জাহাজ রফতানি আয় ৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০২৫ সালের মধ্যে জাহাজ রফতানি আয় বছরে বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে বাংলা ইংরেজি ভাষায় জাহাজ নির্মাণ শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা-২০২১-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল জাতীয় সংসদে মন্ত্রিসভা কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয়।

চার বছরের মধ্যে জাহাজ নির্মাণ খাতের কর্মী সংখ্যা ৩০ হাজার থেকে বাড়িয়ে এক লাখ করারও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে তথ্য জানান।

তিনি বলেন, জাহাজ নির্মাণ খাতের উৎপাদন বৃদ্ধি, শিল্পসংশ্লিষ্ট নানা ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পের বিকাশ, অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আমদানি নির্ভরতা হ্রাস, রফতানি আয় বৃদ্ধিসহ জাহাজ নির্মাণ শিল্পের টেকসই বিকাশ ত্বরান্বিত করার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে একটি সময়োপযোগী কর্মপরিকল্পনাসহ জাহাজ নির্মাণ শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।

নীতিমালার মূল লক্ষ্য তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহনের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় জাহাজ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন, বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্পকে বিশ্ব জাহাজ নির্মাণ শিল্পের উপযুক্ত অংশীদার হিসেবে গড়ে তোলাই হবে নীতিমালার লক্ষ্য। এছাড়া অধিক বিনিয়োগ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২০২৫ সালের মধ্যে জাহাজ রফতানি খাতের অবদান বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা হবে। এখন জাহাজ রফতানি করে আয় হয় বিলিয়ন ডলার।

নীতিমালা অনুযায়ী অধিক কর্মসংস্থানের মাধ্যমে জাহাজ শিল্পে নিয়োজিত বিদ্যমান ৩০ হাজার কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি করে ২০২৫ সালের মধ্যে এক লাখে উন্নীত করা হবে জানিয়ে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সরকারি ব্যক্তি উদ্যোগে সুষ্ঠু সমন্বয়ের মাধ্যমে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করাও নীতিমালার উদ্দেশ্য।

তিনি আরো বলেন, জাহাজ নির্মাণে যারা জড়িত থাকবে তাদের কীভাবে ঋণসহায়তা দেয়া যায়, ট্যাক্স ভ্যাটের ক্ষেত্রে তাদের কীভাবে একটু সুবিধা দেয়া যায়এগুলো নীতিমালার মধ্যে আছে। এটা (জাহাজ নির্মাণ) আমাদের জন্য অত্যন্ত ভালো একটি শিল্প। এর মাধ্যমে আমরা নিজেদের জন্য জাহাজ তৈরি করতে পারব। এতে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।

এছাড়া ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সরকারি কর্মচারীদের অবসর সুবিধাদি বৃদ্ধি, পেনশন ব্যবস্থার সংস্কার এবং -সংক্রান্ত অটোমেশন কার্যক্রম সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি জানান, নিবন্ধন ছাড়া ট্যুর অপারেটর পরিচালনাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি ছয় মাসের জেল বা লাখ টাকা বা উভয় দণ্ডের বিধান রেখে বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটর ট্যুর গাইড (নিবন্ধন পরিচালনা) আইন, ২০২১-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প বিকাশের লক্ষ্যে সুপরিকল্পিতভাবে ট্যুর কার্যক্রম পরিচালনায় ট্যুর অপারেটর গাইড আইনের আওতায় পর্যটকদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য আইনের খসড়া প্রণয়ন করা হয়। ট্যুর অপারেটর কীভাবে পরিচালনা করা হবে, দেশী-বিদেশী ট্যুর অপারেটরদের কীভাবে অনুমোদন দেয়া হবে, কীভাবে নিবন্ধন দেয়া হবে, আইনে এসব উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়া কল-কারখানায় বয়লার দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে বয়লার আইন, ২০২০-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বয়লার থেকে নিবন্ধন নম্বর অপসারণ, পরিবর্তন, বিকৃত বা অদৃশ্যমান করে অন্য বয়লার ব্যবহার করলে জেল-জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে প্রায় ১০ মাস পর মন্ত্রিসভা বৈঠকে সশরীরে অংশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন