চিপ সরবরাহকারীদের সঙ্গে অনারের অংশীদারিত্ব

বণিক বার্তা ডেস্ক

চীনভিত্তিক সাশ্রয়ী স্মার্টফোন নির্মাতা অনার ইন্টেল কোয়ালকমের মতো প্রধান চিপ সরবরাহকারীদের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করেছে। মার্কিন বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে গত বছর অনার স্মার্টফোন বিভাগ বিক্রি করে দেয় হুয়াওয়ে। এরপর থেকে তৃতীয় একটি কনসোর্টিয়ামের আওতায় ব্যবসা জোরদারে কাজ করছে অনার। এরই অংশ হিসেবে প্রধান চিপ সরবরাহকারীদের সঙ্গে অংশীদারিত্ব সম্পন্ন করেছে প্রতিষ্ঠানটি, যা সাশ্রয়ী ডিভাইস বাজারে অনার ব্র্যান্ডের দৃঢ় অবস্থান ধরে রাখতে সহায়তা করবে। খবর রয়টার্স।

২০১৩ সালে হুয়াওয়ের সাশ্রয়ী সাব-ব্র্যান্ড হিসেবে অনার ব্র্যান্ডের যাত্রা হয়। তবে অনার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে পরিচালিত হয়ে এসেছে। বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে শাওমি, অপো ভিভোর মতো ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেছে অনার। হুয়াওয়ে অনার ব্র্যান্ডের আওতায় দক্ষিণ এশিয়া ইউরোপসহ আরো কিছু বাজারে তুলনামূলক সাশ্রয়ী ফোন সরবরাহ করে এসেছে।

গত বছর নভেম্বরে হুয়াওয়ে নিজেদের অনার ফোন ব্যবসা বিভাগ বিক্রি করে দেয়। বিভাগটি কিনেছে চীনের হ্যান্ডসেট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল চায়নার নেতৃত্বাধীন ৪০টি কোম্পানির একটি কনসোর্টিয়াম। ওই সময় হুয়াওয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য বিরোধের জেরে খারাপ পরিস্থিতিতে থাকায় অনার ডিভাইস ব্যবসা বিভাগের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বিক্রি করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল।

বিশ্বের শীর্ষ টেলিকম নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম নির্মাতা হুয়াওয়ে। শুধু তা- নয়; গত বছরের শুরুর দিকে বিশ্বের শীর্ষ স্মার্টফোন নির্মাতার তকমাটিও দখলে নিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। তবে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য বিরোধের জেরে প্রতিষ্ঠানটির কনজিউমার ব্যবসা বিভাগ তীব্র চাপের মুখে পড়ে। হুয়াওয়ের প্রবৃদ্ধি অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব ডিভাইস উৎপাদন কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে কালো তালিকাভুক্ত হওয়ায় প্রয়োজনীয় চিপ প্রযুক্তি সংকটে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। পরিস্থিতিতে অনেকটা নীরবে বিশ্বের কিছু বাজার থেকে ডিভাইস ব্যবসা গুটিয়ে নিতে শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। শুরুতে সাব-ব্র্যান্ড অনার স্মার্টফোন ব্যবসা বিভাগের আংশিক বিক্রির তথ্য প্রকাশ পেলেও গত নভেম্বরে পুরো বিভাগটিই বেচে দেয়ার সত্যতা নিশ্চিত করা হয়।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে হুয়াওয়ে ব্র্যান্ডের অধীনে ডিভাইস ব্যবসা পরিচালনা করা অনেকটা দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। যে কারণে বিক্রির মাধ্যমে অনার ব্র্যান্ডকে টিকিয়ে রাখার উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বিক্রির চুক্তি অনুযায়ী, অনার স্মার্টফোন ব্যবসা বিভাগের গবেষণা উন্নয়ন (আরঅ্যান্ডডি) সক্ষমতার একটি অংশ এবং সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা ব্যবসা বিভাগের নিয়ন্ত্রণ পাবে ক্রেতা কনসোর্টিয়াম। নগদ অর্থে অনার বিভাগ বিক্রি করা হয়। গত সপ্তাহে নতুন প্যারেন্ট প্রতিষ্ঠানের অধীনে প্রথম ডিভাইস ভি৪০ ফাইভজি স্মার্টফোন দিয়ে স্মার্টফোন বাজারে প্রত্যাবর্তন করেছে অনার। ডিভাইসটিতে মিডিয়াটেক ডাইমেনসিটি ১০০০ প্লাস চিপসেট ব্যবহূত হয়েছে। এতে বিভিন্ন নতুন ফিচারের পাশাপাশি ৫০ মেগাপিক্সেলের হাই-এন্ড ক্যামেরা রাখা হয়েছে। অ্যান্ড্রয়েড ১০ ভিত্তিক ম্যাজিক ইউআই . চালিত ডিভাইসটিতে গুগলের সেবা মিলবে কিনা, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

গত অক্টোবরে টিএফটি ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটিজের বিশ্লেষক কুও মিং-চি বলেছিলেন, হুয়াওয়ের যেকোনো ধরনের সম্পদ ক্রয় ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের জন্য বড় ধরনের অর্জন হতে পারে। সেটা অনার ডিভাইস ব্যবসা বিভাগ হোক কিংবা গবেষণা এবং উন্নয়ন বিভাগের আংশিক ক্রয় হোক। কারণ হুয়াওয়ের অনার ব্র্যান্ড এরই মধ্যে বৈশ্বিক ডিভাইস বাজারে একটি প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ড। এর গবেষণা এবং উন্নয়ন বিভাগও অন্য যেকোনো স্মার্টফোন ব্র্যান্ডের চেয়ে অনেক উন্নত।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন