বিআইপির এজিএমে বক্তারা

পরিকল্পনাবিদদের সমাজ বিনির্মাণে কাজ করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

উন্নয়নের সুফল সমাজের সব শ্রেণী-পেশার মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পরিকল্পনাবিদদের প্রয়াস চালিয়ে যেতে হবে এবং সমাজ বিনির্মাণে কাজ করতে হবে। গতকাল সকালে বিআইপি মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) কথা বলেন বক্তারা।

বিআইপির যুগ্ম সম্পাদক মুহাম্মদ রাসেল কবিরের সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন বিআইপির সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক . আকতার মাহমুদ।

বিআইপির ১৪তম কার্যনির্বাহী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ . আদিল মুহাম্মদ খান ২০২০ সালে বিআইপির বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে একটি বিশদ প্রতিবেদন পাঠ করেন। তিনি বলেন, পরিকল্পনা পেশার প্রকৃত অনুশীলন নিশ্চিত করার মাধ্যমে উন্নয়নের সুফল সমাজের সব শ্রেণী-পেশার মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া সম্ভব। ফলে পরিকল্পনাবিদদের উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে পেশাগত দায়বদ্ধতার পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতার কথা মাথায় রেখে সমাজ বিনির্মাণে কাজ করতে হবে।

পরিকল্পনাবিদদের সামনে বিআইপির কোষাধ্যক্ষ পরিকল্পনাবিদ তৌফিকুল আলম ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিআইপির আয়-ব্যয়ের পর্যালোচনা পূর্বক পূর্ণাঙ্গ আর্থিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

বিআইপি উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক . গোলাম মর্তুজা তার উপস্থাপিত প্রতিবেদনে বলেন, বাংলাদেশে পরিকল্পিত উন্নয়ন নিশ্চিতের লক্ষ্যে মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা দরকার। উপজেলা পর্যায়ে মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে শহর গ্রামীণ উন্নয়নের যে উদ্যোগ সরকারের পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছে, টেকসই সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে তা অত্যাবশ্যকীয়। মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় নগর গ্রামীণ পরিকল্পনাবিদদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব, যেন পরিকল্পনা উন্নয়ন সঠিক পথে পরিচালিত হয়।

তিনি আশা করেন, বিআইপির বর্তমানে কার্যনির্বাহী পরিষদের প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও এসব বিষয়ে কর্মতত্পরতা অব্যাহত রাখবে।

বিআইপির সভাপতি বলেন, পেশাগত উন্নয়ন অগ্রগতি সব সময়ই একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, যা কালের পরিক্রমায় নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রয়াসে লিপ্ত। প্রবীণ পরিকল্পনাবিদদের অভিজ্ঞতা এবং নবীন পরিকল্পনাবিদদের উদ্যমকে পাথেয় করে সময়ের পরিক্রমায় বাংলাদেশে পেশা হিসেবে নগর পরিকল্পনা বিকাশ লাভ করেছে। বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতের জন্য পরিকল্পনাসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কার্যক্রমে সম্মানিত সদস্যদের কার্যকর অংশগ্রহণ ঐকান্তিক প্রচেষ্টা বিশেষ জরুরি। লক্ষ্যে দেশের সব পেশাজীবী পরিকল্পনাবিদকে সচেতন ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

পরিকল্পনাবিদ একেএম রেজাউল করিম চট্টগ্রামের কথা তুলে ধরে বলেন, পাহাড় কেটে বস্তি বানানো যাবে না। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, পরিকল্পনাবিদদের হাতে দেশ থাকলে, দেশ সামনের দিকে এগোবে।

দ্রুত নগরায়ণের ফলে যানজট, জলাবদ্ধতা, পরিবেশ দূষণ যথা বায়ু, পানি, শিল্প শব্দদূষণ, বর্জ্যের অব্যবস্থাপনা, সবুজায়ন হ্রাস পাওয়া, প্রাকৃতিক জলাধারের দখল-দূষণ এবং নগর এলাকার তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে সংক্রামক-অসংক্রামক সব রোগ দিন দিন বাড়ছে। বাস্তবতায় আগামী দিনের বাংলাদেশে বাসযোগ্য নগর জনবসতি গড়ে তুলতে পরিকল্পনাবিদদের কাজ করার সুযোগ বাড়াতে হবে বলে সভায় উপস্থিত পরিকল্পনাবিদরা মতামত ব্যক্ত করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন