যশোরের কাছারি বাড়ি দখলে নিতে জেলা প্রশাসনকে চিঠি

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, যশোর

যশোরের শার্শার ঐতিহ্যবাহী কাছারি বাড়ির দখলদার উচ্ছেদ করতে জেলা প্রশাসনকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেছে সরকারি কৌঁসুলির (পিপি) দপ্তর। ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড করে নেয়া ওই জমি উদ্ধারে জেলা প্রশাসন থেকে পিপিকে মামলা করার জন্য চিঠি দেয়া হলে প্রথম ধাপে মতামত দেন যশোর আদালতের পিপি কাজী বাহাউদ্দীন ইকবাল। এরপর প্রিন্ট পর্চার গেজেট এলে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে মামলা করে রেকর্ড সংশোধন করা হবে বলে জেলা প্রশাসনকে তিনি অবহিত করেন।

সূত্রমতে, শার্শার কাছারি বাড়ির সরকারি প্রায় এক বিঘা বাস্তু শ্রেণীর জমি ধানী শ্রেণী দেখিয়ে ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড করে নেয়ার অভিযোগ ওঠে। স্থানীয় ফজলুর রহমান নামে এক ব্যক্তি প্রথমে একসনা বন্দোবস্ত নিলেও পরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সরকারি জমি নিজেদের নামে রেকর্ড করে নেন। উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার দপ্তর থেকে তদন্ত করে এর সত্যতা মিলেছে। শার্শা উপজেলার তত্কালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) খোরশেদ আলম চৌধুরী ওই জমি সরকারের অনুকূলে নেয়ার জন্য ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে এলএসটি মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন।

শার্শার ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৭২ নম্বর শার্শার মৌজার সাবেক ১২৫৫ দাগের ৩৫ শতক সরকারি জমি ফজলুর রহমান নামে এক ব্যক্তি প্রথমে একসনা বন্দোবস্ত নেন। এর মধ্যে ৩২ দশমিক ৬৩ শতক (প্রায় এক বিঘা) জমি ১৯৮০ সালের ফেব্রুয়ারি নিজ নামে রেকর্ড করে নেন ফজলুর রহমান। প্রথম দিকে বিষয়টি গোপন থাকলেও তার মৃত্যুর পর ছেলে কবির হোসেন, জসিম উদ্দিন, মনির হোসেন ইমাম হোসেন সেখানে অবকাঠামো নির্মাণ করে প্রকাশ্যে দখলে নেন।

এদিকে সরকারি ওই জমি কীভাবে ব্যক্তিমালিকানায় রেকর্ড হলো তা নিয়ে আলোচনা চলছে প্রশাসনেও। উপজেলা ভূমি অফিস থেকে বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খোরশেদ আলম চৌধুরী ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর স্বাক্ষরিত এক পত্রে উল্লেখ করেন কালেক্টরেট যশোরের নামে কাছারি বাড়ির বাস্তু শ্রেণীর জমি কাছারি বাড়ির জমি ধানী হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। ফজলুর রহমান মারা যাওয়ার পর তার সন্তানদের নামে রেকর্ড করা হয়। বিষয়ে তিনি জেলা প্রশাসককে অবহিত করে চিঠি পাঠান। এরপর যশোরের জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে এলএসটি মামলা করার জন্য সরকারের পিপিকে চিঠি দেয়া হয়।

যশোর আদালতের পিপি কাজী বাহাউদ্দীন ইকবাল জানান, চিঠি পেয়ে তিনি সরেজমিনে ঘটনাস্থলে যান। কাগজপত্র যাচাই করে দেখেন সরকারের কাছারি বাড়ির সম্পত্তি জাল দলিল করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, শার্শা মৌজার প্রিন্ট পর্চার রেকর্ড প্রকাশিত হলেও এখনো গেজেট হয়নি। যে কারণে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে মামলা করে রেকর্ড সংশোধন করতে অপেক্ষা করতে হবে। তাই আপাতত দখলদার উচ্ছেদ করে সরকারের সম্পত্তি তারকাঁটা বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখতে মতামত দেয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন