পাল্টাপাল্টি সন্ত্রাসের অভিযোগ আওয়ামী লীগ-বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে প্রচারণা জমে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে প্রধান দুই দলের প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগও বাড়তে শুরু করেছে। প্রচারণার প্রথম থেকে হামলা হয়রানির অভিযোগ করে আসছিলেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী। এবার বিএনপির বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তুলেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অরাজকতা তৈরির উদ্দেশ্যে বিএনপি সন্ত্রাসীদের জড়ো করছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন। গতকাল নগরীর বহদ্দারহাটে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরীর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এমন অভিযোগ করেন তিনি।

এসএম কামাল হোসেন বলেন, বিএনপিকে মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। যার কারণে বিএনপি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। তারা সন্ত্রাসীদের জড়ো করছে। আওয়ামী লীগ নির্বাচনে বিশ্বাস করে। পরাজয় নিশ্চিত জেনে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য, নির্বাচনে মানুষের মাঝে ভীতি সৃষ্টি করার জন্য বিএনপি জামায়াত, শিবির বিএনপির সন্ত্রাসীদের জড়ো করছে। বিএনপির সাংগঠনিক কোনো ভিত্তি নেই। তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন।

সময় মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সাবেক সিটি মেয়র নাছির উদ্দীন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম, মহানগর আওয়ামী লীগের বন পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমানসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন আবারো কর্মীদের হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন। সেই সঙ্গে চসিক নির্বাচনের দিন চট্টগ্রামে সাধারণ ছুটি ঘোষণা না করাটাকে ভোটার উপস্থিতি কমানোর ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

গতকাল নগরীর পতেঙ্গা, দেওয়ানবাজার, বক্সিরহাট এলাকায় গণসংযোগে গিয়ে গণমাধ্যমকে বিএনপির প্রার্থী বলেন, ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে যেতে না পারে এবং কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বেশি না হতে পারে, সেজন্য পরিকল্পিতভাবে সরকারি ছুটি দেয়া হয়নি।

ডা. শাহাদাত বলেন, চট্টগ্রাম হচ্ছে শিল্প ব্যবসাবান্ধব নগরী। নগরীর কল-কারখানাতে লাখ লাখ শ্রমিক কাজ করছেন। ভোটের দিন ভোটাররা তাদের কর্মস্থলে না গিয়ে ভোটকেন্দ্রে কীভাবে যাবে? এতে করে ভোটার উপস্থিতি কমে যাবে। সুযোগে সরকারি দল তাদের প্রার্থীকে জয়ী করতে নগরীতে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দিয়ে ভোটকেন্দ্র দখলের চেষ্টা করবে। নগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রেস্ট হাউজগুলোতে চট্টগ্রামের আশপাশের এলাকার বহিরাগতরা অবস্থান করছে। বর্তমান সরকার ইসির অধীনের নির্বাচনে ভোটারদের আস্থা নেই। ভোটাররা কেন্দ্রবিমুখ হয়ে পড়ছে। ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য সাধারণ ছুটি ঘোষণাসহ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা প্রয়োজন। সেখানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা না করে সরকার ভোটারদের কেন্দ্রবিমুখ করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে।

সময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রমবিষয়ক সম্পাদক এএম নাজিম উদ্দিন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মিয়া ভোলা, ইয়াছিন চৌধুরী লিটনসহ অন্যরা।

চসিক নির্বাচন সুষ্ঠু হবেসিইসি: এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নুরুল হুদা বলেছেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিজিবি, আনসার, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, র্যাব গোয়েন্দা সংস্থার বক্তব্য শুনেছি। নির্বাচনের পরিবেশ-পরিস্থিতি নিয়ে তারা আমাকে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছে। চসিক নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ গ্রহণযোগ্য হবে। গতকাল চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সিইসি গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান।

সিইসি নুরুল হুদা বলেন, এবারের নির্বাচনে সাধারণ ছুটি থাকছে না। নির্বাচন বৃহস্পতিবার বা রোববার হলে সেখানে আমাদের আশা থাকে ভোটাররা ভোট দেবে। কিন্তু দেখা যায় ছুটি পেয়ে তারা সবাই বাড়ি চলে যায়, ভোট দেয় না। সে কারণে আমরা মাঝখানে রাখি। কেবিনেট থেকে একটা নির্দেশনা জারি আছে, যারা ব্যক্তিগত বা সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত থাকবেন, তাদের যেন ভোট দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়। কারণে সাধারণ ছুটি রাখি না। নির্বাচনের দিন ট্রাক মোটরসাইকেল চলাচল নিষেধ থাকবে। তবে বড় বড় ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমগুলো চালু থাকবে।

নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী মোতায়েন নিয়ে আমাদের কোনো চিন্তাভাবনা নেই। ইভিএমের ভোটে সশস্ত্র পুলিশ পাহারা থাকবে। জাল ভোট দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন