টিএসএমসির মুনাফায় রেকর্ড প্রবৃদ্ধি

বণিক বার্তা ডেস্ক

গেল বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) মুনাফা আয়ে রেকর্ড করেছে তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড (টিএসএমসি) নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণে সৃষ্ট কভিড-১৯ মহামারীতে বাড়ি থেকে কাজ শুরু হওয়ায় প্রিমিয়াম ডিভাইসগুলোর জন্য উন্নত চিপের চাহিদা বেড়ে যায়। এতে বিশ্বের শীর্ষ চুক্তিভিত্তিক চিপ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানটির মুনাফায় রেকর্ড প্রবৃদ্ধি হয়েছে। খবর রয়টার্স।

ফাইভজি নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অ্যাপ্লিকেশনগুলো আরো বিস্তৃতভাবে ব্যবহার হওয়ার কারণে আগামীতে চিপের চাহিদা আরো বাড়তে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

টিএসএমসি ক্রমবর্ধমান চিপের চাহিদা মেটাতে চলতি বছর উন্নত চিপ উৎপাদন বিকাশের জন্য মূলধন ব্যয় হাজার ৫০০ কোটি থেকে হাজার ৮০০ কোটি ডলারে উন্নীত করবে, যা গত বছরের মূলধনী ব্যয়ের তুলনায় প্রায় ৬০ শতাংশ বেশি। যে কারণে চলতি বছরের জন্য প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের বার্ষিক রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করেছে। বিশ্বজুড়ে চিপের চাহিদা এতটাই বেড়েছে যে ডিভাইস নির্মাতারাই পণ্য উন্নয়নে প্রয়োজনীয় চিপ পাচ্ছেন না। চিপ সংকটের কারণে এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান উৎপাদন কমিয়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

টিএসএমসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিসি ওয়েই এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, সংকটের প্রভাব কমাতে আমরা আমাদের গ্রাহকদের সঙ্গে কাজ করছি।

চিপ সংকটের কারণ হিসেবে খাতের নির্বাহী বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনা প্রযুক্তি জায়ান্ট হুয়াওয়ে টেকনোলজিসের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা, জাপানের একটি চিপ প্ল্যান্টে অগ্নিকাণ্ড, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনাভাইরাস লকডাউন ফ্রান্সে ধর্মঘটসহ বিভিন্ন কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এছাড়া এশিয়ান ফার্মগুলোর মালিকানাধীন ইঞ্জি চিপ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোয় প্রয়োজনের তুলনায় স্বল্প বিনিয়োগও সংকটের পেছনে দায়ী। বিপরীতে ফাইভজি ফোন, ল্যাপটপ গাড়িগুলোয় উচ্চ চাহিদার কারণে উৎপাদন কেন্দ্রগুলোকে লড়াই করতে হয়েছে। অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে টিএসএমসির নিট মুনাফা ২৩ শতাংশ বেড়ে ৫১০ কোটি ডলারে পৌঁছানোর পেছনে আংশিক ভূমিকা রেখেছে অ্যাপলের আইফোন ১২। পাশাপাশি সংস্থাটির রাজস্ব আয় ২২ শতাংশ বেড়ে হাজার ২৬৮ কোটি ডলারে পৌঁছেছে।

টিএসএমসির পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব আয় হাজার ২৭০ কোটি থেকে হাজার ৩০০ কোটি ডলারে পৌঁছানোর মাধ্যমে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করবে। যেখানে গত বছরের একই প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব আয় ছিল হাজার ৩০ কোটি ডলার। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দামও গত ১২ মাসে ৭০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির বাজার মূল্য ৫৬ হাজার ৭০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে।

টিএসএমসি মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপলের -সিরিজের প্রসেসর চিপ তৈরি করে আসছে। গত ডিসেম্বরের শুরুর দিকে তাইওয়ানে অনুষ্ঠিত এক মিটিংয়ে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ যুক্তরাষ্ট্রে চিপ কারখানা নির্মাণের সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিয়েছে। শিগগিরই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে।

টিএসএমসির পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ টিএসএমসির অ্যারিজোনা কারখানা পূর্ণাঙ্গরূপে চিপ উৎপাদনে যাবে। এটা নিশ্চিত নয়, যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় কারখানা নির্মাণের ক্ষেত্রে স্টেট কিংবা ফেডারেল সরকারের কাছ থেকে কী ধরনের আর্থিক প্রণোদনা পাচ্ছে টিএসএমসি। তবে প্রতিষ্ঠানটির যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা নির্মাণের পরিকল্পনার সঙ্গে স্টেট এবং মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের সংশ্লিষ্টতার কথা বলা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন