই সময় অ্যাস্ট্রাজেনেকার কভিড ভ্যাকসিন তৈরি প্রকল্পের কম্পিউটার সিস্টেমে সাইবার অপরাধীদের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছিল। প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল, সাইবার অপরাধীরা করোনা ভ্যাকসিন তৈরির বিষয়ে তথ্য হাতাতে চান কেন?

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত বছরজুড়ে পুরো দুনিয়া ভ্যাকসিন প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে ছিল। ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে শামিল হয়েছিল প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের অনেক দেশ। যাদের কয়েকটি কোম্পানির ভ্যাকসিন এরই মধ্যে বাজারে এসেছে। অনেক প্রতিষ্ঠান এখনো করোনার ভ্যাকসিন উন্নয়নে কাজ করছে। শুরুতে কে আগে ভ্যাকসিন বাজারে আনবে, তা নিয়ে তুমুল প্রতিযোগিতা ছিল। ওই পরিস্থিতিতে সাইবার অপরাধীরা ভ্যাকসিন প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে যেকোনো তথ্য বাগাতে পারলে, তা মিলিয়ন ডলারে বিক্রির সুযোগ ছিল। ভ্যাকসিন তৈরির সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্য কোম্পানিগুলো এসব তথ্য কিনবে। যে কারণে গত বছর প্রতিরক্ষা খাতের প্রতিষ্ঠান কিংবা গণমাধ্যম ছাপিয়ে হ্যাকারদের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল স্বাস্থ্য খাতের কোম্পানিগুলো। বিশেষত যেসব কোম্পানি প্রতিষ্ঠান করোনা ভ্যাকসিন তৈরির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন