দেশে নভেল করোনা ভাইরাস সংক্রমণের দৈনিক শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে নেমেছে। গত ৪ এপ্রিলের পর গতকাল শনাক্তের এ হার সর্বনিম্ন। এদিন ১৬ জন করোনা রোগী মারা গেছেন। অন্যদিকে শনাক্তের ৩১২তম দিনে দেশে কভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা সোয়া পাঁচ লাখ অতিক্রম করেছে। গতকাল বিকালে দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমনটি জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সরকারের করোনা বিষয়ে তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা যায়, সর্বশেষ গত ৪ এপ্রিল দৈনিক নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ ছিল। গত ১১ এপ্রিল নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ৬ শতাংশের ওপরে উঠে যায়। সেদিন শনাক্তের হার ছিল ৬ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। মে মাসে ক্রমাগত শনাক্তের হার বাড়তে থাকে। এ সময় দৈনিক রোগী শনাক্তের হার ২০ শতাংশের ওপরে চলে যায়, যা আগস্টের শেষ সময় পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। গত ডিসেম্বরে শনাক্তের হার ১০ শতাংশের নিচে নামতে শুরু করে। গতকাল পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ দাঁড়িয়েছে। এতে মোট শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ। নতুন করে ৮১৩ জন করোনা পজিটিভ হওয়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ২৫ হাজার ৭২৩ জনে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল সারা দেশে ১১৫টি আরটি-পিসিআর ল্যাব, ২৮টি জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ও ৫৬টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে ১৬ হাজার ৭৩৭টি নমুনা সংগ্রহ করে ১৬ হাজার ৬০৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। গতকাল পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় ২৬ লাখ ৯০ হাজার ১৩৩টি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭ লাখ ২৭ হাজার ২৮১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
গতকাল সর্বশেষ ১৬ জনের মৃত্যু হওয়ায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৮৪৯ জনে। এতে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৮৩ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন, এ নিয়ে টানা আটদিন সুস্থতার সংখ্যা হাজারের নিচে রয়েছে। এ পর্যন্ত মোট ৪ লাখ ৭০ হাজার ৪০৫ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এতে সুস্থতার হার দাঁড়িয়েছে ৮৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
নতুন মারা যাওয়ার মধ্যে ১১ জন পুরুষ এবং নারী পাঁচজন। যাদের সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন। মৃতদের বয়স বিবেচনায় নয়জনের বয়স ছিল ষাটোর্ধ্ব, পাঁচজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ এবং দুজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। তাদের মধ্যে নয়জন ঢাকা বিভাগের, পাঁচজন চট্টগ্রাম বিভাগের এবং একজন করে দুজন বরিশাল ও সিলেট বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৭ হাজার ৮৪৯ জনের মধ্যে ৫ হাজার ৯৫৪ জন পুরুষ এবং ১ হাজার ৮৯৫ জন নারী।
উল্লেখ্য, গত ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এরপর দুই মাসের মধ্যে শতাধিক দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়লে গত বছরের ১১ মার্চ করোনাকে বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গতকাল পর্যন্ত বিশ্বের ২ হাজার ১৮টি দেশ ও অঞ্চলে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এতে করে বিশ্বে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯ কোটি ২৪ লাখ ছাড়িয়েছে এবং মৃত্যু ছাড়িয়েছে ১৯ লাখ ৮১ হাজার। গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়।