করোনার নতুন স্ট্রেইনে উদ্বেগ

সীমান্তে কঠোর নীতিমালার প্রস্তাব ইইউ নেতাদের

বণিক বার্তা ডেস্ক

অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার জন্য সাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) নেতারা। অব্যাহত করোনা সংক্রমণের জেরে সামনের দিনগুলোতে আরো কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করা হতে পারে। ২৭ দেশের সরকারপ্রধানদের সঙ্গে প্রায় ঘণ্টার ভিডিও সম্মেলনের পর ঘোষণা দেন ইইউর শীর্ষ নেতা উরসুলা ভন ডার লিয়েন চার্লস মিশেল। খবর এএফপি।

করোনার নতুন স্ট্রেইনে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির জেরে ফের ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে ইইউ নেতাদের মনে। এজন্য তারা বৃহস্পতিবার জরুরি ভিডিও সম্মেলনের আয়োজন করে। ইউরোপীয় কমিশন প্রধান ভন ডার লিয়েন বলেন, দেশের ভেতরে বাইরে সব ধরনের অগুরুত্বপূর্ণ ভ্রমণে সবাইকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মিশেল বলেন, অগুরুত্বপূর্ণ ভ্রমণ আটকাতে আগামীতে হয়তো আরো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে। পরবর্তী কয়েকদিনের মধ্যে ইইউ নেতাদের মধ্যে আরো আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ হবে বলে জানান ব্লকটির দুই শীর্ষ প্রতিনিধি।

গত মার্চে করোনার প্রথম ঢেউ যেভাবে ইউরোপকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছিল, ফের রকম কোনো বিপর্যয় এড়াতে মরিয়া ইইউ নেতারা। তবে তখন সবগুলো দেশ যেভাবে সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছিল, তাতে সবগুলো দেশের অর্থনীতিই বিপর্যস্ত হয়েছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্লকটির সীমান্ত খোলা রাখার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পণ্য মালামাল আমদানি-রফতানি সচল রাখার পক্ষপাতী সব পক্ষ। একই সঙ্গে শ্রমিকরা যেন সীমান্তে নির্বিঘ্নে আসা-যাওয়া করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা জরুরি বলেও মনে করছেন তারা।

লিয়েন বলেন, আমাদের নিয়ন্ত্রিত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে মহামারী ঠেকাতে হবে। আগের মতো এক যুগে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার মতো অপরিণামদর্শী কাজ করা যাবে না। তবে ভ্রমণের ক্ষেত্রে শেনঝেনভুক্ত দেশগুলোর সীমান্তে করোনা পরীক্ষাও জোরদার করতে হবে।

রোববার থেকে ইইউর বাইরে থেকে যারা খুব জরুরি প্রয়োজনে আসবেন তাদের করোনা পরীক্ষা করিয়ে আসতে হবে। শ্রমিক ট্রাকচালকদের জন্য ইইউর দেশগুলোর সীমান্তেই পরীক্ষা হবে। ফ্রান্স বলছে, রোববার থেকে তাদের দেশের জন্য বিমানে ওঠার ৭২ ঘণ্টা আগেই নেগেটিভ পিসিআর সংগ্রহ করতে হবে। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর কার্যালয় থেকে বলা হয়, অন্য ইউরোপীয় দেশগুলোও তাদের পথ অনুসরণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ইইউতে করোনার নতুন স্ট্রেইনে উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে, ইউরোপীয় রোগ প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের প্রতিবেদনের পর বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ব্রিটেন, দক্ষিণ আফ্রিকা ব্রাজিল থেকে সৃষ্ট স্ট্রেইনের কারণে এরই মধ্যে দেশ তিনটি থেকে সব ধরনের ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেছে ইইউ। আগামী ফেব্রুয়ারির উৎসব মৌসুমেও সীমান্তে যেন কঠোর বিধিনিষেধ বহাল থাকে, সম্মেলনে তার পক্ষে সমর্থন ব্যক্ত করেছে বেলজিয়াম। সীমান্ত চলাচলে কঠোর নিয়ন্ত্রণের পক্ষে কথা বলেছেন অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর সেবাস্টিয়ান কুর্জ। তবে এর প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলেছে পর্তুগাল। অবশ্য করোনার নতুন স্ট্রেইনের দ্রুত বিস্তারের কারণে স্কুল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী আন্তোনিও কস্তার সরকার।

ইইউতে ভ্যাকসিন কার্যক্রমে হতাশাজনক বিলম্ব নিয়ে খুব বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছে ইউরোপের দেশগুলো। দ্রুততর সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিন সংগ্রহ সরবরাহের আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় কমিশন। বায়োএনটেক-ফাইজারের বাইরেও অন্যান্য ভ্যাকসিন সংগ্রহের ওপর জোর দিতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে মডার্না বলছে, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে ইউরোপের ৭০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ককে ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পারবে তারা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন