বেনাপোল স্থলবন্দর

ভ্রমণ খাতে রাজস্ব আয় কমেছে ৫৩ কোটি টাকা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, যশোর

করোনার প্রভাবে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যাত্রী যাতায়াত কমে গেছে চার ভাগের তিন ভাগ। কারণে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে গেল বছর ভ্রমণ খাতে সরকারের রাজস্ব আয় কমেছে ৫৩ কোটি টাকার বেশি। তথ্য বলছে, ২০২০ সালে লাখ হাজার ৫০০ জন দেশী-বিদেশী পাসপোর্টধারী যাত্রী পথ দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত যাতায়াত করেছে। সময় যাত্রীদের কাছ থেকে ভ্রমণ কর বাবদ রাজস্ব আদায় হয়েছে মাত্র ১৬ কোটি ৬৮ লাখ ৬৬ হাজার টাকা।

বেনাপোল বন্দর, কাস্টমস ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে পথে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ১২ লাখ ৫৫ হাজার ৯০০ জন পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করেছে। এর বিপরীতে ভ্রমণ কর বাবদ রাজস্ব আদায় হয় প্রায় ৭০ কোটি টাকা। তবে করোনাভাইরাসের কারণে ২০১৯ সালের চেয়ে ২০২০ সালে যাত্রী যাতায়াত কমেছে সাড়ে লাখেরও বেশি।

বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতগামী যাত্রীদের কাছ থেকে ভ্রমণ কর আদায়ে কাজ করে থাকে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। বেনাপোল সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার আকতার ফারুক যাত্রী পরিসংখ্যান রাজস্ব আদায়ের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, ১৯৭২ সাল থেকে বৈধভাবে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পাসপোর্টের মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াত শুরু হয়। বেনাপোল থেকে কলকাতা শহরের দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার। বেনাপোল থেকে রওনা হয়ে মাত্র আড়াই ঘণ্টার মধ্যে কলকাতা শহরে পৌঁছানো যায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় প্রথম থেকে পথে চিকিৎসা, ব্যবসা ভ্রমণপিপাসু মানুষ যাতায়াতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে থাকে। যাত্রীপ্রতি ৫০০ এবং বন্দরের ৪৮ টাকা ভ্রমণ কর নেয়া হয়। কিন্তু করোনার কারণে ভারত সরকার গেল ২০২০ সালের ১৩ মার্চ থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পাসপোর্ট যাত্রীদের ভারতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এতে করে যাত্রী যাতায়াত আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়ার পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয়ও কমে আসে।

চার মাস পর শর্ত সাপেক্ষে গত ১৫ আগস্ট থেকে কূটনীতিক, অফিশিয়াল, জাতিসংঘ বা আন্তর্জাতিক সংস্থা বিভিন্ন প্রকল্পের ভিসাধারীদের যাতায়াতে সুযোগ হয়। তবে এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে ভ্রমণ ভিসা।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ভারতগামী যাত্রীদের ৯০ শতাংশ চিকিৎসা ভিসায় এবং ১০ শতাংশ যাচ্ছে ব্যবসা সরকারি কাজে।

এদিকে ভ্রমণ খাত থেকে প্রতি বছর বন্দরের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় হলেও এখানে যাত্রীসেবার মান নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। যাত্রীসেবা বাড়াতে অবকাঠামো উন্নয়নে নানা প্রতিশ্রুতি থাকলেও সেসব বাস্তবায়ন হয়নি আজও। এছাড়া সেবার নামে বন্দরের ট্যাক্স আদায় করা হলেও বন্দরে তেমন কোনো সেবা পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ যাত্রীদের। যাত্রীসেবার নামে বন্দর কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের কাছ থেকে ৪৮ টাকা আদায় করে। আর বাবদ যাত্রীদের বিশ্রাম, ক্যান্টিন অন্যান্য সুবিধা দেয়ার নিয়ম থাকলেও আদৌ কোনো সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়নি।

বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক মামুন কবীর তরফদার জানান, করোনার প্রভাবে যাত্রী যাতায়াত কমে এসেছে। এতে ভ্রমণ খাতে সরকারের আয় কমেছে। যাত্রীদের সেবার মান বাড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, যাত্রী যাতায়াত সুবিধার্থে নতুন জায়গা অধিগ্রহণের পরিকল্পনা প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির কাজ চলমান রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন