জয়পুরহাটের ছোট যমুনা নদী

অবৈধ বালি উত্তোলনে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, জয়পুরহাট

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় ছোট যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের ফলে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি বসতভিটা। উপজেলার বাগজানা কুটাহারা এলাকায় লিজ দেয়া ঘাটের বাইরে থেকে বালি উত্তোলনের ফলে ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। প্রভাবশালী চক্রের যোগসাজশে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করা হলেও হুমকি-ধমকির ভয়ে কেউ বাধা দিতে পারছে না।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি বাগজানার কুটাহারা ইজারাভুক্ত ছোট যমুনা নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে ৬০-১০০ ফুট বোরিং করে দীর্ঘদিন থেকে বালি উত্তোলন করে আসছেন ইজারদাররা। ফলে নদীর পাশের প্রায় ৪৫ বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে ক্রমেই বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ঝুঁকিতে রয়েছে নদীর পাশে বসতবাড়ি মুরগির খামার।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বসতবাড়ি, মুরগির খামার, রাস্তা-ঘাটে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে ২০১৮ সাল থেকে কয়েক দফায় প্রশাসনকে অনুরোধ করেছেন স্থানীয়রা। তার পরও বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় ওই এলাকার ভুক্তভোগীরা জয়পুরহাট প্রেস ক্লাবে গত ১৪ জানুয়ারি কুটাহারা বালুমহালের ইজারা বাতিল, ফসলি জমি রক্ষায় দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন। এছাড়া ইজারাবহির্ভুত আটাপাড়া ব্রিজের পাশেই গঙ্গাপ্রসাদ এলাকায় ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালি উত্তোলন করে বিক্রি করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। স্থানীয়রা বলছে, আটাপাড়া গঙ্গাপ্রসাদ এলাকার অবৈধ বালি উত্তোলন বন্ধ না হলে রতনপুর, রামভদ্রপুর, চেঁচড়া মোড়ের হাট, আটাপাড়া, হিলি বাণিজ্যিক পোর্টের একমাত্র যোগাযোগের ব্রিজটিও ঝুঁকির মধ্যে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ভুক্তভোগী কৃষক স্বপন কুমার, গোলাম রব্বানী, কার্তিক চন্দ্র, সাধন চন্দ্র মহন্ত, সুরাস চন্দ্র বিলাস, দেলোয়ার হোসেন, মোফাজ্জল হোসেন, নোমান বলেন, মেশিন দিয়ে বালি তোলার কারণে আমাদের জমি নদীতে ভেঙে যাচ্ছে। আমরা গরিব মানুষ জমি না থাকলে কীভাবে বাঁচব। বালি উত্তোলন বন্ধে চেয়ারম্যান-মেম্বার, ইউএনও, ডিসি সবার কাছে আমরা বিচার দিয়ে বিচার পাইনি। বালি যারা তোলে তাদের নিষেধ করলে উল্টা হাঁসুয়া-দা নিয়ে আমাদের মারতে আসে। দ্রুত বালি উত্তোলন বন্ধ করা না হলে ভাঙনের পরিমাণ আরো বাড়বে।

বিষয়ে কথা বলতে গেলে ইজারাদার সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে দ্রুত পালিয়ে যান।

বিষয়ে পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. বরমান হোসেন জানান, খবর পাওয়ার পর পরই অভিযান চালানো হয়েছে। নির্দিষ্ট জায়গা থেকেই বালি উত্তোলন করতে বলা হয়েছে। আটাপাড়া গঙ্গাপ্রসাদ এলাকায় বালি উত্তোলন বন্ধ আছে। ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আদালতে মামলা করতে পারেন।

জেলা প্রশাসক মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এরই মধ্যে অবৈধ বালি উত্তোলন বন্ধ করা হয়েছে। ইজারাদারদের নির্দিষ্ট স্থান থেকে বালি উত্তোলন করতে বলা হয়েছে। তার পরও কেউ যদি নির্দিষ্ট স্থানের বাইরে থেকে বালি উত্তোলন করেন তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন