দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ক্রিকেট কমপ্লেক্স হচ্ছে সিলেটে

দেবাশীষ দেবু, সিলেট

দেশে প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ ক্রিকেট কমপ্লেক্স হচ্ছে সিলেটে। সিলেটের লাক্কাতুরা এলাকার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে ঘিরে কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হচ্ছে। এরই মধ্যে ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পাশে নতুন আরেকটি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়েছে। আজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী . একে আব্দুল মোমেন এবং যুব ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করবেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এলাকায় ক্রিকেটারদের অনুশীলনের জন্য একটি আউটার স্টেডিয়াম, একটি ক্রিকেট একাডেমি, ডরমিটরি স্কুল নির্মাণ করা হবে। অনুশীলন স্টেডিয়ামের জন্য এরই মধ্যে তিন একর জায়গা বরাদ্দ মিলেছে। ২০০৭ সালে সিলেটের লাক্কাতুরা চা বাগান এলাকায় নতুন একটি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়। এরপর ২০১১ সালে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করে সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়াম নামকরণ করা হয়। চা বাগান আর উঁচুনিচু টিলা ঘেরা স্টেডিয়ামের সৌন্দর্য প্রথম থেকেই সবার নজর কেড়েছে। স্টেডিয়ামের গ্রিন গ্যালারি প্রশংসা কুড়িয়েছে দেশী-বিদেশী ক্রীড়া অনুরাগীদের।

২০১৮ সালে সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পাশেই তিন একর জমিতে নতুন আরেকটি স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত স্টেডিয়ামটি আজ বিকালে উদ্বোধন হচ্ছে। স্টেডিয়ামটি প্রথমে আউটার স্টেডিয়াম হিসেবে নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে এতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজনের সব সুযোগ-সুবিধা থাকায় নতুন স্টেডিয়ামকে সিলেট ক্রিকেট গ্রাউন্ডস- নামকরণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সূত্রে জানা যায়, ক্রিকেটারদের অনুশীলনের জন্য আউটার স্টেডিয়াম হিসেবে নির্মিত হলেও আন্তর্জাতিক মানের সব সুযোগ-সুবিধা থাকায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) বিসিবি মাঠটিকে আন্তর্জাতিক মাঠের মর্যাদা দেয়ার জন্য এরই মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলে (আইসিসি) আবেদন করেছে।

নতুন স্টেডিয়ামের নাম সিলেট গ্রাউন্ডস- করায় পরিবর্তন আনা হয়েছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের নামকরণেও। স্টেডিয়ামকে সিলেট গ্রাউন্ডস- নামকরণ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিষয়টি জানিয়ে এরই মধ্যে আইসিসিকে চিঠিও দিয়েছে বিসিবি।

বিসিবি বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, দুই স্টেডিয়ামের পাশে অনুশীলনের জন্য নতুন আরেকটি স্টেডিয়াম নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। স্টেডিয়ামের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে এরই মধ্যে তিন শতক জায়গা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অনুশীলন স্টেডিয়াম নির্মিত হলে সেখানে একসঙ্গে ৭০ জন করে প্রতিদিন ২১০ জন ক্রিকেটার অনুশীলন করতে পারবেন। নির্ধারিত ফি প্রদান করে যে কোনো ক্লাবই সেখানে ক্রিকেটারদের অনুশীলন করানোর সুযোগ পাবে।

এছাড়া এলাকায় একটি ক্রিকেট একাডেমি গড়ে তুলবে বিসিবি। আর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ নির্মাণ করবে ৪০ জনের আবাসনের সুবিধা সংবলিত ডরমিটরি। যাতে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে ক্রিকেটাররা এসে এখানেই থাকতে পারে। এছাড়া স্টেডিয়ামগুলোর পাশেই দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত একটি বিদ্যালয় নির্মাণ করছে সিলেট সিটি করপোরেশন। বিদ্যালয়ের জন্য বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা থেকে জায়গা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট খেলতে আসা শিক্ষার্থীদের যাতে পড়ালেখায় বিঘ্ন না ঘটে, সে লক্ষ্যে বিদ্যালয়টি নির্মাণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিসিবির পরিচালক সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো সিলেটে একটি পূর্ণাঙ্গ ক্রিকেট কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হচ্ছে। এখানে ক্রিকেটের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে। এতে বাংলাদেশের ক্রিকেট উপকৃত হবে।

আজ উদ্বোধন হতে যাওয়া নতুন স্টেডিয়াম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নতুন স্টেডিয়ামে রয়েছে চারটি ড্রেসিং রুম। থাকছে আন্তর্জাতিক মানের সব সুবিধা। এতে চারটি পিচ রয়েছে। স্টেডিয়ামে কেবল ফ্লাডলাইটের ব্যবস্থা নেই। শিগগিরই ফ্লাডলাইট বসানো হবে।

তিনি বলেন, নতুন স্টেডিয়ামের দুই পাশেই সবুজের সমারোহ। মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে টিলা। টিলার ওপরে সবুজ ঘেরা ঘাসের গ্যালারি, তার ওপর থাকছে সারি সারি গাছের বাগান।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন