দারুণ নৈপুণ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

অভিজ্ঞ চার ক্রিকেটারের ফিফটি এবং বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতেও হারাল বাংলাদেশ। ফলে তিন ম্যাচের তিনটিতেই জিতে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ দিল তামিমবাহিনী। বাংলাদেশের দেয়া ২৯৮ রানের জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ থামে ১৭৭ রানে। এ জয়ে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে ওয়ানডে সুপার লিগেও স্থান সুদৃঢ় করল বাংলাদেশ। 

বল হাতে এদিনও বাংলাদেশকে শুরুতে সাফল্য এনে দেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। প্রথম হালকা সুইং করে বাইরে বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা দিয়ে মুশফিককে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন করন ওট্টেলি। ১ রান আসে তার ব্যাট থেকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দলীয় রান যখন ৩০ তখন ফিরে যান সুনীল আমব্রিসও। এবারের বলটি একটু ভেতরের দিকে ঢুকেছিল। চেষ্টাও করে নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি আমব্রিস। ফিরে যান ১৩ রান করে। এরপর দলীয় ৪৭ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তৃতীয় ধাক্কা দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন কাইল মেয়ার্সকে। ১১ রান আসে মেয়ার্সের ব্যাট থেকে। সেখান থেকে দলকে টেনে নেন এনক্রুমাহ বুনার ও জেসন মোহাম্মদ। অবশ্য ৭৯ রানের মাথায় জেসনকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে আরেকটু এগিয়ে দেন সাইফউদ্দিন। ১৭ রান আসে জেসনের ব্যাট থেকে। ৩১ রান করা বুনারকেও বোল্ড করে ফিরিয়ে দেন সাইফউদ্দিন। ৯৩ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর জাহমার হ্যামিল্টনকে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। দলীয় ১৫৫ রানে রভম্যান পাওয়েলকে আউট করেন সৌম্য সরকার। ৪৭ রান করেন পাওয়েল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ গুটিয়ে যায় মাত্র ১৭৭ রানে। বাংলাদেশের জয় ১২০ রানে। বাংলাদেশের হয়ে ৩ উইকেট নেন সাইফউদ্দিন। দুটি করে উইকেট পেয়েছেন মুস্তাফিজ ও মেহেদী হাসান মিরাজ। 

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে এদিন শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ইনিংসের প্রথম ওভারেই কোন রান না করে ফিরে যান ওপেনার লিটন দাস। আলজারি জোসেফের ভেতরে ঢোকা বল ঠেকাতে পারেননি লিটন, সরাসরি আঘাত করে তার প্যাডে। লেগ বিফোরের আবেদনে সাড়া দিতে দেরি করেননি আম্পায়ার। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে আরো একবার ব্যর্থ নাজমুল হোসেন শান্ত। কাল মেয়ার্সের কিছুটা ভেতরে আসা বল খেলতে লিটনের মতো ব্যর্থ হয়েছেন শান্তও। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেও বাঁচতে পারেননি এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ৩০ বলে ২০ রান করেন শান্ত। 

৩৮ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া বাংলাদেশকে উদ্ধারের দায়িত্ব নেন অধিনায়ক তামিম ও সাকিব আল হাসান। তবে রানের খাতা খোলার আগেই আউট হতে পারতেন সাকিব। নিজের বলেই সাকিবের তুলে দেয়া একটু কঠিন ক্যাচটি মুঠোয় পুরতে পারেননি মেয়ার্স। তবে এরপর তামিমের সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে টেনে নেন সাকিব। শট খেলার চেয়ে স্ট্রাইক রোটেট করাকেই প্রাধান্য দিচ্ছিলেন এ দুজন। এর মাঝে নিজের ৪৯ তম ফিফটিও তুলে নেন তামিম। এরপর অবশ্য কিছুটা আগ্রাসী খেলতে চেয়েছিলেন তামিম।  কিন্তু বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি অধিনায়ক। জোসেফের শর্ট বলে শট খেলতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করে মিড উইকেটের ধরা পড়েন তামিম। 

নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার পর থেকে ব্যাটিংয়ে ভালো কিছু করতে পারছিলেন না সাকিব। এ ম্যাচেও ঠিক নিজেদের চেনা রূপে দেখা যচ্ছিল না তাকে। এরপরও মাটি কামড়ে পড়ে থেকে তুলে নিয়েছেন নিজের ৪৮ তম ফিফটি। তবে ফিফটি তুলেই রেমন রেইফারের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান এই অলরাউন্ডার । 

সাকিব ফিরলেও রানের চাকা বেশভালোভাবেই সচল রেখেছেন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। দারুণ ব্যাটিংয়ে দুজনে মিলে দলকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যান। ৪৭ বলে নিজের ফিফটিও তুলে নেন মুশফিক। ফিফটিতে পৌঁছে অবশ্য বেশি দূর ইনিংস টেনে নিতে পারেননি এই উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান। রান বাড়াতে গিয়ে রেইফারের বলে ক্যাচ দিয়েছেন জোসেফকে। ৫৫ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় মুশফিক করেন ৬৪ রান। মুশফিক ফিরলেও মাহমুদউল্লাহ ছিলেন আগ্রাসী।  শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ৪৩ বলে ৩ চার ও ৩ ছক্কায় তিনিও করেন ৬৪ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে জোসেফ ও রেইফার দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন