ভারতে অ্যান্টিট্রাস্ট তদন্তের মুখে পড়তে পারে হোয়াটসঅ্যাপ

বণিক বার্তা ডেস্ক

প্যারেন্ট কোম্পানি ফেসবুকের সঙ্গে বৃহৎ পরিসরে ডাটা বিনিময়ের লক্ষ্যে করা হোয়াটসঅ্যাপের নতুন গোপনীয়তা নীতিকে প্রভাবশালী অবস্থানের অপব্যবহার হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। আইনি গোপনীয়তা বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, বিষয়টি নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ কম্পিটিশন কমিশন অব ইন্ডিয়ার (সিসিআই) অ্যান্টিট্রাস্ট তদন্তের মুখে পড়বে। খবর ইটি টেলিকম।

গত বছরের আগস্টে সিসিআই ভারতে মোবাইলের মাধ্যমে ওটিটি মেসেজিং প্রোগ্রামের বাজারে হোয়াটসঅ্যাপকে প্রভাবশালী অংশগ্রহণকারী হিসেবে ঘোষণা করেছিল। ফেসবুকের নিয়ন্ত্রণাধীন প্লাটফর্ম নেটওয়ার্ক অ্যাফেক্টের সুবিধা পেতে পারে বলে জানিয়েছিল। সিসিআইয়ের দাবি, প্লাটফর্মগুলোর মধ্যে আন্তঃব্যবহার্যতা না থাকা আরেকটি বিবেচ্য বিষয়। কারণ গ্রাহকরা প্লাটফর্ম পরিবর্তন বাবদ ব্যয় করতে অনিচ্ছুক হতে পারে।

এর আগে তীব্র বিতর্কের মুখে ডাটা বিনিময় সম্পর্কিত গোপনীয়তা নীতিমালা হালনাগাদ আপাতত তিন মাসের জন্য পিছিয়ে দিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ। প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলোতে ফেসবুকের সঙ্গে তথ্য ভাগ করে নিতে না চাইলে ব্যবহারকারীকে আর বিকল্প দেয়া হবে না। যারা নতুন পরিবর্তনের সঙ্গে একমত নয়, তাদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হবে।

বিষয়ে অ্যান্টিট্রাস্ট আইনজীবী আবির রায় বলেন, এটি প্রতিদ্বন্দ্বী প্লাটফর্মগুলো ডাউনলোড করার বিষয় নয়। এটি কেবল পরিষেবার মান সম্পর্কে প্রশ্ন নয়। প্রশ্নটি হলো আপনার সিস্টেমটি কোথায়? ভারতে ৪০ কোটি ব্যবহারকারীর প্লাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপ হঠাৎ করে নীতিমালা পরিবর্তন করতে পারে না। এর ফলে এক রকম বাধ্য হয়ে ব্যবহারকারীরা গোপনীয়তা নীতি গ্রহণ করে। যেহেতু একেবারে প্লাটফর্ম পরিবর্তন করা অত্যন্ত কঠিন, এটিই মূল বিষয়। এটি একতরফা চুক্তি। বিষয়ে সিসিআইয়ের নজর দেয়া উচিত।

তবুও ভারতে গোপনীয়তা নীতির অপব্যবহার করা হচ্ছে না বলেই মনে করে হোয়াটসঅ্যাপ। প্রতিষ্ঠানটির আন্তর্জাতিক নেতা মে ক্যাথকার্ট একটি -মেইল বার্তায় বলেছেন, অপব্যবহার করা হচ্ছে না। আমরা কৃতজ্ঞ যে প্রত্যেকে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা আশা করি, পরিবার, বন্ধু-বান্ধব সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য তারা হোয়াটসঅ্যাপকে বিশ্বাস করবেন।

তিনি বলেন, আমরা সবাই জানি গোপনীয়তার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনের জন্য আমাদের প্রতিযোগিতা করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, গোপনীয়তা নিয়ে প্রতিযোগিতা ভালো। কারণ এটি দীর্ঘমেয়াদে অনলাইন প্লাটফর্মগুলোকে আরো ব্যক্তিগত সুরক্ষিত করতে সহায়তা করবে।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক ফিন্যান্স অ্যান্ড পলিসির (এনআইপিএফপি) প্রযুক্তি গবেষক স্মৃতি পারশিরা মনে করেন, নেটওয়ার্কের প্রভাব এবং ফেসবুকের একীকরণ পরিকল্পনার অর্থ হলো ব্যক্তি কেবল কোনো পণ্যের সঙ্গে আবদ্ধ নয়, বরং একটি পরিবারের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। এজন্য কোনো প্লাটফর্ম ছেড়ে যাওয়া গ্রাহকদের জন্যও কঠিন হয়ে ওঠে। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার পরিচিত শেষ ব্যক্তি হোয়াটসঅ্যাপ ছেড়ে না যায়, ততক্ষণ প্লাটফর্মটি ছেড়ে যাওয়া আপনার জন্যও কঠিন।

পারশিরা বলেন, সিসিআই হোয়াটসঅ্যাপকে ভারতে প্রভাবশালী প্লেয়ার হিসেবে বিবেচনা করছে। যদি কোনো প্রভাবশালী প্লাটফর্ম একতরফাভাবে নীতি পরিবর্তন করে, তবে এটি অন্যায় অনুশীলন হতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন