জলবায়ু পরিবর্তনে নারী চ্যাম্পিয়নদের না বলা গল্প

বণিক বার্তা ডেস্ক

গতকাল শনিবার (২৩ জানুয়ারি) বার্ষিক গবেষণা সম্মেলন ২০২১ উপলক্ষ্যে ইউএন উইমেন এবং ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হয় ‘আনটোল্ড টেলস অব উইমেন চ্যাম্পিয়নস’ শীর্ষক একটি ভার্চুয়াল আলোচনা। অধিবেশনটির সভাপতিত্ব করেন সূচনা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও জলবায়ু ঝুঁকির ফোরামের থিম্যাটিক রাষ্ট্রদূত সায়মা ওয়াজেদ। 

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব,  লিঙ্গ-ভিত্তিক বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে তুলছে যা নারীদের আরো বেশি ঝঁকির মুখে ফেলছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, নারী ও মেয়েদের কেবল ‘ভিক্টিম’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক পরিণতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস এবং কমিউনিটি রেসিলিয়েন্স তৈরিতে  সক্রিয় জনগোষ্ঠী হিসেবে পুরুষকেই উপস্থাপন করা হয় এবং বেশিভাগ ক্ষেত্রেই নারীদের সেই লড়াইয়ের চিত্র ফুটে ওঠে না। তাই, ইউএন উইমেন এই ভার্চুয়াল সংলাপের মাধ্যমে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নারীর শক্তি ও সাফল্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। 

অধিবেশনটিতে গ্রামীণ থেকে শহুরে, স্থানীয় থেকে জাতীয়, আঞ্চলিক এবং বিশ্ব স্তরের জলবায়ু পরিবর্তন সংকটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নারী নেত্রীদের একত্রিত করা হয়েছিল,যেখানেতারাতাদেরঅনুপ্রেরণামূলক গল্পগুলি পরিবেশন করেন এবং এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।

অধিবেশনটিতে তৃণমূলের নারী চ্যাম্পিয়নদের ছয়টি অজানা গল্প বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, খুলনা এবং কুড়িগ্রামের অঞ্চল থেকে প্রকাশিত হয়েছিল। জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা করার জন্য তারাক্লাইমেট প্রোটেস্টর, প্রতিবেদক, দুর্যোগ প্রস্তুতি নেতা, নারী উদ্যোক্তা, সংস্কারক ইত্যাদি বহুমুখী ভূমিকা পালন করছেন । তাদের বক্তব্য থেকে এটি উঠে এসেছে যে,আমাদের সমাজে বিদ্যমান লিঙ্গ-বৈষম্য আমাদের তৈরি করা, এটি পূর্বনির্ধারিত ছিল না, সুতরাং নারী-পুরুষের ক্ষেত্রে কোনো অবিচার হওয়া উচিত নয়। 

এ বিষয়ে সাইক্লোন প্রস্তুতি কর্মসূচি সাতক্ষীরার ইউনিট লিডার মাছুরা পারভীন বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল চলাকালীন, আমি একমাত্র নারী স্বেচ্ছাসেবক যিনি বিপর্যয়ের মাঝে সমস্ত পুরুষের সঙ্গে বাইরে কাজ করেছি এবং আমি এমনকি প্রতিবন্ধী শিশুদের আমার নিজের কাধে নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়েছিলাম।

অংশগ্রহণকারীরা এবং আলোচকরা ভিডিও সিরিজ থেকে প্রাপ্ত ফলাফলগুলোর সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে ভাবে একমত প্রকাশ করে সায়মা ওয়াজেদ বলেন, যে নারী যদি সমাজের থেকে যথাযথ সমর্থন না পান তবে উজ্জ্বল ভবিষ্যত এবং প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও সে নিজেকে বিকশিত করতে পারে না। নারীদের বিকাশের জন্য প্রয়োজন একটি সক্ষম পরিবেশ কারন একজন নারীর বিকাশ মানে পরিবার, সমাজ এবং একটি গোটা দেশের বিকাশ।

সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, অধ্যাপক সালেমুল হক, আইসিসিএসিএডি পরিচালক; খুশি কবির,সামাজিক কর্মী; ইউসিএলের অধ্যাপক ড. মরিন ফোর্ডহ্যাম; প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন থেকে আশরাফুন্নাহার মিষ্টি; আফরোজা বেগম আল্পোনা, কুড়িগ্রাম সদরের ভাইস চেয়ারম্যান; জান্নাতুল মাওয়া, সাতক্ষীরা থেকে বিন্দু নারী সংগঠনের এর নির্বাহী পরিচালক; ফরিদা ইয়াসমিন, নারী অ্যাসোসিয়েশন ফর রিভাইভাল অ্যান্ড ইনিশিয়েটিভের নির্বাহী পরিচালক - কুড়িগ্রাম; লিপিকা রানী বৈরাগী অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড ডিস্টারড ওয়েলফেয়ারের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, খুলনা এবং সাতক্ষীরার দক্ষিণের মশাল পত্রিকার সাংবাদিক জাহিদা জাহান মৌ। 

দিলরুবা হায়দার, ইউএন উইমেন বাংলাদেশ কান্ট্রি অফিসের অফিস ইনচার্জ অধিবেশনটি পরিচালনা করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন