পাথরশূন্য হয়ে পড়ছে বান্দরবানের ম্রখ্যং ঝিরি

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, বান্দরবান

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার আলেক্ষ্যং ইউনিয়নে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করে একটি সিন্ডেকেটের উত্তোলন করা বিপুল পরিমাণ পাথর ও পাথর ভাঙার দুটি মেশিন জব্দ করেছে প্রশাসন। 

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে অভিযান চালিয়ে ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের হ্লাপাইগয়পাড়া এলাকায় এসব পাথর জব্দ করেন রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রশাসনের নানা তদারকি সত্ত্বেও ইউনিয়েনের ৬নং ওয়ার্ডের হ্লাপাইগয় পাড়া এলাকার ম্রখ্যং ঝিরি থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করছে একটি সিন্ডিকেট। এতে জড়িত রয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা।  গত দুই বছরে হ্লাপাইগয়পাড়ার কাছ থেকে শুরু করে আনুমানিক দেড় কিলোমিটার উজান পর্যন্ত ঝিরি পাথরশূন্য হয়ে গেছে। বর্তমানে পাথরশূন্য ঝিরিতে শুধু ট্রাকের চাকার ছাপ।  সিন্ডিকেটটি অর্ধ যুগের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন খাল ও ঝিরি থেকে অবাধে পাথর উত্তোলন করে আসছে। 

গত বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের (পাচউবো) করা হ্লাপাইগয়-সাধু হেডম্যান পাড়া সড়কের সোয়া এক কিলোমিটার অংশে সড়কের বাম পাশে একটি কাঁচা সড়ক রয়েছে। কাঁচা সড়কটির আনুমানিক আধাকিলোমিটার ভেতরে বিপুল পরিমান পাথর মজুদ করা হয়েছে। মেশিন দিয়ে এসব পাথর ভাঙার কাজ করছেন কয়েকজন শ্রমিক। এ অংশের আরো ভেতরে গিয়ে দেখা যায়- ম্রখ্যং ঝিরি থেকে উত্তোলন করা পাথর পরিবহনের জন্য পাহাড় কেটে রাস্তা করা হয়েছে। 

এছাড়া হ্লাপাইগয়-সাধু হেডম্যান পাড়া সড়কের দুই কিলোমিটার অংশেও সড়কটির বাম পাশে আরো একটি কাঁচা সড়ক রয়েছে। পাহাড় কেটে বানানো এ সড়কের আনুমানিক দেড় কিলোমিটার ভেতরে হাঁটা পথে গিয়ে দেখা গেছে ট্রাকে পাথর বোঝাই করছে কয়েকজন শ্রমিক।  

কথা হলে শ্রমিকেরা জানান, তারা ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতা ভুসঞ্জয় তঞ্চঙ্গ্যার অধীনে দৈনিক মজুরিতে পাথর ভাঙা ও উত্তোলনের কাজ করছেন।  

অবৈধ পাথর উত্তোলন ও সরবরাহের বিষয় স্বীকার করেছেন ভুসঞ্জয় তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, আমরা কোনো কিছুর ক্ষতি না করেই পাথর উত্তোলন করছি।

এসব বিষয়ে কথা হলে বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বান্দরবান পৌরসভার টানা দ্বিতীয়বারের মেয়র মো. ইসলাম বেবী বণিক বার্তাকে বলেন, পরিবেশ ধ্বংস করার অধিকার কারও নাই। পরিবেশ ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হোক।  

পাথর ও দুটি মেশিন জব্দ করার বিষয় নিশ্চিত করে রোয়াংছড়ির ইউএনও মুহাম্মদ আবদুল্যাহ আল জাবেদ বলেন, পাথর উত্তোলন ও ভাঙার কাজে জড়িতদের কাউকে পাওয়া যায়নি। পরিবেশ ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে সরকার সবসময় সোচ্চার। পরিবেশ রক্ষায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। জব্দ করা পাথর ও দুটি মেশিন স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বারের জিম্মায় রাখা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন