২০২০ সাল

ব্যবহৃত স্মার্টফোনের বৈশ্বিক বাজার পড়েছে ৯%

বণিক বার্তা ডেস্ক

গত বছর কভিড-১৯ মহামারীর প্রথম ধাক্কা সামলে স্মার্টফোন বাজারে কিছুটা বাড়তি চাহিদা দেখা গেলেও তা যথেষ্ট ছিল না। একই পরিস্থিতি ছিল ব্যবহৃত স্মার্টফোন বাজারেও। গত বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) এক বছর আগের একই সময়ের তুলনায় ব্যবহৃত স্মার্টফোনের বৈশ্বিক বাজার পড়েছে ১৬ শতাংশ। আর গত বছরজুড়ে আগের বছরের তুলনায় ব্যবহৃত স্মার্টফোনের বাজার পড়েছে শতাংশ। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চ প্রকাশিত রিফারবিশড স্মার্টফোন মার্কেট আপডেট শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। খবর বিজনেস লাইন।

বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলো বিভিন্ন এক্সচেঞ্জ অফারের আওতায় ব্যবহৃত স্মার্টফোন ফেরত নিয়ে নতুন কেনার সুযোগ দিয়ে আসছে। এক্ষেত্রে পুরনো ডিভাইসের নির্ধারিত মূল্য নতুন কেনা ফোনের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়। এক্সচেঞ্জ অফারের আওতায় অর্ধেক বা তার কিছু বেশি মূল্য পরিশোধ করে আপগ্রেড ডিভাইস ব্যবহারের সুযোগ পেয়ে থাকেন ক্রেতারা। এক্সচেঞ্জ অফারের আওতায় ব্যবহৃত ফোন সংগ্রহ এবং ঘষামাজা করে তা পুনরায় বাজারে সরবরাহকৃত ডিভাইসকে ব্যবহৃত বা পরিমার্জিত বলা হয়।

কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণে সৃষ্ট কভিড-১৯ মহামারীর কারণে গত বছর প্রথমার্ধে নতুন ব্যবহৃত উভয় ধরনের স্মার্টফোন বাজারে তীব্র অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। কর্মীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনায় নিয়ে ডিভাইস ব্র্যান্ডগুলো উৎপাদন বন্ধের পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে খুচরা বিক্রয়কেন্দ্রগুলো বন্ধ করতে বাধ্য হয়। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে ডিভাইস সরবরাহ বিক্রিতে। তবে বছরের দ্বিতীয়ার্ধে চলমান মহামারীর ভয়াবহতা কিছুটা কমতে শুরু করলে বিশ্বজুড়ে নতুন স্মার্টফোন বিক্রিতে কিছুটা অগ্রগতি দেখা যায়। তবে তা বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারের সরবরাহ সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য যথেষ্ট ছিল না। গত বছর দ্বিতীয়ার্ধে আইফোন ১২ সিরিজের নতুন চার ডিভাইস উন্মোচন করে অ্যাপল। নতুন প্রত্যেকটি আইফোনে ফাইভজি নেটওয়ার্ক সমর্থন আনা অ্যাপল পণ্যপ্রেমীদের মধ্যে বাড়তি আগ্রহ সৃষ্টি করে। ফলে নতুন আইফোন বিক্রি কিছুটা বেড়ে যায়। অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধে বিক্রি কিছুটা বাড়লেও পুরো বছর বিবেচনায় বিশ্বের প্রত্যেক দেশ এবং অঞ্চলে স্মার্টফোন বিক্রি কমেছে। ভারত লাতিন আমেরিকা ব্যবহৃত স্মার্টফোনের বৃহৎ দুই বাজার। গত বছর প্রথমার্ধে উভয় বাজার যথাক্রমে ২০ ২৪ শতাংশ পড়তে দেখা গেছে।

বিষয়ে কাউন্টারপয়েন্টের জ্যেষ্ঠ রিসার্চ বিশ্লেষক গ্লেন কার্ডোজা বলেন, গত বছরজুড়ে নতুন স্মার্টফোনের বাজার পড়েছে শতাংশ। কভিড-১৯ মহামারী প্রাদুর্ভাব এবং মহামারীর কারণে সৃষ্ট আর্থিক অনিশ্চয়তায় ব্যবহারকারী পর্যায়ে ডিভাইস হালনাগাদ স্থবির হয়ে পড়ে। এর প্রভাব পড়ে ব্যবহৃত স্মার্টফোন বাজারে। ডিভাইস হালনাগাদ কমে যাওয়ায় ব্যবহৃত ফোন বাজারে সরবরাহ সংকট দেখা দেয়।

তিনি বলেন, চলমান মহামারীর মধ্যেও তারা ব্যবহৃত স্মার্টফোন বাজারের প্রবৃদ্ধি নিয়ে আশাবাদী। গত বছর ব্যবহৃত স্মার্টফোন বাজারে অ্যাপলের দখল ৩৯ থেকে বেড়ে ৪২ শতাংশে পৌঁছেছে।

বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশনের (আইডিসি) সাম্প্রতিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মধ্যে ব্যবহৃত স্মার্টফোনের বৈশ্বিক সরবরাহ ৩৩ কোটি ২৯ লাখ ইউনিটে পৌঁছবে। একই সময়ে ব্যবহৃত পরিমার্জিত স্মার্টফোন সরবরাহে ১৩ দশমিক শতাংশ বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধির দেখা মিলবে। ২০১৯ সালে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ব্যবহৃত পরিমার্জিত স্মার্টফোনের বৈশ্বিক সরবরাহ ২০ কোটি ৬৭ লাখ ইউনিটে পৌঁছায়, যা এর আগের বছরের চেয়ে ১৭ দশমিক শতাংশ বেশি। ২০১৮ সালে ব্যবহৃত পরিমার্জিত স্মার্টফোন সরবরাহ ১৭ কোটি ৫৮ লাখ ইউনিট ছিল। চলমান মহামারীর নতুন বাস্তবতায় খাপ খাইয়ে নিতে সোস্যাল দূরত্ব বজায় রেখে অনলাইন ক্লাসে অংশ নেয়া, বাসায় থেকে অফিসের কাজ পরিচালনা, অনলাইনে মিটিং করা এবং বন্ধু-প্রিয়জনের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে স্মার্টফোন এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এক্ষেত্রে নতুন স্মার্টফোন ক্রয়ের চেয়ে সাশ্রয়ী দামে হাই-এন্ড ব্যবহৃত পরিমার্জিত স্মার্টফোন কিনতে জোর দিচ্ছেন গ্রাহকরা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন