মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতাদের আটক করে জরুরি অবস্থা জারির নিন্দা জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন বা গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা পরিবর্তন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার যেকোন প্রচেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাখ্যান করছে। এই পদক্ষেপ থেকে সড়ে না এলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মিয়ানমারের পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন মিয়ানমারের শীর্ষ নেতাদের মুক্তি দেওয়ার জন্য সে দেশের সামরিক বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়াও। এই গ্রেফতারিতে ‘গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যারিস পেইন বলেছেন, ‘আমরা সেনাবাহিনীকে আইনের শাসন মেনে চলতে আহ্বান জানাই। যেসব রাজনৈতিক নেতাকে বেআইনিভাবে আটক করা হয়েছে, আমরা তাদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করছি।’
আজ সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা জারি করে দেশটির সেনাবাহিনী। এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দেশের ক্ষমতা কমান্ডার-ইন-চিফ মিন অং হ্লেইংয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অর্থাৎ মিয়ানমারের ক্ষমতা এখন সেনাবাহিনীর দখলে। এছাড়া আগামী এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
অবশ্য এমন কিছু ঘটতে পারে তা আগে থেকেই আশঙ্কা করা হচ্ছিল। গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন এনএলডির জয়ের ইঙ্গিতও আগে থেকেই পাওয়া যাচ্ছিল। এ ধারণার উৎস ছিল নির্বাচনের আগে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন জরিপের ফল। ভোট গণনার পর দেখা গেল, এসব জরিপের সঙ্গে নির্বাচনের ফলাফলের খুব একটা হেরফের হয়নি। পার্লামেন্ট উচ্চ ও নিম্ন- উভয় কক্ষেই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে এনএলডি।
তবে এ ফলাফল মেনে নেয়নি দেশটির সামরিক বাহিনী তাতমাদো। মেনে নেয়নি বিরোধী দল ও বর্মি রাজনীতিতে তাতমাদোর প্রক্সি হিসেবে পরিচিত ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টিও (ইউএসডিপি)। ফল ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচনে ব্যাপক মাত্রায় কারচুপির অভিযোগ তোলে তাতমাদো ও ইউএসডিপি।
নির্বাচনের পর থেকেই বেসামরিক সরকার ও প্রভাবশালী সামরিক বাহিনীর মধ্যে এ নিয়ে দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনার পর এমন ঘটনা ঘটল।