চট্টগ্রাম সিটিতে ভোট আজ সংঘাতের শঙ্কা

সুজিত সাহা, চট্টগ্রাম ব্যুরো

করোনার কারণে ১০ মাস স্থগিত থাকার পর আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচন। নির্বাচনে মেয়র পদের চেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়টি। কাউন্সিলর পদে দলীয় সমর্থিত প্রার্থী বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে সংঘাতের শঙ্কা নিয়ে ভোটগ্রহণ হচ্ছে আজ।

চসিক নির্বাচনে ৪১টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে নিজ দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরাই। অন্তত ১২টি ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলররা দলের মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় বেশ বিপাকে আছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। কেন্দ্রীয় নেতারা দফায় দফায় চেষ্টা করেও বিদ্রোহীদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারে রাজি করাতে ব্যর্থ হয়েছেন। বেশির ভাগ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ঘের ঘটনাও ঘটেছে বেশ কয়েকবার।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন জানান, নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি বারবার। কিন্তু তারা তাদের সিদ্ধান্তে অটল থেকেছেন। দলীয় মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের পক্ষে কাজ না করে তারা দলের নিয়ম ভঙ্গ করেছেন। বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীদের কারণে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের কোনো ক্ষতি হলে তার বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। নির্বাচনে প্রচারণায় আওয়ামী লীগের গণজোয়ার দেখা গেছে। আশা করি ভালো ফলাফল আমরা পাব।

এদিকে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা মনে করেন, আওয়ামী লীগের মনোনীত এবং বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীদের কারণে চসিক নির্বাচনে ভোটের মাঠে বিশেষ সুবিধা পেতেও পারে বিএনপি, যার প্রভাব পড়বে ফলাফলে। যদি এমনটা হয় তাহলে দায় নিতে হবে বিদ্রোহী প্রার্থীদের।

কাউন্সিলর পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের সাবেক কাউন্সিলরদের মধ্যে যারা নির্বাচন করছেন, তারা হলেন নং দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডে তৌফিক আহমেদ চৌধুরী, নং জালালাবাদ ওয়ার্ডের সাহেদ ইকবাল বাবু, নং উত্তর পাহাড়তলীতে জহুরুল আলম জসীম, ১১ নং দক্ষিণ কাট্টলীতে মোরশেদ আক্তার চৌধুরী, ১২ নং সরাইপাড়াতে সাবের আহমেদ, ১৪ নং লালখান বাজারে এফ কবির মানিক, ২৫ নং রামপুরা ওয়ার্ডে এসএম এরশাদ উল্লাহ, ২৭ নং দক্ষিণ আগ্রাবাদে এইচএম সোহেল, ২৮ নং পাঠানটুলীতে আব্দুল কাদের, ৩৩ নং ফিরিঙ্গীবাজারে হাসান মুরাদ বিপ্লব এবং ৩০ নং ওয়ার্ডের মাজাহারুল ইসলাম চৌধুরী। তারা সবাই চসিকের সাবেক মেয়র নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এদিকে আওয়ামী লীগ ছাড়াও ৩৫টি ওয়ার্ডে অর্ধশতাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

সম্প্রতি এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনেও চসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ১২ জন বিদ্রোহী কাউন্সিলর নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়। বিদ্রোহীদের অনড় অবস্থানের কারণে ভোটের আগে পরে সংঘর্ষ এবং গোলযোগের আশঙ্কা রয়েছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এদিকে বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরে যেতে সরকারদলীয় সন্ত্রাসীরা বারবার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতারা। এমনকি প্রশাসনের সহায়তা না পাওয়া, ১৯ জানুয়ারি থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে থানায় মামলা দেয়া এবং গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে দাবি করা হয়।

বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন বণিক বার্তাকে জানান, নির্বাচনী প্রচারণায় প্রশাসনের কোনো সহায়তা আমরা পাইনি। আমাদের দলে বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। আমরা একতাবদ্ধভাবে মাঠে ছিলাম। কিন্তু ১৯ জানুয়ারি থেকে বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীদের নামে মামলা দেয়া হচ্ছে। গ্রেফতার করা হয়েছে বিএনপির অনেক কর্মীকে। আমরা ইসিকে অভিযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো অভিযোগের সঠিক সুরাহা হয়নি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন