২০২১ সালে পণ্যবাজারকে ঝুঁকিতে ফেলবে চীন?

বণিক বার্তা ডেস্ক

বিদায়ী বছরে বৈশ্বিক পণ্যবাজারে সবচেয়ে আলোচিত ইস্যু ছিল নভেল করোনাভাইরাসের মহামারী। প্রাণঘাতী মহামারী ২০২০ সালজুড়ে পণ্যবাজারে টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এর বাইরেও বিদায়ী বছরজুড়ে চীনের বাড়তি পণ্য আমদানি বিশ্ববাজারে অনেক পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। তালিকায় যেমন রয়েছে সয়াবিনের মতো কৃষিপণ্য, তেমনি রয়েছে জ্বালানি তেল, কয়লা, তামার মতো জ্বালানি ধাতব পণ্য। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, মহামারীকালে বাড়তি পণ্য আমদানি করেছে চীন। চলতি বছর দেশটি আমদানি কমিয়ে দিতে পারে। এমনটা হলে ২০২১ সালে নতুন ঝুঁকিতে পড়তে পারে বৈশ্বিক পণ্যবাজার। কমে যেতে পারে কিছু পণ্যের দাম। এতে ক্রেতাদের লাভ হলেও বিক্রেতারা লোকসানে পড়তে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মহামারীর মধ্যে চাহিদা সংকুচিত হয়ে এলেও ২০২০ সালে চীন উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অপরিশোধিত জ্বালানি তেল, তামা, আকরিক লোহা কয়লা আমদানি করেছে। সময় দেশটিতে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি আগের বছরের তুলনায় দশমিক শতাংশ বেড়ে দৈনিক কোটি লাখ ৫০ হাজার ব্যারেলে উন্নীত হয়েছে, যা বিশ্বের দৈনিক চাহিদার ১২ শতাংশ। ২০২০ সালে আগের বছরের তুলনায় ৩৪ দশমিক শতাংশ বেড়ে ৬৬ লাখ ৮০ হাজার টন তামা আমদানি হয়েছে চীনে।

একইভাবে গত বছর চীনের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ৩০ কোটি ৪০ লাখ টন কয়লা আমদানি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় দশমিক শতাংশ বেশি। সময় চীনে আকরিক লোহা আমদানি দশমিক শতাংশ বেড়ে ১১৭ কোটি টনে উন্নীত হয়েছে। মূলত লকডাউনের শুরুর দিকেই আন্তর্জাতিক বাজারে দরপতনের সুযোগ কাজে লাগিয়ে চীনারা আমদানি করা পণ্যের মজুদ গড়েছে। পরিস্থিতি দুটো বিষয়ের ইঙ্গিত দেয়। প্রথমত, করোনার ধাক্কা সামলে চীনের পণ্যের চাহিদা দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। দ্বিতীয়ত, এমন বাড়তি আমদানি ২০২০ সালের শেষের দিকে এসে আন্তর্জাতিক বাজারে অনেক পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষত বিদায়ী বছরের শেষের দিকে এসে জ্বালানি তেল তামার বাজার চাঙ্গা হতে দেখা গেছে।

তবে বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ঝুঁকিটা রয়েছে বাড়তি প্রত্যাশায়। তাদের ভাষ্য, করোনাকালে অনেক দেশ যেখানে আমদানি কমিয়েছে, চীন হেঁটেছে উল্টো পথে। এর জের ধরে চীনকে নিয়ে ব্যবসায়ীদের উচ্চাশা বেড়েছে। তারা ভাবছেন ২০২১ সালেও দেশটি পণ্য আমদানিতে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখবে। বাস্তবে এমনটা নাও হতে পারে। স্বাভাবিকভাবে দেখা যায়, কোনো দেশ এক বছর উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পণ্য আমদানি করলে পরের বছর সেই পণ্যের আমদানি সংকুচিত হয়ে আসে। বাড়তি মজুদ এক্ষেত্রে প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। চলতি বছর চীনের ক্ষেত্রে ফ্যাক্টর কাজ করতে পারে। তখন বৈশ্বিক পণ্যবাজার নতুন করে দরপতনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।

কয়লা, জ্বালানি তেল, তামা, আকরিক লোহাচীনের বাজারে চারটি পণ্যের আমদানি গত ডিসেম্বরে -১৮ শতাংশ পর্যন্ত কমে এসেছে। কথা উল্লেখ করে ডাচ বহুজাতিক ব্যাংক আইএনজির পণ্য কৌশল বিভাগের প্রধান ওয়ারেন প্যাটারসন বলেন, ২০২০ সাল শেষ হওয়ার আগেই পণ্য আমদানিতে লাগাম টানতে শুরু করেছে চীন। প্রবণতা দীর্ঘমেয়াদে বজায় থাকলে বৈশ্বিক পণ্যবাজার নতুন সংকটের মুখোমুখি হতে পারে।

রয়টার্স ব্লুমবার্গ অবলম্বনে

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন