আন্তর্জাতিক বাজারে দুগ্ধপণ্যের দামে ধারাবাহিক চাঙ্গা ভাব বজায় রয়েছে। নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত গ্লোবাল ডেইরি ট্রেড (জিডিটি) অকশনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত বছরের নভেম্বরের পর থেকে দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক কমেনি। টানা সাত নিলাম ধরে জিডিটি প্রাইস অকশন ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। এ ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ নিলামে দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক আগের নিলামের তুলনায় ৩ শতাংশ বেড়েছে। এ নিলামে দুগ্ধপণ্যের গড় দাম বেড়ে টনপ্রতি ৩ হাজার ৭৫০ ডলারের কাছাকাছি উন্নীত হয়েছে। খবর রয়টার্স ও নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড।
জিডিটি প্রাইস ইনডেক্স বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, করোনা মহামারীর কারণে গত বছরের বেশির ভাগ সময় উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছে দুগ্ধপণ্যের বাজার। তবে সর্বশেষ ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নিলামে দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচকে মন্দা ভাব দেখা গেছে। ওই নিলামে দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক আগের নিলামের তুলনায় ২ শতাংশ কমেছিল। এরপর আর দুগ্ধপণ্যের মূল্যসূচকে মন্দা ভাব দেখা যায়নি।
গত ১৭ নভেম্বরের নিলামে জিডিটি প্রাইস ইনডেক্স আগের নিলামের তুলনায় ১ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে যায়। এর পরের নিলামে (১ ডিসেম্বর) দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক আরো ৪ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে যায়। ১৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বছরের শেষ নিলামে দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক আগের নিলামের তুলনায় বাড়ে ১ দশমিক ৩ শতাংশ।
গত ৫ জানুয়ারি চলতি বছরের প্রথম নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। এ নিলামে দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক আগের নিলামের তুলনায় ৩ দশমিক ৯ শতাংশ বাড়ে। ১৯ জানুয়ারির নিলামে এ সূচকমান আরো ৪ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়ে। ২ ফেব্রুয়ারির নিলামে দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক বেড়েছিল আগের নিলামের তুলনায় ১ দশমিক ৮ শতাংশ।
টানা সাত নিলাম ধরে ঊর্ধ্বমুখী থাকার ধারাবাহিকতায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সর্বশেষ জিডিটি নিলামে দুগ্ধপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক আগের নিলামের তুলনায় ৩ শতাংশ বেড়েছে। এ নিলামে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার ৬৮৫ টন দুগ্ধপণ্য সরবরাহ হয়েছিল। এর মধ্যে নিলামে বিক্রি হয়েছে ২৬ হাজার ৮৮৩ টন দুগ্ধপণ্য। এ নিলামে প্রতি টন দুগ্ধপণ্যের গড় দাম দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৭৪৬ ডলার।
সর্বশেষ নিলামে মাখন, পনির, ননিযুক্ত ও ননিবিহীন দুই ধরনের গুঁড়ো দুধের দাম আগের তুলনায় বেড়েছে। জিডিটি প্রাইস ইনডেক্স অনুযায়ী, এ সময় প্রতি টন মাখনের গড় দাম দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১২৯ ডলার, যা আগের নিলামের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি। একইভাবে সর্বশেষ নিলামে পনিরের দাম আগের নিলামের তুলনায় ২ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। এ নিলামে প্রতি টন পনিরের গড় দাম দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২৬৮ ডলারে।
সর্বশেষ জিডিটি নিলামে ননিযুক্ত গুঁড়ো দুধের দাম আগের নিলামের তুলনায় ৪ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। এ সময় দুগ্ধপণ্যটির গড় দাম দাঁড়িয়েছে টনপ্রতি ৩ হাজার ৬১৫ ডলারে। একই সময়ে প্রতি টন ননিবিহীন গুঁড়ো দুধের গড় দাম দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২০৭ ডলারে, যা আগের নিলামের তুলনায় দশমিক ৩ শতাংশ বেশি।
জিডিটি প্রাইস ইনডেক্স অনুযায়ী, সর্বশেষ আন্তর্জাতিক নিলামে প্রতি টন ল্যাকটোজের গড় দাম দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৩২ ডলারে, যা আগের নিলামের তুলনায় দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। আগামী ২ মার্চ পরবর্তী জিডিটি অকশন অনুষ্ঠিত হবে।