কভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে সরকার। এবারের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় মোট ১ কোটি ১৩ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের প্রাক্কলন করা হয়েছে। ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত পাঁচ অর্থবছরে দেশে ও বিদেশে এ কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার।
গতকাল শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা দলিল অবহিতকরণ সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
সভা থেকে জানা যায়, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা চলাকালে মোট ১ কোটি ১৩ লাখ ৩০ হাজার কর্মসংস্থানের প্রাক্কলন করা হয়েছে। এর মধ্যে দেশে কর্মসংস্থান হবে ৮৮ লাখ মানুষের আর দেশের বাইরে কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে ৩২ লাখ। এ সময়ের মধ্যে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হবে ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ। তবে গতবারের চেয়ে এবার কর্মসংস্থান কম ধরা হয়েছে ১৫ লাখ ৭০ হাজার। কভিড মহামারীর কারণে চলতি বছর এবং আগামী বছর দেশে ও বিদেশে কর্মসংস্থান কম হবে।
এর আগে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ কোটি ২৯ লাখ। গত জুনে শেষ হওয়া সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০১৫-২০২০) শেষে দেখা গেছে, দেশে ও বিদেশে ৯৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান করতে পেরেছে সরকার। প্রতিশ্রুতির চেয়ে ৩৪ লাখ কর্মসংস্থান কম হয়েছে।
কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা কম নির্ধারণের বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম বলেন, অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় মেয়াদে অভ্যন্তরীণ কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। যার প্রধান কারণ হলো করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক ধাক্কা এবং শ্রমনির্ভর অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে উচ্চপ্রযুক্তির স্বয়ংক্রিয় ব্যবহার। যে কারণে আগামীতে কর্মসংস্থান হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন বলছে, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এমন এক সময়ে বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে, যে সময়ে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে যাওয়ার কথা রয়েছে। আবার করোনা মহামারীর মধ্যেই এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে সরকারকে। একই সময়ে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি বাস্তবায়নেরও চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
করোনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতি বলতে গেলে এখন স্থবির। বাংলাদেশেও রাজস্ব আদায়, রফতানিসহ অর্থনীতির সূচকগুলো এলোমেলো।
জিইডির তথ্য বলছে, দেশে এখন দারিদ্র্যের হার ২০ দশমিক ৫ শতাংশ। সেটি ২০২৫ সালের মধ্যে ১৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। এছাড়া জিডিপির প্রবৃদ্ধি ২০২৫ সালের মধ্যে ৮ দশমিক ৫১ শতাংশে উন্নীত করার কথা বলা হয়েছে নতুন পাঁচসালা পরিকল্পনায়।