ভোজ্যতেলসহ সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, মধ্যস্বত্বভোগীরা ভোজ্যতেলের দাম বাড়াচ্ছে। ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার বিষয়ে সমস্যার গভীরে গিয়ে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারদরের সঙ্গে সমন্বয় করে দেশীয় বাজারে ভোজ্যতেলের দাম ঠিক করা হবে। এজন্য ট্যারিফ কমিশনের নেতৃত্বে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে। রমজান মাস সামনে রেখে সব পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে নজরদারি বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।
গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী। ভোজ্যতেলের ঊর্ধ্বমূল্য রোধের বিষয়ে এ বৈঠক হলেও সামনের রমজানে নিত্যপণ্যের মজুদ ও সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কাউকে সুযোগ দেয়া হবে না। ভোজ্যতেলসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ক্ষেত্রে মধ্যস্বত্বভোগীরা যেন কোনোভাবে অবৈধ মুনাফা না করতে পারে, সেজন্য নজরদারি বাড়ানো হবে। তাদের কারণেই বাজারে মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারা এসি ঘরের চেয়ারে বসে বাজার থেকে মুনাফা তুলে নিচ্ছেন।
আসন্ন রমজানে প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে চাহিদার তিন গুণ আমদানি করা হবে বলে জানান বাণিজমন্ত্রী। এছাড়া উৎপাদক এবং ভোক্তার মাঝামাঝি দালাল, ফঁড়িয়াদের দৌরাত্ম্য কমাতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কঠোর মনিটরিং করবে বলেও তিনি জানান।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের মূল্য ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, চাহিদার ৯০ শতাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। তাই স্বাভাবিকভাবে আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্যের সঙ্গে দেশীয় বাজারে মূল্য ওঠানামা করে। তবে বৈশ্বিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশীয় বাজারে মূল্যনির্ধারণ করতে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে। এজন্য একটি কমিটি করা হয়েছে। সমস্যার গভীরে গিয়ে আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। সব ব্র্যান্ডের খোলা তেল কনজিউমার প্যাক বোতলে বিক্রির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যাতে সহজেই ব্র্যান্ড চেনা যায় এবং ভেজাল প্রতিরোধ করা যায়। পাশাপাশি মধ্যস্বত্বভোগীরাও হাতবদলের সময় যেন অবৈধ সুযোগ নিতে না পারে।
বাণিজ্যমন্ত্রী আরো বলেন, আসন্ন পবিত্র রমজান মাস সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্য পর্যাপ্ত পরিমাণে আমদানি ও মজুদ করার জন্য ব্যবসায়ীদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয় টিসিবির মাধ্যমে প্রতি বছরের মতো সাশ্রয়ী মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করবে। এবার পণ্য বিক্রির পরিমাণ বিগত বছরের প্রায় তিন গুণ হবে।
গতকালের বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা, বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউটের পরিচালক মো. ওবায়দুল আজম, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রি. জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্তকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই এবং এনএসআইয়ের পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।