শিশু কল্যাণ তহবিলের অর্থ নেয়ার ক্ষেত্রে হাজার হাজার পরিবারের বিরুদ্ধে প্রতারণার ‘ভুল‘ অভিযোগের দায় নিয়ে পদত্যাগ করেছে নেদারল্যান্ডস সরকার।
নির্বাচনের মাত্র দুই মাস আগে আজ শুক্রবার হেগে প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুত্তে তার মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডাকেন। বৈঠকে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে নেদারল্যান্ডসের রাজা উইলেম-অ্যালেক্সান্ডারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন প্রধানমন্ত্রী।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুত্তে পরে সাংবাদিকদের বলেন, নিরপরাধ মানুষকে অপরাধী বানানো হয়েছে, তাদের জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে। যা কিছু ঘটেছে তার দায় মন্ত্রিসভার ওপরও বর্তায়।
তবে আগামী ১৭ মার্চ পার্লামেন্ট নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার না আসা পর্যন্ত বর্তমান মন্ত্রিসভা অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব পালন করবে।
শিশু কল্যাণ তহবিলের সহায়তা নেয়ার ক্ষেত্রে হাজার হাজার পরিবারের বিরুদ্ধে প্রতারণা বা জালিয়াতির অভিযোগ আনেন নেদারল্যান্ডসের কর কর্মকর্তারা। ২০১২ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার পরিবারের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনা হয়। এমনকি সেই পরিবারগুলোকে সহায়তার অর্থ ফেরত দিতে বাধ্য করা হয়। ফলে বহু পরিবার আর্থিক সঙ্কটে পড়ে। বহু পরিবারকে ঘর হারাতে হয়, এমনকি বিয়ে বিচ্ছেদের মতো ঘটনাও ঘটে।
কিন্তু পরে তদন্তে দেখা যায়, সঠিক জায়গায় স্বাক্ষর না থাকা বা ফরম পূরণের ক্ষেত্রে তুচ্ছ ভুলের কারণেও অনেক পরিবারের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব পরিবারের একটি বড় অংশ অভিবাসী।
কর কর্মকর্তারা গতবছর প্রথমবারের মতো স্বীকার করেন, শুধু দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকার কারণেই বহু পরিবারের ক্ষেত্রে অধিকতর তদন্ত চালিয়েছিলেন তারা। যদিও সরাসরি তাদের ভুল স্বীকার করেননি।
এ সংক্রান্ত একটি সংসদীয় প্রতিবেদনে বলা হয়, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই সহায়তার অর্থ ফিরিয়ে নেয়ার মাধ্যমে এসব পরিবারের সঙ্গে ‘নজিরবিহীন অবিচার’ করা হয়েছে। নিরাপত্তাহীনতার দিকে ঠেলে দিয়ে কর কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ আর বিচারক যে ভুল করেছেন তার ‘তুলনারহিত‘।
নেদারল্যান্ডেসের অর্থমন্ত্রী এরিক উইবেস এই কেলেঙ্কারিতে তার নিজ দফতরের দায় নিয়ে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন।