প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরছে বৈশ্বিক ইস্পাত উৎপাদন

বণিক বার্তা ডেস্ক

বিদায়ী বছরে বড় ধরনের মন্দার মুখে পড়েছে বৈশ্বিক ইস্পাত উৎপাদন। মূলত নভেল করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারী এর জের ধরে দেশে দেশে চলা লকডাউন ইস্পাত কারখানাগুলোয় শ্রমিক সংকট তৈরি করেছিল। বছরের শেষ ভাগে এসে আন্তর্জাতিক বাজারে আকাশ ছোঁয় ইস্পাত উৎপাদনের অন্যতম কাঁচামাল আকরিক লোহার দাম। দুই কারণে ২০২০ সাল শেষে বৈশ্বিক ইস্পাত উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় কমে আসে। তবে এমন মন্দা ভাব সাময়িক। চলতি বছর নাগাদ ফের প্রবৃদ্ধিতে ফিরতে পারে বৈশ্বিক ইস্পাত উৎপাদন খাত। শুধু তা- নয়, ২০২৫ সাল নাগাদ বিশ্বজুড়ে শিল্প ধাতুটির উৎপাদনে বার্ষিক সর্বোচ্চ ৩২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির দেখা মিলতে পারে। ক্রেডিট রেটিং প্রতিষ্ঠান ফিচ সলিউশনস ইনকরপোরেশনের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এমন সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছে। খবর মাইনিংডটকম মার্কেট ওয়াচ।

ফিচ সলিউশনসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মহামারীর কারণে গত বছর বৈশ্বিক ইস্পাত উৎপাদনে দশমিক শতাংশ মন্দা ভাব বজায় ছিল। তবে মন্দা ভাব সাময়িক। করোনাকালীন ধাক্কা সামলে চলতি বছরই ঘুরে দাঁড়াতে পারে শিল্প ধাতুটির বৈশ্বিক উৎপাদন। চলতি বছর শেষে বৈশ্বিক ইস্পাত উৎপাদনে দশমিক শতাংশ প্রবৃদ্ধির দেখা মিলতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সময় বিশ্বের শীর্ষ দুই ইস্পাত উৎপাদনকারী দেশ চীন ভারতে শিল্প ধাতুটির বার্ষিক উৎপাদনে যথাক্রমে দশমিক দশমিক শতাংশ প্রবৃদ্ধির দেখা পাওয়ার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে।

শুধু চলতি বছর নয়, আগামী দিনগুলোয় বৈশ্বিক ইস্পাত উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি দেখা যেতে পারে। ধারাবাহিকতায় ২০২৫ সাল নাগাদ বিশ্বজুড়ে শিল্প ধাতুটির সম্মিলিত উৎপাদন ২০২০ সালের তুলনায় ৩৭ কোটি ৮০ লাখ টন বাড়তে পারে। উৎপাদন বৃদ্ধির পরিমাণ গত বছর ভারত রাশিয়ায় উৎপাদিত ইস্পাতের সম্মিলিত পরিমাণের তুলনায় বেশি।

ফিচ সলিউশনস জানিয়েছে, ২০২১-২৫ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে ইস্পাত উৎপাদনের হার বছরে সর্বোচ্চ ৩২ শতাংশ হারে বাড়তে পারে। তবে পরবর্তী পাঁচ বছরে প্রবৃদ্ধির হার কমে আসতে পারে। ২০২৬-৩০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে ইস্পাত উৎপাদনে প্রবৃদ্ধির হার বছরে দশমিক শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বৈশ্বিক ইস্পাত উৎপাদন খাতে গত বছরটা খুব একটা ভালো কাটেনি। করোনা মহামারীর জের ধরে উৎপাদন হ্রাসের ধাক্কা সামলাতে হয়েছে দ্রুত বিকাশমান খাতকে। ওয়ার্ল্ড স্টিল অ্যাসোসিয়েশনের (ডব্লিউএসএ) তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে সব মিলিয়ে ১৮৬ কোটি ৪০ লাখ টন অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন হয়েছে। এক বছরের ব্যবধানে শিল্প ধাতুটির উৎপাদন কমেছে দশমিক শতাংশ। ২০১৯ সালে বিশ্বজুড়ে ১৮৮ কোটি ১০ লাখ টন ইস্পাত উৎপাদন হয়েছিল, যা আগের বছরের তুলনায় দশমিক শতাংশ বেশি। চলতি শতকে এটাই ছিল বৈশ্বিক ইস্পাত উৎপাদনের সর্বোচ্চ রেকর্ড। সেই হিসাবে আগের বছরের তুলনায় ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে শিল্প ধাতুটির উৎপাদন কমেছে কোটি ৭০ লাখ টন।

গত বছর করোনা মহামারীর ধাক্কায় জাপান, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশির ভাগ দেশে ইস্পাত উৎপাদন কমে এলেও ব্যতিক্রম ছিল চীন। চীনের ইস্পাত উৎপাদন খাত শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পেরেছে বলে জানিয়েছে ডব্লিউএসএ। গত বছর চীনে সব মিলিয়ে ১০৫ কোটি ৩০ লাখ টন ইস্পাত উৎপাদন হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় দশমিক শতাংশ বেশি। এর মধ্য দিয়ে ২০২০ সালে বৈশ্বিক ইস্পাত উৎপাদনের ৫৬ দশমিক শতাংশ নিয়ন্ত্রণে রেখেছে চীন। এর আগের বছর বৈশ্বিক ইস্পাত উৎপাদনের ৫৩ দশমিক শতাংশ এককভাবে জোগান দিয়েছিল চীন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন