এক রকেটে ১৪৩টি স্যাটেলাইট পাঠানোর রেকর্ড করলো স্পেসএক্স

বণিক বার্তা অনলাইন

একটি রকেটে করে মহাকাশে ১৪৩টি কৃত্রিম উপগ্রহ (স্যাটেলাইট) পাঠালো ইলোন মাস্কের স্পেসএক্স।  একক মহাকাশযানে এতোগুলো স্যাটেলাইট পাঠানোর রেকর্ড এটিই প্রথম। 

গতকাল রোববার যুক্তরাষ্ট্র ফ্লোরিডায় কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ১৪৩টি স্যাটেলাইটের পে-লোড নিয়ে মহাকাশে যাত্রা করে স্পেসএক্সের ফ্যালকন রকেট। 

এর আগের রেকর্ডটি ছিল ভারতের।  ২০১৭ সালে একটি ভারতীয় রকেট ১০৪টি স্যাটেলাইট নিয়ে মহাকাশে যাত্রা করেছিল এবং সফলভাবে স্যাটেলাইটগুলো কক্ষপথে স্থাপনে সক্ষম হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে মহাকাশ অভিযানে বড় ধরনের অবকাঠামোগত পরিবর্তন সাধিত হওয়ার কারণে এখন অনেকেই এই খাতে আসছে।  এই বৈপ্লবিক পরিবর্তনের ফলে সরল, ক্ষুদ্রায়তনিক এবং স্বল্পমূল্যের সরঞ্জাম পাওয়া যাচ্ছে। এমনকি অনেকে এসব সরঞ্জাম স্মার্টফোনের মতো কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স কোম্পানির কাছ থেকেও কিনতে পারে।  ফলে খুব কম অর্থ ও জনবলে এখন ছোট প্যাকেজে একটি সক্ষম উপগ্রহ তৈরি করা যাচ্ছে। 

সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্পেসএক্সের মতো কিছু রকেট কোম্পানি, যারা বাণিজ্যিকভাবে অপেক্ষাকৃত কম খরচে মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ ও কক্ষপথে স্থাপনের কাজটি করে দিচ্ছে।  যেমন, স্পেসএক্সের রয়েছে মাত্র ১০ লাখ ডলারের প্যাকেজ।

গতকালের মিশনে ফ্যালকন রকেটে স্পেসএক্সের নিজেরই ছিল ১০টি স্যাটেলাইট।  কোম্পানির স্টারলিংক টেলিকমিউনিকেশন মেগা-কনস্টেলেশন প্রকল্পে সর্বশেষ সংযোজন এগুলো।  বিশ্বজুড়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ সরবরাহ করার উদ্দেশ্যেই এই প্রকল্প হাতে নিয়েছেন ইলোন মাস্ক।

ফ্যালকনে সর্বাধিক-৪৮টি স্যাটেলাইট ছিল সান ফ্রান্সিসকোর প্ল্যানেট কোম্পানির।  এগুলো ছিল কোম্পানির সুপারডোভ মডেলের আরো একটি ব্যাচ। এই স্যাটেলাইটগুলো দৈনিক ৩-৫ মিটার রেজুলিউশনে পৃথিবী পৃষ্ঠের ছবি পাঠাবে। মহাকাশে এখন কোম্পানিটির এমন স্যাটেলাইটের বহর ২০০ পেরিয়ে গেল।

সুপারডোভগুলো জুতার বাক্সের সমান। ফ্যালকন রকেটের অন্য পে-লোডগুলোর মধ্যে অনেকগুলোর আকার কফি মগের চেয়ে কিছুটা বড় এবং কিছু কিছু এমনকি একটি পেপারব্যাক বইয়ের চেয়েও ছোট।

স্যাটেলাইট তৈরিতে সোয়ার্ম টেকনোলজি এখন ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।  এই প্রযুক্তিতে তৈরি স্যাটেলাইটকে বলা হয় স্পেস-বি। এগুলোর আকার হয় ১০x১০x২.৫ সেন্টিমিটার।

এসব স্যাটেলাইট পৃথিবীতে পরিযায়ী পশুপাখি এবং জাহাজ থেকে শুরু করে স্থলভাগে যেকোনো ধরনের বস্তুর সঙ্গে যুক্ত টেলিকমিউনিকেশন নোডের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত হতে পারে।

ফ্যালকন রকেটে বড় আইটেমের মধ্যে ছিল কয়েকটি স্যুটকেস আকারের।  এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ছিল রাডার স্যাটেলাইট।  রাডার স্যাটেলাইট প্রযুক্তিরও এখন আমূল পরিবর্তন এসেছে।  সাধারণত এ ধরনের স্যাটেলাইট তৈরিতে শত শত মিলিয়ন ডলার খরচ হয়, ওজনও থাকে বেশি। ফলে সেগুলো কক্ষপথে স্থাপনের খরচও বেশি।  বর্তমানে এ ধরনের স্যাটেলাইট তৈরিতে অন্তত দুই মিলিয়ন ডলার খরচ কমেছে। ওজন নেমেছে ১০০ কেজির নিচে। 

ফিনল্যান্ডের আইসিয়ে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপেলা এবং উম্ব্রা এবং জাপানের আইকিউপিএস স্যাটেলাইটও ছিল ফ্যালকনে।  

সূত্র: বিবিসি

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন