‘বিশেষ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা ছাড়াই’ মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও সমমানের ফল প্রকাশ করতে তিনটি আইন সংশোধনের প্রস্তাব উঠেছে সংসদে। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি গতকাল জাতীয় সংসদে ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২১, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১ ও বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১ সংসদে উত্থাপন করেন।
পরে ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন বিলটি একদিনের মধ্যে ও বাকি দুটি দুই দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। পরে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তিনটি বিলকেই সঠিক বিবেচনায় পাসের জন্য সংসদে উত্থাপনের বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভাপতির অনুপস্থিতিতে কমিটির সিনিয়র সদস্য ফজলে হোসেন বাদশার সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
সংশোধনের জন্য উত্থাপিত আইনগুলোয় মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও সমমানের ফল প্রকাশের জন্য আগে পরীক্ষা নেয়ার বিধান রয়েছে। তবে মহামারী পরিস্থিতিতে যেহেতু এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নেয়া যায়নি, সেহেতু অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে দ্রুত ফল প্রকাশের প্রস্তাব করেছিল মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। অন্যদিকে শিক্ষামন্ত্রীও জানিয়েছিলেন, যেহেতু পরীক্ষা নেয়া যায়নি, সেহেতু আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে নতুন বছরের শুরুতে ২০২০ সালের এইচএসসির ফল প্রকাশ করা যায় কিনা, সে বিষয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এর মধ্যে সংসদ অধিবেশন শুরুর সময় চলে আসায় অধ্যাদেশ জারি না করে সংসদে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেয় সরকার। গতকাল উত্থাপিত বিলগুলো পাস হওয়ার পর ২৮ জানুয়ারির মধ্যে ফল প্রকাশের লক্ষ্য রয়েছে সরকারের।
সংসদে গতকাল বিল তিনটির উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, প্রস্তাবিত আইনে বিশেষ পরিস্থিতিতে অতিমারী, মহামারী ও দৈব-দুর্বিপাক বা অনিবার্য কোনো পরিস্থিতিতে নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা গ্রহণ, ফল প্রকাশ এবং সনদ দেয়া সম্ভব না হলে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপিত আদেশ দ্বারা কোনো বিশেষ বছরের শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা ছাড়াই বা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা গ্রহণ করার কথা বলা হয়েছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা পদ্ধতিতে মূল্যায়ন ও সনদ প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশাবলি জারি করার বিষয়েও বলা হয়েছে সংশোধনীতে।
এ সময় জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ এমপি ফখরুল ইমাম ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২১ উত্থাপন নিয়ে আপত্তি জানান। নিয়ম অনুযায়ী সংসদে উত্থাপনের আগে নোটিস না পাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে আপত্তি উত্থাপন করেন তিনি। একই সঙ্গে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বক্তব্য নিয়েও আপত্তি জানান তিনি। পরে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী জানান, তার অনুমোদন নিয়ে বিলটি সংসদে তোলা হয়েছে।
