সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় পিছিয়ে বাংলাদেশ

মেহেদী হাসান রাহাত

মালিকানায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়ার রয়েছে। কিন্তু কোম্পানিতে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা নেই। এমন শেয়ারহোল্ডাররাই বিশ্বব্যাপী মাইনরিটি ইনভেস্টর বা সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারী হিসেবে পরিচিত। ধরনের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ায়ও এখনো এদিক থেকে নেপাল, পাকিস্তান শ্রীলংকাকে অতিক্রম করে যেতে পারেনি বাংলাদেশ।

গোটা বিশ্বেই ক্ষুদ্র সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষার বিষয়টি অগ্রাধিকার পেয়ে থাকে। একই সঙ্গে গুরুত্ব পায় তাদের বিনিয়োগের নিরাপত্তাও। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বলছে, সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারীদের অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো নিশ্চিতের ক্ষেত্রে দেশভিত্তিক র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার নেপাল, পাকিস্তান শ্রীলংকা।

এডিবির করপোরেট গভর্ন্যান্স ইন সাউথ এশিয়া: ট্রেন্ডস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস শীর্ষক এক প্রতিবেদনে র্যাংকিং প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের অধ্যাপক টম কার্চমেয়ার ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের আইন অনুষদের অধ্যাপক কারস্টেন গার্নার বার্লে। এডিবির অফিস অব দ্য কমপ্লায়েন্স রিভিউ প্যানেলের প্রজেক্ট লিডার অ্যান্ড অ্যাডভাইজার ইরাম আহসান জানিয়েছেন, সাউথ এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কো-অপারেশন ইন (সার্কল)-এর যৌথ সহযোগিতার ভিত্তিতে এটি প্রণীত হয়েছে।

বাংলাদেশে ক্ষুদ্র সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হওয়ার অনেক উদাহরণ পাওয়া যায়। ২০১৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি ফ্যামিলিটেক্স (বিডি) লিমিটেড ১০ টাকা ফেসভ্যালুতে ৩৪ কোটি টাকার মূলধন উত্তোলন করে। উচ্চসুদের ব্যাংকঋণ পরিশোধের জন্য পুঁজিবাজার থেকে মূলধন উত্তোলন করেছিল কোম্পানিটি। এরপর টানা চার বছর ধরে লোকসানে কোম্পানিটি। গত দুই বছর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশও দেয়নি। কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকরা গোপনে শেয়ার বিক্রি করে কোম্পানি থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে শেয়ার রয়েছে মাত্র শতাংশ। বর্তমানে কোম্পানিটির ১০ টাকার শেয়ারের দাম কমতে কমতে টাকা ৫০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে।

এমন আরেক কোম্পানি এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। ২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় প্রতিষ্ঠানটি। সময় বাজার থেকে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ২০ কোটি টাকার মূলধন উত্তোলন করে কোম্পানিটি। আইপিওর অর্থ চলতি মূলধন ব্যাংকঋণ পরিশোধে ব্যয় করেছে এমারেল্ড অয়েল। বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার কারণে দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মামলায় কোম্পানিটির কয়েকজন পরিচালক পলাতক রয়েছেন। তিন বছর ধরেই উৎপাদন বন্ধ থাকা কোম্পানি থেকে লভ্যাংশও পাচ্ছেন না বিনিয়োগকারীরা। বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম টাকা ৭০ পয়সা।

দক্ষিণ এশিয়ায় সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ নিয়ে এডিবির প্রতিবেদনটি প্রণয়নের ক্ষেত্রে দুই গবেষক অনেক ক্ষেত্রেই বিশ্বব্যাংকের তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করেছেন। প্রতিবেদনের ভাষ্যমতে, বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য নীতিনির্ধারণী মহলের কাছে করপোরেট সুশাসনের লক্ষ্য হলো সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষা। এক্ষেত্রে সুশাসনকে সংজ্ঞায়িত করার জন্য ছয়টি পরিমাপক ব্যবহার করে বিশ্বব্যাংক। এগুলো হলো সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে লেনদেনের তথ্য প্রকাশের বাধ্যবাধকতা, অনুমোদন পর্যালোচনা, সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিকর লেনদেন সংশ্লিষ্ট পরিচালকদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার সক্ষমতা, সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারীদের সহজে মামলা করতে পারা, গুরুত্বপূর্ণ করপোরেট লেনদেনের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের অধিকার, সুশাসন সংরক্ষণের মাধ্যমে পর্ষদের অযাচিত নিয়ন্ত্রণ থেকে শেয়ারহোল্ডারদের সুরক্ষা দেয়া প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং করপোরেট সুশাসনের পরিধি আরো বিস্তৃত করা।

ছয় পরিমাপকের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারী সুরক্ষা সূচক তৈরি করা হয়েছে। এতে দেখা যায় সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর তুলনায় বেশ পিছিয়ে আছে। বিশ্বের ১৯০টি দেশের মধ্যে এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৯তম। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে এক্ষেত্রে পাকিস্তান ২৬তম, শ্রীলংকা ৩৮ নেপাল ৭২তম।

সূচকের উপাদানগুলোর মধ্যে সুশাসন সুরক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান বেশ নাজুক। এক্ষেত্রে ১০-এর মধ্যে বাংলাদেশের স্কোর ৩। বিনিয়োগকারীদের অধিকারের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ ১০-এর মধ্যে পেয়েছে। এক্ষেত্রে নেপাল , পাকিস্তান শ্রীলংকা স্কোর পেয়েছে। করপোরেট স্বচ্ছতার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের স্কোর ৫। এক্ষেত্রে পাকিস্তান শ্রীলংকা সবচেয়ে বেশি স্কোর পেয়েছে।

সূচকে পরিচালকদের দায়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যৌথভাবে পাকিস্তানের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি স্কোর পেয়েছে। আর মামলা করার স্বাচ্ছন্দ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শ্রীলংকা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পেয়েছে। এক্ষেত্রে স্কোর নিয়ে নেপাল দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবার ওপরে। সম্পর্কিত পক্ষের লেনদেনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ, পাকিস্তান নেপালের স্কোর একই৬। শ্রীলংকা এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি স্কোর পেয়েছে।

প্রতিবেদনে সার্কভুক্ত দেশগুলোর করপোরেট সুশাসনসংক্রান্ত কোডের পর্যালোচনামূলক তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশে করপোরেট সুশাসনসংক্রান্ত আইনি নিয়ন্ত্রক কাঠামোর বিষয়ে প্রতিবেদনটিতে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) প্রণীত করপোরেট গভর্ন্যান্স কোড এবং ২০০৪ সালে বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউট প্রণীত কোড অব করপোরেট গভর্ন্যান্স ফর বাংলাদেশের কথা বলা হয়েছে। তবে মূলত বিভিন্ন খাত, ছোট-বড়, স্থানীয় বহুজাতিক মিলিয়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর গুরুত্ব বেশি। তাছাড়া কোম্পানিগুলোয় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ রয়েছে যারা সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারীদের সংজ্ঞাভুক্ত। কারণে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি করপোরেট সুশাসনসংক্রান্ত কোড তৈরি করেছে। যদিও এডিবির প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে আছে।

এর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, আমাদের এখানে কোম্পানিগুলোর মধ্যে এক ধরনের পারিবারিক আধিপত্য বিস্তারের প্রবণতা দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রে তথ্য গোপন করার নজিরও রয়েছে। এসব কারণে কোম্পানির সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয়। আমি বিএসইসির দায়িত্ব নেয়ার পর যেসব কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয় এমন কার্যকলাপে লিপ্ত ছিল তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছি। বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য কমিশন দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। ফলে সামনের বছর সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারী সুরক্ষা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান আরো ভালো হবে বলে আমার বিশ্বাস।

২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি তুং হাই নিটিং অ্যান্ড ডায়িং লিমিটেড ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ৩৫ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করে। সংগৃহীত অর্থের প্রায় ৪৬ শতাংশ ব্যাংকঋণ পরিশোধ, মূলধনি বিনিয়োগ ৩৩ শতাংশ এবং চলতি মূলধন খাতে ১৫ শতাংশ অর্থ ব্যয় করে কোম্পানিটি। ২০১৬-১৭ হিসাব বছর থেকেই কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দিচ্ছে না। কয়েক বছর ধরেই কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ। ডিএসইর পক্ষ থেকে কোম্পানিটির প্রধান কার্যালয় কারখানা পরিদর্শনে গিয়ে বন্ধ পাওয়া যায়। বর্তমানে এর শেয়ারদর টাকা ৯০ পয়সায় নেমে গেছে।

শুধু ফ্যামিলিটেক্স (বিডি) লিমিটেড, এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড বা তুং হাই নিটিং অ্যান্ড ডায়িং লিমিটেড নয়, সুশাসনের অভাবে সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হওয়ার আরো অনেক নজির রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদন বন্ধ থাকা সুশাসন পরিপালন না করা কোম্পানিগুলোর শেয়ার লেনদেনের জন্য ২০০৯ সালে ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) নামে একটি স্বতন্ত্র প্লাটফর্ম তৈরি করে বিএসইসি। বর্তমানে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের ওটিসি মার্কেটে ১১২টি কোম্পানি রয়েছে। কোম্পানিগুলো একসময় পর্যন্ত ভালো অবস্থানে থাকলেও পর্ষদ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা সুশাসনের ঘাটতির কারণে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তারা দুর্বল কোম্পানিতে পরিণত হয়ে শেষ পর্যন্ত ওটিসিতে স্থান করে নিয়েছে। ওটিসি থাকা এসব কোম্পানিতে সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারীদের শত শত কোটি টাকার পুঁজি আটকে রয়েছে। শেয়ার কেনাবেচার সুযোগ থাকলেও কোম্পানিগুলোর আর্থিক দুরবস্থার কারণে এদের শেয়ারের ক্রেতা নেই বললেই চলে। ওটিসিতে থাকা বেশকিছু কোম্পানি রয়েছে যেগুলোর বর্তমানে অস্তিত্ব নেই। স্টক এক্সচেঞ্জের কর্মকর্তারা পরিদর্শনে গিয়ে ওটিসিতে থাকা চিক টেক্সটাইল লিমিটেড, রাসপিট ডাটা ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন লিমিটেড, রাসপিট ইনকরপোরেশন বিডি লিমিটেড, ফার্মাকো ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, এম হোসেন গার্মেন্টস ওয়াশিং অ্যান্ড ডাইং লিমিটেড সালেহ কার্পেট মিলস লিমিটেডের কার্যালয় বন্ধ পেয়েছেন। অবশ্য ওটিসিতে থাকা কোম্পানিগুলোর সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনা করে যেসব কোম্পানির ভালো সম্ভাবনা রয়েছে সেগুলোকে মূল মার্কেটে ফিরিয়ে আনার জন্য সম্প্রতি উদ্যোগ নিয়েছে কমিশন।

বিষয়ে জানতে চাইলে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) ভাইস প্রেসিডেন্ট রিয়াদ মাহমুদ বণিক বার্তাকে বলেন, এডিবির প্রতিবেদনে যে সময়কার তথ্য তুলে ধরা হয়েছে সেটি কমপক্ষে এক বছর আগের। সে সময় বিএসইসির শীর্ষ নেতৃত্বে যারা ছিলেন তাদের গাফিলতির প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারী সুরক্ষা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানের ক্ষেত্রে। আগের কমিশনের সময় এমন অনেক কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে আসার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে যেগুলোর তেমন কোনো পরিচিতি নেই। এমনকি আমরাও অনেক কোম্পানিকে চিনি না। আগের কমিশনের অনুমোদন দেয়া বেশকিছু কোম্পানির কার্যক্রম কিন্তু পরবর্তী সময়ে বন্ধ হয়ে গেছে। কেউ কেউ গোপনে শেয়ার  বিক্রি করে চলে গেছেন। এতে সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অন্যদিকে বিএসইসির বর্তমান নেতৃত্ব দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বেশকিছু কোম্পানির বিদ্যমান পর্ষদ ভেঙে দিয়ে পুনর্গঠন করা হয়েছে, যা এর আগে কখনো দেখা যায়নি। সূচকে সুশাসন সুরক্ষা, করপোরেট সুশাসন এবং বিনিয়োগকারীদের অধিকার যে তিনটি ক্ষেত্রে আমরা ভালো করতে পারিনি সেগুলোকেই কিন্তু বর্তমান কমিশন বিবেচনায় নিয়েছে। তাদের বিগত কয়েক মাসের কার্যক্রমে সেটি প্রতিফলিত হচ্ছে। ফলে সামনে যখন আবার সূচকটি হালনাগাদ করা হবে তখন বাংলাদেশের অবস্থান অনেক ভালো থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।

মূল বিষয় হচ্ছে সুশাসনএমন মত প্রকাশ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্ট এবং বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান . এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, করপোরেট গভর্ন্যান্সের একটি মৌলিক নীতি হলো সব স্টেকহোল্ডার, বিশেষ করে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। আমাদের করপোরেট জগতের পর্ষদগুলোতে উদ্যোক্তাদের দৌরাত্ম্য থাকে। বার্ষিক সাধারণ সভাগুলোয় (এজিএম) মাইনরিটি শেয়ারহোল্ডাররা তাদের সুবিধা-অসুবিধা বলার তেমন একটা সুযোগ পান না। এই বিষয়গুলো অবশ্যই দেখা দরকার। প্রয়োজনে এজিএমে সিসিটিভি স্থাপন করে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কীভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে, তা নজরদারির ব্যবস্থাও করা যেতে পারে। সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন অভিযোগ বক্স চালু করতে পারে। অনেক দেশে হুইসেলব্লোয়ার নিয়োজিত থাকে, আমাদের এখানেও এই চেষ্টা করা যেতে পারে। আসলে মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন আর মানসিকতা নির্ভর করে পুরস্কার শাস্তির ব্যবস্থার ওপর। ওই ব্যবস্থা নিশ্চিত করে মানসিকতার পরিবর্তন না হলে যেন আইনানুগ ব্যবস্থার প্রয়োগ হয়, সেদিকেও নজর দিতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন