সংসদে অর্থমন্ত্রী

দেশে ঋণখেলাপি তিন লাখ ৩৫ হাজার জন

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত দেশের ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণগ্রহীতার সংখ্যা লাখ ৩৪ হাজার ৯৮২ জন ছিল বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল। গতকাল জাতীয় সংসদে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তরে তথ্য জানান তিনি।

সরকারদলীয় সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিলের প্রশ্নের জবাবে খেলাপি ঋণ আদায়ে নেয়া বেশকিছু পদক্ষেপের কথাও সংসদে তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী। তিনি জানান, ঋণ আদায় ব্যাংকগুলোর নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ। ঋণ আদায় বৃদ্ধির লক্ষ্যে ঋণ পরিশোধে উৎসাহিত করতে একটি সার্কুলারের মাধ্যমে পরিশোধিত সুদের ওপর ভালো ঋণগ্রহীতাদের রিবেট প্রদানের জন্য ব্যাংককে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত খেলাপি গ্রাহকের কাছ থেকে ঋণ আদায়ে সহজ শর্তে পুনঃতফসিল এবং এককালীন এক্সিটের সুযোগ দেয়া হয়েছে। এতে খেলাপি গ্রাহকদের কাছ থেকে ঋণ আদায় বাড়বে।

অর্থমন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী, শতকোটি টাকার খেলাপি গ্রাহকদের কাছ থেকে ঋণ আদায়ের জন্য তদারকি বাড়াতে ব্যাংককে মনিটরিং সেল গঠনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মনিটরিং সেলগুলো নিয়মিতভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকে ঋণ আদায়সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করছে। এছাড়া ব্যাংকগুলো তিন মাস অন্তর তাদের ঋণ আদায় পরিস্থিতি বাংলাদেশ ব্যাংককে রিপোর্ট করছে।

সেই প্রতিবেদনের আলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ আদায়ে পিছিয়ে পড়া ব্যাংকগুলোকে ঋণ আদায় বিভাগকে শক্তিশালী করা এবং ঋণ আদায়ে দায়েরকৃত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে অভিজ্ঞ আইনজীবী নিয়োগসহ বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতি ব্যবহার জোরদারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আইনগুলোকে আরো বেশি কার্যকর করতে ব্যাংক কোম্পনি আইন, ১৯৯১-এর খসড়া বিল এবং অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩ দেউলিয়াবিষয়ক আইন, ১৯৯৭-এর খসড়া সংকলন অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

গণফোরামের মোকাব্বির খানের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণ কমাতে ঋণ শ্রেণীকরণের নীতিমালা সহজ করেছে। মেয়াদি ঋণের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে গত বছরের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদ্যমান শ্রেণীমানের চেয়ে নিম্নতর মানে অবনমন করা যাবে না বলে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারীর প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত আদায় হয়েছে লাখ হাজার ৪৭১ কোটি ৭১ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অর্জন ৩২ দশমিক ৮৭ শতাংশ।

মামুনুর রশীদ কিরণের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের টিকা কেনার জন্য পর্যন্ত হাজার ৪৫৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

একেএম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দেশ থেকে অবমূল্যায়ন বা অতিমূল্যায়নের মাধ্যমে অর্থ পাচারের কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এটি খতিয়ে দেখছে। যেসব ক্ষেত্রে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে, সেসব ক্ষেত্রে আইনানুগ ব্যবস্থা চলমান রয়েছে। অর্থ পাচার বন্ধে সরকারের নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এসব পদক্ষেপের ফলে বৈদেশিক মুদ্রা বা অর্থ পাচার অনেকাংশে কমে যাবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন