দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির চাপে সূচকের পতন

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি বছরের জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই নিম্নমুখিতা পরিলক্ষিত হচ্ছে দেশের পুঁজিবাজারে। সূচকের পয়েন্ট হারানোর পাশাপাশি সময়ে দৈনিক গড় লেনদেনও হাজার ৩০০ কোটি থেকে নেমে ৫০০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবসেও পতনের ধারায় রয়েছে পুঁজিবাজার। দেশী বিদেশী বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির চাপে গতকাল ৬৭ পয়েন্ট হারিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স। অবশ্য এদিন এক্সচেঞ্জটিতে দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ২৬ দশমিক শতাংশ। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও গতকাল সূচক লেনদেনের পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল লেনদেনের শুরু থেকেই শেয়ার বিক্রির চাপে পয়েন্ট হারাতে থাকে সূচক। স্থানীয় ব্যক্তিশ্রেণীর বড় বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি বিদেশী বিনিয়োগকারীদের পোর্টফোলিও থেকে গতকাল শেয়ার বিক্রির চাপ দেখা গেছে। গতকাল সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল বেক্সিমকো লিমিটেডের। কোম্পানিটির শেয়ারের দর পতনের কারণে এদিন ১৭ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট হারিয়েছে সূচক। এছাড়া স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের দর পতনের কারণে ১৩ দশমিক ৪২, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের দর পতনে ১০ দশমিক ৬১, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানির (বিএটিবিসি) দর পতনে পয়েন্ট এবং ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ারের দর পতনের কারণে দশমিক ২৯ পয়েন্ট হারিয়েছে সূচক।

গতকাল দিনশেষে ডিএসইএক্স সূচক হাজার ৩১৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা এর আগের কার্যদিবসে ছিল হাজার ৩৮৫ পয়েন্ট। এদিন ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ১৫ দশমিক ৩১ পয়েন্ট কমে দিনশেষে হাজার ২০৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। দিনের ব্যবধানে ডিএসইর ব্লু চিপ সূচক ডিএস-৩০ গতকাল প্রায় ৪০ পয়েন্ট কমে হাজার ১৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ৫৭ পয়েন্টে।

গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে মোট ৫৯১ কোটি ৮০ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৪৬৭ কোটি ১০ লাখ টাকা। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৩৯টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ৬৬টির, কমেছে ১৫৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১১৭টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেন চিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ৩৪ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে বিবিধ খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩ শতাংশ দখলে ছিল ওষুধ রসায়ন খাতের। শতাংশ করে দখলে নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং খাদ্য আনুষঙ্গিক খাত। আর লেনদেনের শতাংশ দখলে নিয়েছে টেলিযোগাযোগ খাত।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, বিএটিবিসি, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, রবি আজিয়াটা, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, সামিট পাওয়ার, গ্রামীণফোন লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড।

গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে দরবৃদ্ধির (সমাপনী দরের ভিত্তিতে) তালিকায় শীর্ষে ছিল জিবিবি পাওয়ার, আমান কটন, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ, রবি আজিয়াটা, তাওফিকা ফুডস অ্যান্ড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ, ইসলামিক ফাইন্যান্স, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, রেকিট বেনকিজার, রিলায়েন্স ইন্সুরেন্স রানার অটোমোবাইলস।

অন্যদিকে গতকাল ডিএসইতে দরপতনে শীর্ষে ছিল এনসিসিবি মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ান, বেক্সিমকো লিমিটেড, ন্যাশনাল ইন্সুরেন্স, শাইনপুকুর সিরামিকস, জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস, প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, জিলবাংলা সুগার, ন্যাশনাল হাউজিং, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।

সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স সূচক দিনের ব্যবধানে ১১০ পয়েন্ট কমে হাজার ২৭৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল হাজার ৩৮৯ পয়েন্টে। সিএসইতে গতকাল লেনদেন হওয়া ১৯৫টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৪৫টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ৯৯টি আর অপরিবর্তিত ছিল ৫১টির বাজারদর। এদিন সিএসইতে ২৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৪১ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন