যুক্তরাজ্যে চাকরি হারানোর বেশি ঝুঁকিতে নিম্ন আয়ের মানুষ

বণিক বার্তা ডেস্ক

মহামারী-পূর্ব সময় থেকে যারা দারিদ্র্যের দুষ্টচক্রে আবদ্ধ ছিলেন, করোনা সংকট তাদের সেই দুরবস্থাকে আরো তীব্র করেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন বলছে, এখন টিকে থাকার জন্য নিষ্পিষ্ট পরিবারগুলোর আরো বেশি সহায়তা প্রয়োজন। পাশাপাশি অধিক বেতন পাওয়া চাকরিজীবীদের তুলনায় কম বেতন পাওয়া লোকজনের চাকরি হারানোর ঝুঁকি বেশি বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনটিতে। খবর এএফপি।

জোসেফ রাউন্ট্রি ফাউন্ডেশনের (জেআরএফ) মতে, ২০২০ সালের মার্চের আগে যেসব মানুষ নিজেদের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয়তা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছিল, তাদের বেশির ভাগই যুক্ত ছিল অনিশ্চিত কোনো পেশায়। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস হচ্ছে, সেই খাতগুলোই মহামারীতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এই শোচনীয় অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সর্বজনীন আর্থিক সুবিধা সপ্তাহে ২০ পাউন্ড করে দেয়ার সাময়িক ব্যবস্থাকে স্থায়ী রূপ দেয়ার কথাও বলা হয়েছে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে। মার্চের শেষ দিক থেকে এটি হ্রাস করার কথা রয়েছে।  পাশাপাশি বলা হচ্ছে, সর্বশেষ লকডাউন অনেক মানুষকে আরো বিপর্যস্ত অবস্থার দিকে ঠেলে দিয়েছে এবং মানুষের হাতে খুব সামান্য সংস্থানই অবশিষ্ট রয়েছে। 

নিজেদের বার্ষিক দারিদ্র্য প্রতিবেদনে এই দাতব্য সংস্থাটি বলছে, দ্বিতীয় ধাপের মন্দা থেকে সংগ্রামরত পরিবারগুলোর পুনরুদ্ধার আরো অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে ভাইরাসের নতুন স্ট্রেইনের কারণে নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষগুলো, যা পরিস্থিতিকে আরো খারাপ করেছে।

গবেষণা অনুসারে, যেসব শ্রমিকের আয় কম, এই মহামারীতে তাদের কর্মঘণ্টা গড়ে সবচেয়ে বেশি হ্রাস পেয়েছে। যেখানে রিটেইল আবাসন খাতে কাজ করা ৮১ শতাংশ শ্রমিকের আয় কমেছে। আতিথেয়তা খাতে কাজ করা এক-তৃতীয়াংশের বেশি সিঙ্গেল মা-বাবা এবং রিটেইলে কাজ করা এক-চতুর্থাংশের বেশি মানুষ আগে থেকেই দারিদ্র্যের মাঝে বাস করতেন। যাদের সমস্যাকে আরো তীব্র করেছে এই মহামারী।

বৈষম্যমূলক অর্থনৈতিক প্রভাবের আরেকটি উদাহরণ দিতে গিয়ে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, কম বেতন পাওয়া শ্রমিকদের ১০ জনের চারজনই চাকরি হারানোর উচ্চঝুঁকিতে রয়েছেন। যেখানে বছরে ৪১ হাজার ৫০০ পাউন্ড আয় করাদের মাত্র শতাংশের চাকরি হারানোর এমন ঝুঁকি রয়েছে। 

ভীতিজাগানিয়া এসব পরিসংখ্যানের সঙ্গে এই সতর্কবার্তা দেয়া হচ্ছে যে যুক্তরাজ্যে বছর বেকারত্ব সহায়তা স্কিম শেষ হওয়ার পর নাটকীয়ভাবে কর্মহীন লোকের সংখ্যা বাড়তে শুরু কবে। স্কিমটি আগামী এপ্রিলে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। সব মিলিয়ে ভ্যাকসিন পুরোপুরিভাবে কার্যকারিতার আগে ব্রিটিশ অর্থনীতির এই চলমান মন্দা পরিস্থিতি অব্যাহত থাকবে জানিয়েছে সংস্থাটি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন