চীনে জ্বালানি তেল রফতানি

বাজার দখলের দ্বৈরথে রাশিয়ার চেয়ে এগিয়ে সৌদি আরব

বণিক বার্তা ডেস্ক

অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের শীর্ষ ভোক্তা দেশ চীন, যার সিংহভাগ আমদানির মাধ্যমে পূরণ করে দেশটি। স্বাভাবিকভাবে চীনের জ্বালানি বাজারে প্রভাব পোক্ত করতে জ্বালানি পণ্যটির রফতানিকারকরা মুখিয়ে থাকেন। বাজারে শীর্ষ অংশীদার হতে রাশিয়া সৌদি আরবের মধ্যেও তুমুল দ্বৈরথ বিদ্যমান। তবে গত বছর দ্বৈরথে রাশিয়াকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেছে সৌদি আরব। ২০২০ সালে চীনের বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের শীর্ষ রফতানিকারক হিসেবে উঠে এসেছে সৌদি আরবের নাম। খবর রয়টার্স ইকোনমিক টাইমস।

গত বছর করোনা মহামারীর কারণে চীনা অর্থনীতি অনেকটাই শ্লথ হয়ে এসেছিল। লকডাউনের কারণে উৎপাদন পরিবহন খাত বন্ধ কিংবা সীমিত থাকায় কমেছিল জ্বালানি তেলের চাহিদা। তবে পরিস্থিতি দ্রুতই কাটিয়ে উঠেছে চীন। বছর শেষের আগেই অর্থনীতির গতি ফেরানোর পাশাপাশি জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়িয়েছে দেশটি। ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালে রেকর্ড পরিমাণ অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করেছে চীন। আন্তর্জাতিক বাজারে তুলনামূলক কম দাম চীনকে জ্বালানি পণ্যটির আমদানি বাড়াতে উৎসাহ জুগিয়েছে।

চীনের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমসের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে চীনা আমদানিকারকরা আন্তর্জাতিক বাজার থেকে সব মিলিয়ে ৫৪ কোটি ২৪ লাখ টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করেছেন। দৈনিক হিসাবে এর গড় পরিমাণ কোটি লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল। এক বছরের ব্যবধানে চীনে জ্বালানি পণ্যটির আমদানি বেড়েছে দশমিক শতাংশ। চীনের ইতিহাসে এটা সবচেয়ে বেশি অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির রেকর্ড।

২০২০ সালে বিশ্বের শীর্ষ জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশ সৌদি আরব থেকে চীনের বাজারে সব মিলিয়ে কোটি ৪৯ লাখ ২০ হাজার টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি হয়েছে। দৈনিক হিসাবে এর গড় পরিমাণ ১৬ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেল। এক বছরের ব্যবধানে সৌদি আরব থেকে চীনে জ্বালানি পণ্যটির আমদানি বেড়েছে দশমিক শতাংশ।

একই সময়ে রাশিয়া থেকে চীনা আমদানিকারকরা সব মিলিয়ে কোটি ৩৫ লাখ ৭০ হাজার টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করেছে। দৈনিক হিসাবে এর গড় পরিমাণ ১৬ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেল। এক বছরের ব্যবধানে রাশিয়া থেকে চীনের বাজারে জ্বালানি পণ্যটির আমদানি বেড়েছে দশমিক শতাংশ।

প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, গত বছর সৌদি আরবের তুলনায় রাশিয়া থেকে চীনের বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানিতে প্রবৃদ্ধির হার বেশি ছিল। তবে আমদানির পরিমাণ হিসেবে রাশিয়াকে অনেকটাই পেছনে ফেলে দিয়েছে সৌদি আরব। করোনা মহামারীর মধ্যে জ্বালানি তেলের বাজারে মূল্যযুদ্ধে জড়িয়েছিল সৌদি আরব রাশিয়া। সময় চীনা আমদানিকারকদের জন্য জ্বালানি পণ্যটিতে বিশেষ মূল্যছাড় দিয়েছিল সৌদি আরামকো। বিদায়ী বছরে সৌদি আরব থেকে চীনের বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি বেড়ে যাওয়ার পেছনে এটা অন্যতম প্রভাবক হিসেবে ভূমিকা রেখেছে।

রয়টার্সের পণ্যবাজারবিষয়ক বিশ্লেষক ওয়াং তাও বলেন, জ্বালানি তেলের চীনা আমদানি বাজার বেশ বড় টেকসই। স্বাভাবিকভাবেই রফতানিকারক দেশ প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারে অবস্থান পোক্ত করার তুমুল প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। করোনাকালে বিদ্যমান টালমাটাল পরিস্থিতিতে চীনের বাজারে রফতানি অংশীদার হিসেবে রাশিয়াকে পেছনে ফেলে দিয়ে আরো বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে পৌঁছে গিয়েছে সৌদি আরব।

এদিকে করোনা মহামারীর সূচনা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগ নিয়ে ২০২০ সালজুড়ে বিরোধে জড়িয়ে ছিল চীন যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যযুদ্ধের লাগাম পুরোপুরি টেনে ধরাও সম্ভব হয়নি। পারস্পরিক বিরোধ বাণিজ্যযুদ্ধ চলমান থাকার পরও বিদায়ী বছরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সব মিলিয়ে কোটি ৯৭ লাখ ৬০ হাজার টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করেছে চীন। দৈনিক হিসাবে এর গড় পরিমাণ লাখ ৯৪ হাজার ব্যারেল।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন