পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার চাপ বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পরীক্ষার্থীদের জন্য মার্চ থেকে হল খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়ে সাড়া না পেয়ে সম্প্রতি তালা ভেঙে হলে ঢুকেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। হল খুলে দেয়ার দাবিতে শিক্ষার্থী আন্দোলন চলছে অন্তত আরো পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সব মিলিয়ে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়ার চাপ বাড়ছে কর্তৃপক্ষের ওপর।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে প্রায় এক বছর ধরে বন্ধ দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। সশরীরের একাডেমিক কার্যক্রম না চললেও করোনার মধ্যেই অনলাইনে পাঠদান চলছে প্রায় সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই। গ্রামাঞ্চলে ইন্টারনেট সেবার নিম্নমানের কারণে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে বাসা ভাড়া করে থাকছেন। এতে শিক্ষার্থীদের ওপর এক ধরনের আর্থিক চাপ বাড়ছে। এসব কারণে  কয়েক মাস ধরেই শিক্ষার্থীরা হল খুলে দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া না পেয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামছেন।

আবাসিক হল খুলে দেয়ার আগ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ থেকে সব আবাসিক হলের সামনে অবস্থান নেয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন তারা। গতকাল (রোববার) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক . শেখ আবদুস সালামের সঙ্গে উদ্ভূত সমস্য নিয়ে আলোচনা শেষে ঘোষণা দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলেন, হল খোলার আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামীকাল (সোমবার) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করা হবে। মিছিল শেষে প্রতিটি হলের সামনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান করবেন। যতদিন পর্যন্ত হল খোলা না হবে ততদিন পর্যন্ত আমরা আমাদের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাব।

ক্যাম্পাস এবং আবাসিক হল খুলে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরাও। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। মিছিলে শিক্ষার্থীরা ভ্যাকসিন আনো ভ্যাকসিন দাও, ক্যাম্পাস খুলে দাও, এক দফা এক দাবি, ক্যাম্পাস খোলা চাই স্লোগানে ক্যাম্পাস খোলার দাবি জানান। বিষয়ে ইসলামের ইতিহাস সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদ সাকি বলেন, বরিশাল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার আগেই শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এবং হলগুলো খুলে দেয়া হোক। অনতিবিলম্বে আমাদের দাবি যদি মানা না হয়, তবে আমরা আমাদের নিজেদের নিরাপত্তার দাবি নিয়ে লাগাতার আন্দোলন শুরু করব।

সোমবারের মধ্যে আবাসিক হল খুলে দেয়ার জন্য প্রশাসনকে আলটিমেটাম দিয়েছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গত শনিবার আলটিমেটাম দেন তারা। ওইদিন হল খোলার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক অবরোধ করে উপাচার্যের বাসভবনের প্রধান ফটকে তালা দেন। পরে রাত ১০টার দিকে তালা খুলে দিয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হল খোলার দাবি জানিয়ে আলটিমেটাম দেন তারা। আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, মার্চ থেকে সব বর্ষের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এজন্য অনেক শিক্ষার্থী এরই মধ্যে সিলেটে এসেছেন। কিন্তু হল খোলা না থাকায় তাদের নানা দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে এখনই হল খুলে দেয়ার দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি।

একই দিনে আবাসিক হল খুলে দেয়ার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) একদল শিক্ষার্থী। শনিবার রাউজান উপজেলার চুয়েট ক্যাম্পাসে শহীদ তারেক হুদা হলের সামনে ২০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালন করছেন। আজ থেকে চুয়েটের ১৫তম ব্যাচের চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হবে। প্রায় ৭০০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবেন। এর মধ্যে যারা চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন মেস কিংবা বাসায় থাকতেন, তারা পরীক্ষা উপলক্ষে শহরের মেস বা বাসায় উঠলেও বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। একজন শিক্ষার্থী জানান, তিনি বলেন, সোমবার থেকে আমাদের চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনো হল খুলে দেয়নি। ক্যাম্পাস গ্রাম এলাকায় হওয়ায় থাকার জন্য আশপাশে ভালো জায়গাও নেই। আমরা এখন কোথায় যাব

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন