সুনামগঞ্জে বিভিন্ন অভিযোগে মামলার আসামি হওয়া ৪৯ শিশুকে দণ্ড না দিয়ে প্রবেশনে বাবা-মায়ের কাছে থাকার অনুমতি দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও শিশু আদালত। তবে এক্ষেত্রে তাদের ১০টি বিধিনিষেধ মেনে চলার শর্ত দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার সকালে সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও শিশু আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ রায় দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও আদালতের সরকারি কৌশলী অ্যাডভোকেট নান্টু রায়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ৩২৩ ধারায় সুনামগঞ্জে ৩৫টি মামলায় ৪৯ জন শিশুকে মামলায় জড়ানো হয়। ‘ক্ষুদ্র অভিযোগে’ এসব শিশুদের প্রায়ই আদালতে হাজিরা দিতে হয়। সেকারণে শিশুদের ভবিষ্যত অনিশ্চিয়তা এবং তাদের শিক্ষাজীবন ব্যহত হচ্ছে। সেক্ষেত্রে শিশুদের এসব অসুবিধা থেকে মুক্তি দিতে কারাগারে না পাঠিয়ে পরিবারের সদস্যদের সাথে রেখে সংশোধনের জন্য সুযোগ দিয়েছেন আদালত।
বাবা-মা মায়ের পাঠাতে যে ১০টি শর্ত দিয়েছেন আদালত-
১. প্রবেশনে থাকাকালে ‘একশ মনীষীর জীবনী’ নামক গ্রন্থটি পাঠ করা।
২. বাবা-মাসহ গুরুজনদের আদেশ নির্দেশ মেনে চলা।
৩. বাবা-মায়ের সেবা যত্ন করা এবং কাজেকর্মে তাদের সাহায্য করা।
৪. ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা।
৫. নিয়মিত ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা।
৬. প্রত্যেকে কমপক্ষে ২০টি করে গাছ লাগানো এবং গাছের পরিচর্যা করা।
৭. অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করা।
৮. মাদক থেকে দূরে থাকা।
৯. ভবিষ্যতে কোন অপরাধের সাথে নিজেকে না জড়ানো।
১০. স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।
এসব শর্ত প্রতিপালিত হচ্ছে কিনা তা প্রবেশন কর্মকর্তা মো. শফিউর রহমান পর্যবেক্ষণ করবেন এবং প্রতি তিনমাস অন্তর অন্তর অবহিত করার নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।
সুনামগঞ্জ জেলার প্রবেশন কর্মকর্তা মো. শফিউর রহমান বলেন, আদালত যে রায় দিয়েছেন সেটি শিশুদের ভবিষ্যতে বেড়ে উঠতে কাজে দিবে এতে করে শিশুরা অপরাধ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারবে। আদালত তাদের ১০টি শর্ত দিয়েছেন এবং আমি তাদের প্রতি নজর রাখা হবে।