উত্তরবঙ্গের ৫ জেলা

১ কোটি কেজির বেশি চা উৎপাদনের রেকর্ড

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, পঞ্চগড়

দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে সমতলে চা উৎপাদন। ধারাবাহিকতায় বিদায়ী বছরে দেশের বাগানগুলোয় সব মিলিয়ে কোটি ৬৩ লাখ ৯০ হাজার টন চা উৎপাদন হয়েছে। এর মধ্যে পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁওসহ উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলার সমতল ভূমিতে উৎপাদন হয়েছে কোটি লাখ কেজি চা, যা পানীয় পণ্যটির মোট জাতীয় উৎপাদনের প্রায় ১২ শতাংশ। এর মধ্য দিয়ে দেশে সবচেয়ে বেশি চা উৎপাদনকারী অঞ্চলগুলোর মধ্যে সিলেটের পর দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে উঠে এসেছে উত্তরবঙ্গ।

পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নর্দান বাংলাদেশ প্রকল্পের পরিচালক . মোহাম্মদ শামীম আল মামুন জানান, উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলা পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, দিনাজপুর নীলফামারীতে ১০টি নিবন্ধিত ১৭টি অনিবন্ধিত চা বাগান রয়েছে। এছাড়া এসব জেলায় রয়েছে হাজার ৩১০টি ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান। এর মধ্যে নিবন্ধন রয়েছে হাজার ৫১০টির। বিদায়ী বছরে নিবন্ধিত অনিবন্ধিত মিলিয়ে এসব বাগানের ১০ হাজার ১৭০ দশমিক ৫৭ একর জমিতে চা চাষ হয়েছে। উত্তোলন হয়েছে কোটি ১২ লাখ ৮৩ হাজার ৩৮৬ কেজি সবুজ চা পাতা।

তিনি আরো বলেন, পঞ্চগড় ঠাকুরগাঁও জেলায় ১৮টি চা কারখানা চালু রয়েছে। বিদায়ী বছরে এসব কারখানায় স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পাতা থেকে সব মিলিয়ে কোটি লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। আগের বছরের তুলনায় ২০২০ সালে উত্তরবঙ্গে চা উৎপাদন বেড়েছে লাখ ১১ হাজার কেজি। এর মধ্য দিয়ে গত বছর জাতীয় চা উৎপাদনের ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ জোগান দিয়েছে উত্তরের সমতল ভূমি, যা সিলেট অঞ্চলের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী বছরে পঞ্চগড় জেলায় হাজার ৬৪২ একর জমিতে সব মিলিয়ে কোটি ৬০ লাখ ৫১ হাজার ১৭৬ কেজি সবুজ চা পাতা থেকে ৯৮ লাখ ৯৭ হাজার ৭০ কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। সময় ঠাকুরগাঁও জেলায় হাজার ২৯৩ একর জমিতে চা চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ৪৫ লাখ ২৫ হাজার ৫০০ কেজি সবুজ পাতা লাখ ১৩ হাজার ৩৪০ কেজি তৈরি চা। একইভাবে ২০২০ সালে লালমনিরহাট, নীলফামারী দিনাজপুর জেলায় ২৩৫ দশমিক ৫৭ একর জমিতে সব মিলিয়ে লাখ হাজার ৭১০ কেজি সবুজ চা পাতা উৎপাদন হয়েছে।

. মোহাম্মদ শামীম আল মামুন বলেন, সমতল ভূমিতে চা চাষের জন্য পঞ্চগড় এর পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এলাকা। সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা উদ্যোগে দিন দিন উত্তরাঞ্চলে চা চাষ পানীয় পণ্যটির উৎপাদন বাড়ছে।

জানা গেছে, উত্তরবঙ্গের সমতল ভূমিতে চা চাষের বিকাশে চাষী বাগানিদের বিভিন্ন সহায়তার মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করা হয়। চাষীদের স্বল্পমূল্যে উন্নত জাতের চারা সরবরাহ করা হয়। চাষীদের নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ক্যামেলিয়া খোলা আকাশ স্কুলে শীর্ষক হাতে-কলমে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। চাষীদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান দিতে এরই মধ্যে দুটি পাতা একটি কুঁড়ি নামে একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করা হয়েছে। আঞ্চলিক কার্যালয়ে একটি পোস্ট-ম্যানেজমেন্ট ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উন্নয়ন কর্মকর্তা আমির হোসেন, ঠাকুরগাঁও দিনাজপুরের খামার তত্ত্বাবধায়ক ছায়েদুল হক, বাংলাদেশ স্মল টি গার্ডেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমিরুল হক খোকন, চা কারখানার মালিক জাহেদুল হক, ক্ষুদ্র চা চাষী মতিয়ার রহমান, আনিসুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন