প্রায় সব বীমা কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

গতকাল দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে সূচকের পতনের পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। বেশির ভাগ খাতের শেয়ারদর ছিল নিম্নমুখী। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিল বীমা খাত। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত অধিকাংশ জীবন বীমা সাধারণ বীমা কোম্পানির শেয়ারদরই বেড়েছে। এর মধ্যে গতকাল নয়টি বীমা কোম্পানির শেয়ারের বিক্রেতা ছিল না। পুঁজিবাজারের মোট লেনদেনের প্রায় ১০ শতাংশ ছিল বীমা খাতের দখলে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, আগামী মার্চ জাতীয় বীমা দিবস উদযাপিত হবে। সরকার খাতটির উন্নয়নে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। দেশে বীমার পরিমাণ আরো বাড়ানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নীতিসহায়তা দেয়া হচ্ছে। বীমা দিবসে সরকারের পক্ষ থেকে খাতটির উন্নয়নে নতুন কোনো ঘোষণা আসতে পারে বলে মনে করছেন বিনিয়োগকারীরা। আর কারণেই মূলত খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে। যার প্রতিফলন দেখা গেছে বীমা কোম্পানির শেয়ারদরে।

গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে জনতা ইন্স্যুরেন্সের। কোম্পানিটির শেয়ারদর আগের দিনের চেয়ে ১০ শতাংশ বেড়ে সর্বশেষ ৩১ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর আগের দিনের চেয়ে দশমিক ৯৮ শতাংশ বেড়ে সর্বশেষ ৬০ টাকা ৬০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। এছাড়া গতকাল দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় থাকা বীমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স, অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, নিটোল ইন্স্যুরেন্স, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স।

এদিকে গতকাল ডিএসইতে ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স, রূপালী ইন্স্যুরেন্স, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কেনার জন্য ক্রেতা থাকলেও কেউ এই নয়টি কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করতে চাননি।

ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে দশমিক ৪৩ শতাংশ। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএসসিএক্স কমেছে দশমিক ৪৪ শতাংশ।

হাজার ৫২৭ পয়েন্ট নিয়ে গতকালের লেনদেন শুরু করেছিল ডিএসইএক্স। এদিন লেনদেন শেষে তা হাজার ৫০৩ পয়েন্টে নেমে যায়। অর্থাৎ গতকাল সূচকটি কমেছে ২৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৪৩ শতাংশ। ডিএসইর ব্লু চিপ সূচক ডিএস-৩০ দিনের ব্যবধানে প্রায় ২৬ পয়েন্ট বা দশমিক শতাংশ কমে গতকাল লেনদেন শেষে হাজার ১২০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের দিন যা ছিল হাজার ১৪৬ পয়েন্ট। এক্সচেঞ্জটির শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল প্রায় পয়েন্ট বা দশমিক ১৩ শতাংশ কমে দিনশেষে হাজার ২৫১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল হাজার ২৫৩ পয়েন্ট।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৪৬টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিনশেষে দর বেড়েছে ১০১টির, কমেছে ১৪৩টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১০২টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল ডিএসইতে মোট লেনদেনের ৩২ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে বিবিধ খাত। ১৭ শতাংশ দখলে নিয়ে এরপর রয়েছে ওষুধ রসায়ন খাত।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনে শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি (বেক্সিমকো) লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি বাংলাদেশ (বিএটিবিসি) লিমিটেড, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেড, রবি আজিয়াটা লিমিটেড, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, সামিট পাওয়ার লিমিটেড, বিডি ফাইন্যান্স রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।

দেশের আরেক শেয়ারবাজার সিএসইতে গতকাল প্রধান সূচক সিএসসিএক্স দিনের ব্যবধানে প্রায় ৪১ পয়েন্ট কমে হাজার ৬১৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে, আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ৬৫৭ পয়েন্ট। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২৪০টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৭৬টির, কমেছে ১০৭টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৫৭টির বাজারদর।

গতকাল দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জেই টাকার অংকে লেনদেন কমেছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৮৬৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৯৯৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। সিএসইতে গতকাল ২৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৩৮ কোটি লাখ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন